Advertisment

মহিলা সংরক্ষণ বিল: হইহই করে আইনে পরিণত হলেও ২০২৪-এ কার্যকর হবে না! কেন, তাহলে কবে?

অর্থাৎ এখনও অপেক্ষা প্রায় ৬ বছরের।

IE Bangla Web Desk এবং Rajit Das
New Update
Womens reservation Act probably effective in 2029 , ২০২৩ সালে পাস হলেও ২০২৯ সালে কার্যকর হবে মহিলা সংরক্ষণ বিল

ভারতের নয়া সংসদ ভবন।

মহিলা সংরক্ষণ বিল পাসের দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান সম্ভবত হতে চলেছে পার্লামেন্ট হাউস অফ ইন্ডিয়ায় প্রথম অধিবেশনেই। এই নিয়ে নানা চর্চা। ইতিমধ্যেই আইনমন্ত্রী এই বিল লোকসভায় পেশ করেছেন। সহযোগিতার কথা জানিয়েছে বিরোধী কংগ্রেস। ফলে সংসদে মহিলা সংরক্ষণ বিলের আইনে পরিণত হওয়ায় বড় কোনও বাধা নেই। প্রশ্ন হল, চলতি অধিবেশনে এই বিল আইনে পরিণত হলেই কী ২০২৪ সালে আসন্ন লোকসভা ভোটে তা কার্যক সম্ভব?

Advertisment

সরকারি সূত্রে খবর, বাদল অধিবেশনের বিশেষ পর্বে ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ বিল পাস হলেও তা ২০২৪ সালের লোকসভায় কার্যকর হবে না। এখন পাস হলেও ওই আইন বলবৎ হবে ২০২৯ সালে। অর্থাৎ এখনও অপেক্ষা প্রায় ৬ বছরের।

কেন এই অপেক্ষা? এই বিল তৈরির ক্ষেত্রে সরাসরি যুক্ত এক সরকারি আমলা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন যে, ২০২৬ সালে লোকসভার আসন সীমানার পুনর্বিন্যাস হবে। তার ভিত্তিতেই ৩৩ শতাংশ মহিলা সংরক্ষণ বিল কার্যকর হবে। ওই সরকারি আমলার কথায়, 'বিলটি চলমান অধিবেশনে পেশ করা হচ্ছে। তবে অনেক যদি এবং কিন্তু আছে। তাই আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে বাস্তবায়নের সম্ভাবনা নেই। সম্ভবত, জনগণনার ভিত্তিতে লোকসভার আসনগুলির সীমানা নির্ধারণের (যা ২০২৬ সালে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে) পরেই মহিলা সংরক্ষণ আইন কার্যকর হবে।'

কংগ্রেস আমলে এই বিল পাসের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। ২০১০ সালে রাজ্যসভায় মহিলাদের সংরক্ষণ বিল পাস হয়েছিল। কিন্তু লোকসভায় কিছুই হয়নি। ফলে ওই বিল আইনে পরিণত হতে পারেনি। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৯ -য়ের লোকসভা ভোটের ইস্তেহারে মহিলাদের সংরক্ষণ আইনের প্রতিশ্রুতি ছিল। যা এই বাদল অধিবেশনের বিশেষ পর্বে বাস্তবায়িত হতে চলেছে।

আরও পড়ুন- মহিলা সংরক্ষণ বিল: মোদীর ক্যাবিনেট ছাড়পত্র দিতেই সনিয়া বললেন ‘এটা আমাদেরই’

শাসক পক্ষের পেশ করা বিলে কংগ্রেস সমর্থনের কথা জানালেও মহিলা সংরক্ষণ বিল নিয়ে মোদী সরকারকে একতরফা কৃতিত্ব ছাড়তে নারাজ হাত শিবির। এই বিলতে 'আমাদের' বলে মঙ্গলবারই সংসদে প্রবেশের মুখে মন্তব্য করেছেন সনিয়া গান্ধী। নয়া সংসদ ভবনে প্রথম অধিবেশনেই এই বিলের জন্য কংগ্রেসের কৃতিত্বের কথা উল্লেখ না থাকায় সরব হয়েছেন অধীর চৌধুরী। পাল্টা মুখ খুলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ১০ বছর আগে রাজ্যসভায় পাস করিয়েও কেন মহিসাদের সংরক্ষণ বিল লোকসভায় পাস করে আইনে পরিণত হল না? সেই প্রশ্ন তুলেছে তিনি। মোদী সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও জলশক্তি প্রতিমন্ত্রী প্রহ্লাদ প্যাটেলের দাবি, 'মহিলা সংরক্ষণের দাবি পূরণ করার নৈতিক সাহস কেবল মোদী সরকারেরই ছিল যা মন্ত্রিসভার অনুমোদনের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে। নরেন্দ্র মোদীজিকে অভিনন্দন এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ।'

আরও পড়ুন- কী হচ্ছে সংসদের পুরনো ভবনের নাম? ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী

মহিলা সংরক্ষণ বিল পাসের উদ্যোগ আসন্ন লোকসভার আগে বিরোধীদের জোট 'ইন্ডিয়া'-কে ভাঙতে মোদী সরাকারের বিরাট কৌশল বলে দাবি রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের। কারণ, বিরোধী জোটের বেশিরভাগ দলই মহিলাদের সংরক্ষণের পক্ষে। কিন্তু সমাজবাদী পার্টি এবং আরজেডি চায় ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের মধ্যে জাতি ও সম্প্রদায় ভিত্তিক কোটা। এছাড়াও, ইস্তেহারে দেওয়া মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতিও মোদী সরকার পালন করেছে বলে দাবি করতে পারবে বিজেপি।

মহিলসাদের রাজনীতি নিয়ে সচেতনতা বেড়েছে। ১৯৫১ সালে প্রথম লোকসভা ভোটে ৪৮৯ সাংসদের মধ্যে মহিলা ছিলেন মাত্র ২২ জন (৪.৪১ শতাংশ)। ২০১৯ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭৮ (১৪.৩৬ শতাংশ)। বর্তমানে লোকসভার মোট আসন ৫৪৫। অর্থাৎ এখনও মোট আসনের এক তৃতীয়াংশ মহিলা সাংসদ নেই।

bjp CONGRESS Parliament Monsoon Session loksabha election 2024 Womens Reservation Bill
Advertisment