তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ কার্যকরী করতে সচেষ্ট হলেন দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, সভার পরই দলের নেতৃত্ব দলনেত্রীর কাছে তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নাম প্রস্তাব করেন সভাপতি হিসাবে। জানা গিয়েছে, আগামী ৮ সেপ্টেম্বর তৃণমূল ভবনে দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটি নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করবে। নতুন কমিটির কনভেনর হবেন বিদায়ী সভাপতি জয়া দত্ত।
ছাত্র পরিষদের সভাপতি কে হচ্ছেন? শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের সভাপতি বলে মাথা ঘামাচ্ছিল বাংলার রাজনৈতিক মহল। সভার আগে অবধি আদৌ কেউ সভাপতি ছিলেন কী না সেটাও একটা জিজ্ঞাসা। কারণ, এদিনের মেয়ো রোডের জনসভার জন্য রাজ্য জুড়ে প্রস্তুতি হয়েছে জয়া দত্তর নেতৃত্বেই। আবার যে তিনজন সংগঠনের মধ্য থেকে ভাষণ দিলেন, সেই তালিকাতেই রইলেন না জয়া। কখনও তাঁকে মঞ্চের পিছনের সারিতে দেখা গিয়েছে। তবে এদিন তৃণমূল সুপ্রিমো পরিস্কার ঘোষণা করে দিয়েছেন, ১৫ দিনের মধ্যে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে। ওই মিটিং হওয়ার কথা ৮ সেপ্টেম্বর তৃণমূল ভবনে।
আরও পড়ুন: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের পরেই কি সরানো হবে জয়া দত্তকে?
এদিন মেয়ো রোডের সভায় ছাত্র সংগঠনের পক্ষে বক্তব্য রাখলেন বারাসত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাধারন সম্পাদক তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাধারন সম্পাদক লগ্নজিতা চট্টোপাধ্যায়, এবং রুমানা আখতার। অথচ সাংগঠনিক পদমার্যাদার একজনও বক্তব্য রাখার অনুমতি পেলেন না। জয়া দত্তকে তো খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছিল না। মমতা নতুন কমিটি গঠনের জন্য দায়িত্ব দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একইসঙ্গে যাঁরা ছাত্র সংগঠনের হাত ধরে দলের নেতৃত্বের সিঁড়ি বেয়ে উঠে এসেছেন, তাঁদের সঙ্গেও আলোচনা করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
তাহলে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের নতুন সভাপতি কে হবেন? এদিন সমাবেশে যাঁরা বক্তব্য রেখেছেন, তাদের নিয়েই আলোচনা হয়েছে। যে তিনজন ছাত্র প্রতিনিধি বক্তব্য রেখেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ বা অন্য কোনও ধরনের তেমন অভিযোগও নেই। ছাত্র রাজনীতিতে তরতাজা নতুন মুখ চাইছে তৃণমূল। দল এই ধরনের ভাবমূর্তিকে কাজে লাগাতে চায়। মমতা এদিন পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন, নেতাদের বাড়ি গেলেই হবে না, কাজ করতে হবে।
তবে রাজ্য সভাপতি হিসাবে প্রাক্তন দুই রাজ্য সভাপতির নামও ঘুরে বেড়াচ্ছিল। তাঁরা বেশ কিছু দিন ধরেই তৎপর ছিলেন। দলের অনেক শীর্ষ নেতাই তাঁদের ঘনিষ্ঠ। সেই সম্পর্ককে কাজে লাগাতে চাইছিলেন তাঁরা। তবে দলের একাংশ চাইছে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির কাউকে ছাত্র সংগঠনের মাথায় বসানো হোক। কলেজে ছাত্র ভর্তি নিয়ে যে ভাবে দলের মুখ পুড়েছে তাতে সেটা খুব জরুরী বলে মনে করছে দলের ওই অংশ। তাই তৃণমূলের অন্দরেই ঘুরপাক খাচ্ছে নতুন মুখ তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের নাম।