এক বছর ঘুরতেই ফের রাজনৈতিক সংঘর্ষে উত্তাল আরামবাগ। অভিযোগ, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে খুনে হতে হল তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সক্রিয় কর্মী ইসমাইল খাঁ চন্দনকে। বোমা ও গুলি আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে এই তৃণমূল কর্মীর দেহ। অভিযোগ উঠেছে শেখ তাইবুলের দলবল বোমা-গুলি নিয়ে তান্ডব চালায় আরামবাগের হরিণখোলা ২ নং পঞ্চায়েতের ঘোলতাজপুর গ্রামে। পুলিশ এই ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেস দলীয় স্তরে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আরমাবাগের হরিনখোলার ঘোলতাজপুর গ্রামে গত কয়েকদিন ধরেই গন্ডগোল চলছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার দখল নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষ বাধে। তিন দিন ধরেই এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি চলতে থাকে। এদিন বোমা-গুলির শব্দে তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বাড়ি ভাঙচুরও চলে যথেচ্ছ। এদিকে পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়েও অসন্তুষ্ট গ্রামবাসীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয়। বোমার আঘাতে ও গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় ইসমাইল চন্দনের। তিনি এলাকার সক্রিয় তৃণমূল কর্মী হিসাবে পরিচিত। তাঁর স্ত্রী এবং ৪ বছর ও ২ বছরের দুই সন্তান রয়েছে। জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি দিলীপ যাদব ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, "যারাই খুন করুক না কেন আইনগত ভাবে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। সাংগঠনিক ভাবে ব্যবস্থা নিতে হলে তা রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে নেওয়া হবে। তৃণমূল করে বলে কেউ কাউকে মেরে দেবে তা তো হতে পারে না। মৃত্যু আমাদের কাছে কষ্টদায়ক। মৃত্যু যদি কেউ সংগঠিত করে থাকে পুলিশ তার মত ব্যবস্থা নেবে।"
তৃণমূল যুব কংগ্রেসের রাজ্য সহ সভাপতি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থলে গেলে দলের কয়েকজন নেতা সম্পর্কে ক্ষোভ ফেটে পড়েন গ্রামবাসী ও তৃণমূল কর্মীরা। এলাকা ঘুরে দেখে নিহত কর্মীর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে সবরকমভাবে পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি। শান্তনু বলেন, "পরিকল্পনা করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। এলাকায় প্রচুর বাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। যারা খুন করে তারা খুনী। তাদের রাজনীতির রং বা ধর্ম হয় না। তাদের শাস্তি চাই। বিজেপি আমাদের দলের ভিতরে ঢুকে নোংরা খেলার চেষ্টা করছে।"
বছরখানেক আগেই এখানে তৃণমূলের এক যুব কর্মী খুন হয়েছিলেন। স্থানীয়রা এদিনের ঘটনার জন্য তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে দায়ী করছে। ইতিমধ্য চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে মূল অভিযুক্ত তাইবুল পলাতক। ধৃতরা হল হিদায়েত আলি (৭০), ইদ্রিস আলি (৪৪), শেখ সম্রাট বাবর (২২), শেখ সামসুর রহমান ওরফে শেখ বাবু (৩৪)। তাইবুলের সঙ্গে শাসক দলের কয়েকজনের ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও উঠছে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে তীব্র উত্তেজনা ও ব্যাপক আতঙ্ক রয়েছে।