রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ঘোষনা অনুযায়ী পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন পত্র জমা দেবার শেষ দিন ছিল গতকাল। কিন্তু মনোনয়ন পেশে বাধা এবং বিরোধীদের প্রতিবাদের দরুন তা পিছিয়ে দেওয়া হল আরও একদিন। অথচ তার আগেই বীরভূম জেলা পরিষদের ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়লাভ করল তৃণমূল কংগ্রেস। এর পাশাপাশি শাষকদল জিতল বীরভূমের ১৯টির মধ্যে ১৪টি পঞ্চায়েত সমিতিও। কমিশনের ঘোষনা অনুযায়ী এবছর রাজ্যের পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে মে মাসের ১, ৩ এবং ৫ তারিখে।
মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দিতেও তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়লাভ করেছে ৩০টির মধ্যে ২৯টি সীটেই।
এছাড়াও ভরতপুর ২-এর ২১টি সিট এবং বারওয়ানের মোট ৩৭টি পঞ্চায়েত সিটই তৃনমুল দখল করেছে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায়।
ক্ষুদ্ধ বিরোধীপক্ষ একারনে অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে শাষকদলের প্রতি। তাঁদের মতে তৃনমুল বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জিতবার জন্য সবরকমের অন্যায় কৌশল অবলম্বন করছে এবং মনোনয়ন পেশে বাধা তার মধ্যে অন্যতম।
সোমবার সন্ধ্যায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এ কে সিং জানান, “ডেপুটেশন এবং অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে রাজ্যজুড়ে বিরোধী দলগুলি মনোনয়ন পেশে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন। মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের আদেশ অনুযায়ী এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অভিযোগ মাথায় রেখে কমিশন মনোনয়ন পেশের শেষ দিন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামীকাল মঙ্গলবার অর্থাত ১০ই মে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে অব্দিও মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে।”
বীরভূম বিজেপির জেলাধ্যক্ষ রামকৃষ্ণ রায়ের অভিযোগ তৃণমূলের কর্মীরা বিজেপি প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশে বাধা দিতে ব্যাপকভাবে শাষাচ্ছে। “যা হচ্ছে তা অনভিপ্রেত। শাষকদল বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জিতবার জন্য আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়ন পেশে বাধাও দিচ্ছে। রাজানগর সীটে আমাদের একমাত্র প্রার্থী মনোনয়ন পেশে সক্ষম হয়েছেন। ফলতই তৃনমুল ওই একটি ছাড়া সমস্ত জেলা পরিষদ সিটে ইতিমধ্যেই জয়লাভ করেছে।”
রাহুল সিনহা বলেন, “এই জয় মানুষের নয়, বরং এটি বোমা ও গুলি সংস্কৃতির জয় বলা যায়। ভোটের আগে ওরা মানুষকে ভয় দেখিয়ে এবং শাষিয়ে দাবী করছে উন্নয়নের বিজয়ের দাবী করছে।”
সিপিএমের এমএলএ সুজন চক্রবর্তী বলেন টিএমসি পঞ্চায়েত দখল করে সেগুলি জিতে ফেলার দাবী করছে। “ওরা মনোনয়ন পেশে বাধা দিয়ে পঞ্চায়েত সিট দখল করছে। এভাবে জেতার কোন গৌরব নেই।”
তবে বীরভূমে তৃণমূলের রাজ্যাধ্যক্ষ অনুব্রত মন্ডল বলেন, “বিরোধীরা নিজেরাই হিংসা ছড়াচ্ছে। এবং তা ঘটাতে এরাজ্যে প্রচুর বহিরাগতের ও আমদানি হয়েছে। তাঁরাই আসলে গ্রামে ঢুকে হিংসা ছড়াচ্ছে। মানুষ তাঁদের সঙ্গে নেই। বিরোধীদের সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই, স্বভাবতই তাঁরা প্রার্থী দিতে পারছেন না।”