জটিলতা তৈরি হলেও অবশেষে পশ্চিমবঙ্গ লোকায়ুক্ত সংশোধনী বিল পেশ হতে চলেছে রাজ্য বিধানসভায়। লোকায়ুক্ত সংশোনী বিলের ভবিষ্যত নির্ভর করছে বুধবার বিজনেস অ্যাডভাইসরি কমিটি অর্থাত বিএ কমিটির ওপর। কেন্দ্রীয় লোকপাল আইনকে হাতিয়ার করেই লোকায়ুক্তের সংশোধন আনতে চলেছে রাজ্য সরকার। বিধানসভা সূত্রে খবর, দ্য ওয়েষ্ট বেঙ্গল লোকআয়ুক্ত আমেন্ডমেন্ট বিল ২০১৮, ২৬ জুলাই বিধানসভায় পেশ হতে পারে।
লোকায়ুক্ত বিল ২০০৩ -এর সংশোধন করতে চলেছে রাজ্য সরকার। সংশোধনীতে লোকায়ুক্তের এক্তিয়ারের বাইরে রাখা হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীকে। কেন্দ্রীয় লোকপাল বিলে তদন্তের বাইরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ওই আইনকে হাতিয়ার করেই এই সংশোধনী বিল আনছে রাজ্য। লোকায়ুক্ত বিলে ১২ টি রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রীদের তদন্তের বাইরে রাখা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে ২০০৩ লোকায়ুক্ত বিলে মুখ্যমন্ত্রী তদন্তের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এবার সেই আইন বদলের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তাই বিধানসভায় এই বাদল অধিবেশনে পেশ করতে চায় সংশোধনী বিল। শাসকদলের যা বিধায়ক সংখ্যা, তাতে অনায়াসে ধ্বনি ভোটে ওই বিল পাশও হয়ে যাবে।
সংশোধনীতে কী আছে? দুটো মূল বিষয় রয়েছে। তদন্তের আওতার বাইরে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী এবং অন্য মন্ত্রী, আমলা, সরকারি কর্মচারিরাও।
নতুন সংশোধনীতে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোন অভিযোগ এলে বিচার করা যাবে না। পাশাপাশি রাজ্যের অন্য মন্ত্রী, আমলা ও সরকারি কর্মচারিদের ক্ষেত্রেও লোকায়ুক্তে বিচার করতে গেলে অনেক ধাপ পেরোতে হবে। তাঁদের বিচারের আওতায় আনতে গেলে সরকারের অনুমতি লাগবে। রাজ্যপালের কাছে সরকারকে সুপারিশ করতে হবে। কী সেই ধাপ রাখা হয়েছে বিলে? মুখ্যমন্ত্রী ছাড়া অন্যদের ক্ষেত্রে অভিযোগ এলে প্রথমে বৈঠকে বসবেন অধ্যক্ষ, পরিষদীয় মন্ত্রী ও বিরোধী দলনেতা। ওই তিনজনের মতামত নেওয়া হবে। তাঁদের মতামত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালের কাছে সুপারিশ করবেন।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান জানান, লোকায়ুক্ত পেশ করা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বিএ কমিটির বৈঠকে। এর আগে এই বিল নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। বিরোধীরা আদালতে যাওয়ার হুুমকি দিয়েছিলেন। বিরোধী দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এলে কেন তার কোনও তদন্ত হবে না?