রাজ্য বিজেপির অন্দরমহলের অশান্তি একেবারে প্রকাশ্যে, চরমে। আপাতত তা বন্ধ হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। এসব দেখে বিজেপির পুরানো নেতা-কর্মীরা মুচকি হাসছেন। তাঁদের অনেকের মনে পড়ছে বিধানসভা নির্বাচনের পরিস্থিতির কথা। এদিকে এখনও কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষের করতে পারেনি বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। কমপক্ষে শোকজের কথাও ঘোষণা হয়নি।
বিতর্কিত ইস্যুতে শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল মুখ বন্ধ রাখার। কেন্দ্রে মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণের দিন বিজেপির রাজ্য যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে মুখ বন্ধ রাখতে হয়! পাল্টা এক ইঞ্চি জমি ছাড়েননি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও। সৌমিত্রকে বাউন্সার দেওয়ার পাশাপাশি বাদ যাননি সদ্য প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়ও। কড়া আক্রমণের পরও মাথা ঠান্ডা রেখে জবাব দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবারের পর ফের বৃহস্পতিবারও চলেছে বিজেপির প্রকাশ্য বিপ্লব। এদিন দলের যুব মোর্চার এক সাধারণ সম্পাদক তোপ দেগেছেন শীর্ষ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে।
সূত্রের খবর, গত বিধানসভা নির্বাচনে প্রার্থী ঘোষণার পরই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। একে নিজেদের প্রার্থী তালিকায় নাম নেই তার ওপর যাঁদের নাম প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল তা মানতে পারেননি দলের একটা বড় অংশ। বিশেষ করে যেভাবে তৃণমূল থেকে রাতারাতি জামাই আদর করে দলে নিয়ে প্রার্থী করা হয়েছে, তাছাড়া টলিউডের লোকজনকে এক চুটকিতে প্রার্থী করাও অনেকে মেনে নিতে পারেননি। দলের ওই অংশ জানিয়েছে, দলের শৃঙ্খলা মেনে, দল যাতে অসুবিধায় না পড়ে তাই তাঁরা নীববেই সব সহ্য করেছেন। পরিস্থিতি না বদলানোয় তাঁরা এবার প্রমাদ গুণছেন।
আরও পড়ুন, ‘ওকে তাড়ালে ভাল হতো’, বাবুলকে খোঁচা দিলীপের, ‘মন্তব্যের অপব্যাখ্যা হচ্ছে’, পাল্টা সাংসদ
রাজ্য বিজেপির একাংশের বক্তব্য, এখানে অনেকেই ২৫-৩০ বছর ধরে টানা বিজেপির পতাকা বহণ করে আসছেন। শত প্রলোভনেও অন্য দলে নাম লেখাননি। তবে প্রার্থী তালিকায় নাম না থাকায় তাঁদের কেউ কেউ মুষরে পড়েছিলেন। অথচ কৈলাস বিজয়বর্গীয়র 'চানক্য' মুকুল রায় দলের সর্বভারতীয় পদ পেয়েও বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন। তৃণমূল থেকে এসে দলে বিশেষ গুরুত্ব পাওয়া অন্যরাও সেদিকে পা বাড়িয়ে রয়েছে। তবু প্রকাশ্যে একটা কথাও বলেননি রাজ্য বিজেপির একাংশ। রাজনৈতিক মহলের মতে, ভাড়াটে সৈন্য দিয়ে যুদ্ধে জয় সম্ভব নয়।
সূত্রের খবর, এবছরের মধ্যেই রাজ্য বিজেপির খোলনোলচে বদলে ফেলার কথা। চলতি মাস থেকেই সেই প্রক্রিয়া শুরু করার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব যে ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই একই পথে সাংগঠনিক বদল ঘটালে আখেরে দলের সমূহ বিপদ বলে মনে করে দলের একাংশ। আদি বিজেপির নেতৃত্ব কতটা গুরুত্ব পাবে সেটাই বড় প্রশ্ন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন