ছাত্র রাজনীতিতে পা রেখে নিজের রাজনৈতিক কেরয়ার শুরু করেছিলেন তিনি। ছাত্র রাজনীতি তিনি ‘ভালই বোঝেন’। জওহরলাল নেহরু বিশ্বিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের উপর হামলার ঘটনার নিন্দা জানাতে গিয়ে নিজের ছাত্র রাজনীতির প্রসঙ্গ টানলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেএনইইউ-এর ঘটনার ধিক্কার জানিয়ে সোমবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমিও ছাত্রনেতা হিসেবে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। ছাত্র রাজনীতি ভাল করে জানি। এখন কীভাবে পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। এটা ফ্যাসিস্ট সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, আগে কখনও দেখিনি দেশে’’। অন্যদিকে, মমতার এহেন মন্তব্যের পাল্টা সরব হয়েছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
ঠিক কী বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?
সোমবার ডুমুরজলায় জেএনইউ-তে হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমিও ছাত্রনেতা হিসেবে রাজনৈতিক কেরিয়ার শুরু করেছিলাম। ছাত্র রাজনীতি ভাল করে জানি। এখন কীভাবে পড়ুয়াদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্রের উপর আঘাত হানা হচ্ছে। কেউ কারও বিরুদ্ধে কথা বললেই পাকিস্তানি বলা হচ্ছে। কারও বিরুদ্ধে কথা বললে দেশের শত্রু বলা হচ্ছে। পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে বলে যা খুশি করছে। সকলকে সংবিধান মেনে কাজ করা উচিত। এটা ফ্যাসিস্ট সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। এটা ফ্যাসিস্ট স্ট্রাইক, এমন স্ট্রাইক দেশে আগে কখনই দেখিনি। সব পড়ুয়াদের বলব, ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে’’।
আরও পড়ুন: ‘দেশে কমিউনিস্টদের মারা শুরু হয়েছে, মনে হয় পাওনা আছে’, জেএনইউকাণ্ডে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ
অন্যদিকে, এ প্রসঙ্গে মমতাকে পাল্টা বিঁধেছেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ প্রসঙ্গে মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের মন্ত্রীকে (পড়ুন, বাবুল সুপ্রিয়) মারা হল, চুলের মুঠি ধরে টানা হল। তখন মমতার বিবেক জাগেনি? রাজ্যপালকে গো ব্যাক স্লোগান দিচ্ছে, তখন নিন্দা জানাননি। কে কাকে মেরেছে উনি-আমি কেউই বলতে পারব না। এটা ছাত্রদের ব্যাপার, প্রশাসনের ব্যাপার’’।
জেএনইউ-তে এদিন যান দীনেশ ত্রিবেদীর নেতৃত্বে তৃণমূলের ৪ প্রতিনিধি। জেএনইউ-তে তাঁদের ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। এরপরই জেএনইউ-র বাইরে বসে পড়েন তৃণমূলের প্রতিনিধিরা। এ প্রসঙ্গে মমতা বলেন, ‘‘আমরা প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ঢুকতে দেওয়া হল না। আমরা পড়ুয়াদের সঙ্গে আছি’’।
আরও পড়ুন: LIVE: জেএনইউ ক্যাম্পাসে ছাত্রী নিগ্রহের ঘটনায় পুলিশকে নোটিস দিল্লি মহিলা কমিশনের
উল্লেখ্য, হস্টেলের ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে কয়েকদিন ধরেই উত্তাল জেএনইউ ক্যাম্পাস। সেই আবহেই রবিবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট নাগাদ ‘শান্তিপূর্ণ মিছিলের’ ডাক দেন জেএনইউ-এর টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন। ক্যাম্পাসে এবিভিপি এবং বাম সংগঠনের নেতাদের কোন্দলের একদিন পরই এই মিছিলের ডাক দেন তাঁরা। সে কারণেই জড়ো হয়েছিলেন সকলে। এরপরই শুরু হয় অতর্কিত হামলা। রাতের অন্ধকারে এই ভয়ঙ্কর হামলায় জখম হয়েছেন জেএনইউয়ের ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ-সহ একাধিক ছাত্রছাত্রী, দু’জন শিক্ষক এবং দু’জন সুরক্ষা কর্মী। আহতদের সকলকেই দিল্লির এইমস এবং সফদরগঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হামলার পিছনে এবিভিপি জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।