করোনাভাইরাস মহামারী জনিত লকডাউন কতদিন চলবে তা কিসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হলো, এবং লকডাউন উঠে গেলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, বুধবার কেন্দ্রের কাছে তা প্রকাশ করার দাবি জানাল ভারতের কংগ্রেস পার্টি।
কংগ্রেস-শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের এক ভিডিও বৈঠকে দলের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী বলেন, “১৭ মে’র পর কী?” পরে তাঁকে উদ্ধৃত করে দলের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা বলেন, “১৭ মে’র পর কী? ১৭ মে’র পর কীভাবে? ভারত সরকার কিসের ভিত্তিতে ঠিক করছে লকডাউন কতদিন চলবে?”
ভারতে তৃতীয় দফার লকডাউন শেষ হওয়ার কথা ১৭ মে। প্রথম পর্বের লকডাউন ঘোষিত হয় ২৪ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল, যা শেষ হওয়ার পূর্বমুহূর্তে ১৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের উদ্দেশে জানান যে ৩ মে পর্যন্ত আরও দু’সপ্তাহ বাড়ানো হলো লকডাউনের মেয়াদ।
কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে উপস্থিত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ডাঃ মনমোহন সিং বলেন, “সোনিয়াজি যেমন বললেন, আমাদের জানা দরকার, লকডাউন ৩-এর পর কী হবে? মুখ্যমন্ত্রীদের এ বিষয়ে আলোচনা করে প্রশ্ন তোলা উচিত, দেশকে লকডাউন থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার জন্য কী পন্থা নেওয়ার কথা ভাবছে ভারত সরকার?”
আরও পড়ুন: ‘বাংলার মৃত্য়ুর হার বেশি…একটা গোষ্ঠী লকডাউন মানছে না’, রাজ্য়কে ফের পত্রাঘাত কেন্দ্রের
বৈঠকে “দিল্লিতে বসে বাস্তব চিত্র না জেনেই জোন বিভাজনের সিদ্ধান্ত” নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং। তিনি আরও বলেন যে লকডাউন থেকে কীভাবে বেরোনো যায় তা দেখতে, এবং অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের উদ্দেশ্যে তিনি দুটি কমিটি গঠন করেছেন।
রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট বড় রকমের আর্থিক সহায়তার প্যাকেজের দাবি জানান। তিনি বলেন যে বিভিন্ন রাজ্যের তরফে বারংবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্যাকেজ চাওয়া হয়েছে, “কিন্তু ভারত সরকার এখনও আমাদের কিছুই জানায় নি”। ছত্তিসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেল বলেন, “রাজ্যগুলির আর্থিক অবস্থা শোচনীয়। এই মুহূর্তে তাদের সাহায্যের প্রয়োজন।” তিনি আরও বলেন যে ছত্তিসগড়ের ৮০ শতাংশ ক্ষুদ্র শিল্প পুনরায় চালু হয়েছে, এবং কাজে ফিরেছেন প্রায় ৮৫ হাজার কর্মী।
এর আগে তৃতীয় দফার লকডাউন ঘোষণার পরেও তার মেয়াদ বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কংগ্রেস। “লকডাউন ৩-এর লক্ষ্য কী? কী উদ্দেশ্য, এবং কী পরিকল্পনা? এরপর কি লকডাউন ৪ বা লকডাউন ৫ হবে? কবে পুরোপুরি শেষ হবে? ১৭ মে’র মধ্যে করোনাভাইরাস মহামারী এবং অর্থনৈতিক মহামারীর বিরুদ্ধেও যুঝতে কী লক্ষ্যমাত্রা রাখা হয়েছে? ১৭ মে’র মধ্যে সংক্রমণ রোধ করার, বা জীবিকা অর্জনের পথ খোঁজার, বা এই বিপুল অর্থনৈতিক সঙ্কটের মোকাবিলা করার কী বাস্তব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত হয়েছে?”
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন