scorecardresearch

মতুয়া সম্প্রদায় বিজেপি ও তৃণমূলের কাছে জরুরি কেন

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বড়মা ঘনিষ্ঠ, তাঁর পরিবারের অনেককেই ভোটে টিকিট দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তবে সাম্প্রতিক কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক ভাবে বিভাজিত হয়ে গেছে এই পরিবার।

Matua Rally
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমাবেশের আগে মতুয়া মিছিল (ছবি শশী ঘোষ)

শনিবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঠাকুরনগর থেকে লোকসভা প্রচার শুরু করে দিলেন। ঠাকুরনগর বাংলাদেশ সীমান্তে, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্ভুক্ত। মোদী দেখা করেছেন শতায়ু বীণাপাণি দেবির সঙ্গে, যিনি ‘বড়মা’ হিসেবেই পরিচিত। বড়মা মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রধান। মোদীর সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন বড়মা’র নাতি শান্তনু ঠাকুরও। শান্তুনু এখন মতুয়া সম্প্রদায়ের উঠতি নেতা।

মতুয়া সম্প্রদায় তৃণমূল ও বিজেপির পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ কেন?

মতুয়াদের গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে মতুয়ারা তৃণমূল কংগ্রেস সমর্থক বলেই পরিচিত ছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বড়মা ঘনিষ্ঠ, তাঁর পরিবারের অনেককেই ভোটে টিকিট দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তবে সাম্প্রতিক কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক ভাবে বিভাজিত হয়ে গেছে এই পরিবার।

আরও পড়ুন, কপ্টার না পেলে হেঁটে, সাইকেলে প্রচার করব: মমতা

মতুয়াদের শিকড় পূর্ববঙ্গে। এঁদের অনেকেই পশ্চিমবঙ্গে এসেছেন পার্টিশন বা দেশভাগের পরে। সে কারণেই ঠাকুরনগরে নিজের ভাষণে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিলের কথা তুলে ধরেছেন মোদী। মতুয়ারা তফশিলি জাতিভুক্ত নমঃশূদ্র। অন্তত ছ’টি লোকসভা আসনে এই সম্প্রদায়ের উপস্থিতি রয়েছে। সরকারিভাবে এঁদের জনসংখ্যার কোনও হিসেব না পাওয়া গেলেও, মতুয়া নেতাদের মতে তাঁদের সংখ্যা তিন কোটি। রাজ্যের এক মন্ত্রীর হিসেবে, মোট নমঃশূদ্র ভোটারের সংখ্যা পৌনে দু’কোটি।

১৮৮০ সালের মাঝামাঝি স্থাপিত হয়েছিল মতুয়া মহাসংঘ। পূর্ববঙ্গে এ সংঘের সূচনা করেছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুর। ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলন এবং সম্প্রদায় হিসেবেই পরিচিত এরাজ্যে ১৯৪৭ সালের পর পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরনগরে মতুয়া মহাসংঘের প্রধান কার্যালয় স্থাপন করেন হরিচাঁদ ঠাকুরের নাতি পি আর ঠাকুর। সেই পরিবারেরই উত্তরসূরী হলেন বড়মা, মতুয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে যাঁর প্রভাব অসীম।

প্রথমে মতুয়ারা কংগ্রেসের সমর্থনে থাকলেও, ১৯৭৭ সালের পর তাঁরা ঝোঁকেন বামফ্রন্টের দিকে। কিন্তু নাগরিকত্ব এবং জমি অধিকারের ইস্যুতে তাঁদের আশাভঙ্গ হয়। ২০০৯ সালে বাম এবং তৃণমূল, উভয় পক্ষই আলাদা আলাদা করে মতুয়াদের সমর্থন চায়। মতুয়ারা এবার মমতাকে বেছে নেন। ২০১০ সালে বড়মা মমতাকে মতুয়া মহাসভার মুখ্য পৃষ্ঠপোষক ঘোষণা করেন, ২০১১ সালে ঠাকুরনগরে সম্প্রদায়ের পুণ্য পুষ্করিণী কামোনাশাগার সংস্কারের জন্য অনুদান অনুমোদন করেন। ২০১৮ সালে বড়মা’র সঙ্গে দেখা করতে যান মমতা। কিছুদিন পর মতুয়া ওয়েলফেয়ার বোর্ড গঠন করার কথা ঘোষণা করে সরকার।

২০১৪ সালে বনগাঁ লোকসভা আসন থেকে তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন বড়মা’র ছেলে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর। তাঁর মৃত্যুর পর সে আসন থেকে জেতেন কপিলকৃষ্ণের স্ত্রী মমতাবালা ঠাকুর। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তাঁদের পরিবারের মধ্যেই। বড়মা’র আরেক নাতি সুব্রত দাঁড়িয়েছিলেন বিজেপির হয়ে। সুব্রতর বাবা, বড়মা’র ছেলে মঞ্জুলকৃষ্ণ ঠাকুর, তৃণমূলের মন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু পরে তিনি এবং সুব্রত দুজনেই বিজেপিতে যোগ দেন। মঞ্জুলকুমারেরই আরেক ছেলে শান্তনু ছিলেন মোদীর কর্মসূচির সংগঠক। মোদীকে ভাষণ দিতে ডেকেছিলেন তিনিই।

Read the Full Story in English

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Politics news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Why matuas are important for both trinamool congress and bjp explained