রাজ্যে অশান্তি নিরসনের লক্ষ্যে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর ডাকা চার রাজনৈতিক দলের বৈঠক কার্যত ফলপ্রসূ হয় নি। রাজ্য বিজেপির সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "বৈঠকে যৌথ বিবৃতির কথা উঠলে তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, 'এটা বললে আমার অসুবিধা আছে। নবান্নের চোদ্দ তলার অনুমতি নিতে হবে'।" এদিকে রাজ্যপালের এই বৈঠককে স্বাগত জানিয়েছে কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি। তবে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনও কথা বলেন নি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিরোধী তিন দলের দাবি, রাজ্যে অশান্তি অব্যাহত। তা বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিম বলেন, "রাজ্যপাল চারটি দলকে ডেকেছেন। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছি। রাজ্যে যে ভাবে আইনৃশৃঙ্খলার অবনতি, হিংসার দাপাদাপি চলছে, তা বন্ধ হওয়া দরকার। নিরাপত্তার প্রশ্নে ডাক্তারদের একটা আন্দোলন চলছে। সেখানে হুমকি ও ভয় দেখানো হচ্ছে। রাজ্যের প্রশাসন ভেঙে পড়ছে। রাস্তাঘাটে, মাঠে, ময়দানে, হাসপাতালে যা হচ্ছে তা ভয়ঙ্কর।"
বৈঠকে ছিলেন রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। সোমেনবাবুর বক্তব্য, "রাজ্যপাল সবার কথা শুনেছেন। তিনি বলেছেন, 'ঠিক আছে, আমি দেখছি'। নির্বাচনোত্তর হিংসা কীভাবে বন্ধ করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করেছেন রাজ্যপাল।"
বিজেপি রাজ্য সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, "নির্বাচনোত্তর সংঘর্ষ চলছে। তৃণমূল কংগ্রেস বলতে চেয়েছে বিজেপি সারা রাজ্যে সাংঘাতিক ভাবে অশান্তি করার চেষ্টা করছে। রাজ্যপাল বলেছেন, 'রাজ্যটা চালাচ্ছে কে? দায়িত্ব কার?'" তিনি আরও জানান, "৬২ জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক খুন হয়েছেন। তাঁদের বৃত্তান্ত দিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রী বদলার বদলে শান্তির কথা বলুন। আমি পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে বলেছি।"
বিরোধী তিন নেতা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বললেও রাজভবন থেকে বেরনোর সময় হাত নেড়ে বেরিয়ে যান পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বিজেপির দাবি, পার্থ চট্টোপাধ্যায় "নবান্নের অনুমতি" ছাড়া যৌথ বিবৃতি দিতে রাজি না হওয়ায় বৈঠক ফলপ্রসূ হয় নি। বৈঠক একপ্রকার অর্থহীন করেছে তৃণমূল। জয়প্রকাশ মজুমদারের প্রশ্ন পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে, "আপনাদের এই অসুবিধা কেন?"