রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী সম্পর্কের উষ্ণতার পারদ গলছে? প্রশ্ন উঠছে বঙ্গ রাজনীতিতে।
রাজ্য ও বাংলার শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের টুইটবাণ ছিল নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূলও নিশানা করতে পিছপা হত না রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানকে। কিন্তু গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সোশাল মিডিয়ায় আর তেমন সরব হচ্ছেন না রাজ্যপাল। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীরও স্বাধীনতার দিবসের সন্ধ্যায় রাজভবনে গিয়ে চা চক্রে যোগ দেন। এদিন আবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের প্রশংসা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে কী মমতা-ধনকড় সম্পর্কের উন্নতি হচ্ছে? এই প্রশ্নই এখন জোড়াল হচ্ছে।
বাংলা জয়ে হ্যাটট্রিকের পর তৃণমূলের নজরে পড়শি বাঙালি রাজ্য ত্রিপুরা। সংগঠন পোক্ত করতে ইতিমধ্যেই সেখানে ঘাঁটি গাড়তে শুরু করেছেন দলের যুব নেতৃত্ব। সামিল তৃণমূলের একাধিক মন্ত্রী, সাংসদও। ইতিমধ্যেই দু'বার ঘুরে এসেছেন জোড়াফুলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বাংলার শাসক দল। আন্দোলনও শুরু করেছে। এরপরই তৃণমূলে নেতৃত্বের উপর হামলা চলেছে। প্রথমে অভইষেকের কনভয়ে হামলা, পরে আক্রান্ত হন দলের যুব নেতৃত্ব ও দুই মহিলা সাংসদ। ঘোস-ফুলের কাঠগড়ায় বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর নির্দেশেই অভিষেক ও যুব তৃণমূল নেতৃত্বের উপর ত্রিপুরায় হামলা চলেছে বলে অভিযোগ মমতা বন্দ্যোপাধ্যের। ফলে বাংলার পাশাপাশি এখন দুই ফুল শিবিরের দ্বৈরথের নতুন ভরকেন্দ্র উত্তর পূর্বের ত্রিপুরা।
তৃণমূল ত্রিপুরায় জমি বিছোতে শুরু করা মাত্রই তাদের নানা বিরোধের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সে রাজ্যের শাসক দলের নেতৃত্বে পুলিশ দলদাসের মত কাজ করছে বলে অভইযোগ এ রাজ্যের শাসক বাহিনীর। এই হামলা ও বিরোধ নিয়ে ত্রিপুরার রাজ্যপালের দ্বারস্থ হতে চেয়েছিল তৃণমূল। কিন্তু তাঁর সময় মেলেনি। ১৫ অগস্টের পর দেখা করবেন বললেও রাজ্যপাল এখনও সাক্ষাৎকারের দিনক্ষণ জানাননি।
এপ্রসঙ্গে বলেত গিয়েই এ দিন নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, "সময় চাইলেও উনি দিচ্ছেন না। আমাদের রাজ্যপালকে ভাল বলতে হবে। রাজ্যপালের কাছে রোজ বিজেপি নেতারা গিয়ে বসে থাকেন। ওঁদের টাইম দেন, প্রতিদিন সন্ধাবেলা ওঁদের সঙ্গে আলোচনা করেন।" একইসঙ্গে গেরুয়া শিবিরকে তৃণমূল সুপ্রিমোর চ্যালেঞ্জ, "এভাবে আটকানো যাবে না। ২০২৩-এ ত্রিপুরায় তৃণমূলই জিতবে।"
ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দল থেকে ত্রিপুরায় তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন নেতা, কর্মীরা। মমতা এদিন জানান, সে রাজ্যের প্রাক্তন স্পিকার জীতেন সরকার তাঁকে চিঠি দিয়ে জোড়া-ফুলে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি তিনি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়ে দিয়েছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন