Advertisment

সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক লক্ষ্য নিয়েই কুমারস্বামীকে ফোন মমতার

রাজনৈতিক বিশেজ্ঞদের বক্তব্য়, শুধু বিজেপি নয়, রাহুলের কংগ্রেসকেও তৃণমূলনেত্রী বুঝিয়ে দিতে চান ফেডারেল ফ্রণ্টের নেতৃত্বের ব্য়াটন থাকবে তাঁরই হাতে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mamata banerjee, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ফাইল ছবি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

কর্নাটকে তাঁর দলের লেশমাত্র সংগঠন নেই। নিদেনপক্ষে সাংসদ, বিধায়ক তো দূরের কথা নেই কোনও কাউন্সিলরও। তবুও কর্নাটক বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু ফলাফলের পর কংগ্রেস নেতৃত্বকে ফোন না করলেও জেডিএস নেতা এইচ ডি দেবেগৌড়া ও কুমারস্বামীকে ফোন করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। ফলাফলের দিন তিনি ফোন করে অভিনন্দন জানিয়েছেন দেবেগৌড়াকে। পরের দিন ফোন করে কুমারস্বামীকে সরকার গড়তে বলেছেন। পরামর্শ দিয়েছিলেন প্রয়োজনে রাষ্ট্রপতির দ্বারস্থ হতে।

Advertisment

রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মোদি বা বিজেপি বিরোধিতায় ফেডারেল ফ্রন্ট গঠনে সব থেকে বেশি উদ্য়োগী বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী। মোদি বিরোধিতায় তিনিই যে পয়লা নম্বরে তা প্রমাণে বদ্ধপরিকর তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আঞ্চলিক দলগুলোকে একত্রিত করার প্রয়াস অব্য়াহত রেখেছেন মমতা।

আরও পড়ুন, কর্নাটকের নতুন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিলেন ইয়েদুরাপ্পা

ঠিক একবছরের মধ্য়ে দেশে সরকার গড়ার নির্বাচন। গত লোকসভা ভোটে এনডিএ জোট করে ভোটে লড়াই করলেও বিজেপি একক ভাবে সংখ্য়াগরিষ্ঠতা পেয়েছিল। তারপর গেরুয়া শিবির পরিকল্পনামাফিক একের পর এক রাজ্য়ে ক্ষমতা দখল করে চলেছে। মণিপুর, গোয়ায় একক বৃহত্তম দল হলেও সরকার গঠনের ডাক পায়নি কংগ্রেস। মোদির গুজরাটে হুল ফুটিয়েও শেষমেশ বাজিমাত করতে সক্ষম হয়নি রাহুলের কংগ্রেস। তখনও গুজরাট ভোটের ফলের পর জিগনেশ, হার্দিকদের ফোন করে ধন্য়বাদ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বিজেপি ক্ষমতায় এলেও ওই যুবদের লড়াইকে কুর্নিশ জানাতে ভোলেননি মমতা। পরবর্তীতে হার্দিক প্য়াটেল নবান্নে এসে দেখা করে গিয়েছেন মমতার সঙ্গে। দেশের যে কোনও রাজ্য়ের নির্বাচনের আগে বা পরে প্রচারে থেকেছেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়।

রাজনৈতিক বিশেজ্ঞদের বক্তব্য়, শুধু বিজেপি নয়, রাহুলের কংগ্রেসকেও তৃণমূলনেত্রী বুঝিয়ে দিতে চান ফেডারেল ফ্রণ্টের নেতৃত্বের ব্য়াটন থাকবে তাঁরই হাতে। আঞ্চলিক দলগুলোকে এক সূত্রে এনে গেরুয়া শিবিরকে দিল্লি থেকে ক্ষমতাচ্য়ুত করাই তাঁর লক্ষ্য়। দেবগৌড়া পুত্রকে ফোন করার মধ্য়েও সুদূরপ্রসারী উদ্দেশ্য় রয়েছে, তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই।

গুজরাটে তাঁদের সঙ্গে লড়াইয়ে তিনি যে পাশে আছেন তা জানিয়েও দিয়েছেন। শুধু সেখানেই থেমে থাকেননি। যে কোনও ভাবে মোদিকে হঠানোই লক্ষ্য় তৃণমূল সুপ্রিমোর। সম্প্রতি, দিল্লি গিয়ে দফায় দফায় আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। লালু প্রসাদ যাদবের ছেলের বিয়েতে নিজে যেতে না পারলেও পাঠিয়েছিলেন রাজ্য়ের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। এমনকি গেরুয়া শিবিরের বিক্ষুব্ধ সাংসদ সুবহ্মণিয়ম স্বামীও নবান্নে এসে দেখা করেছেন মমতা বন্দোপাধ্য়ায়ের সঙ্গে।

আরও পড়ুন, কর্নাটকের ঘটনায় অভিজ্ঞ কংগ্রেস-আরজেডি, গোয়া-বিহারে রাজ্যপালদের উপর চাপের রণকৌশল

দিল্লি গিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে একের পর এক বৈঠক করেছেন মমতা। লক্ষ্য় একটাই, বিরোধীদের একত্রিত করা। সেই আলোচনায় বাদ যাননি অরুণ শৌরি, শত্রুঘ্ন সিনহা, যশবন্ত সিনহারাও। সেই সময়ে তৃণমূল নেত্রী দীর্ঘ বৈঠক করেছেন এনিসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গেও। মুম্বাইয়ে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গেও আলোচনা সেরেছেন মমতা। তৃণমূল সুপ্রিমোর সঙ্গে দেখা করার তালিকায় ছিলেন, ডিএমকে নেত্রী কানিমোঝি, জয়প্রকাশ নারায়ণ যাদব, নিশা যাদব, ওড়িশার বিজু জনতা দলের অনুভব মহান্তি, ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার সঞ্জীব কুমার, টিডিপি নেতা ওয়াই এস চৌধুরি। তেলেঙ্গানার মুখ্য়মন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও নবান্নে এসে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন মমতার সঙ্গে। বাংলার মুখ্য়মন্ত্রী তাঁর প্রতিও পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার কর্নাটকে মুখ্য়মন্ত্রী হিসাবে শপথ নিয়েছেন বিজোপির ইয়েদুরাপ্পা। রাজনৈতিক মহলের অনুমান, এসব সত্ত্বেও ফেডারেল ফ্রন্ট গঠন করা থেকে বিরত থাকবেন না মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বরং পরবর্তীতে আবারও ঝাঁপ দেবেন আঞ্চলিক দলগুলোকে এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার জন্য়।

Mamata Banerjee karnataka elections
Advertisment