Uttar Pradesh: ২০১৩ মুজফফরনগর দাঙ্গায় বিধস্ত হয়েছিল পশ্চিম উত্তর প্রদেশ। জেলার কৈরানা এলাকায় ঘরছাড়া হয়েছিলেন একাধিক হিন্দু পরিবার। দুষ্কৃতি তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছিলেন একাধিক। এমন অভিযোগেই ২০১৭ বিধানসভা নির্বাচনে সরব হয়েছিল বিজেপি। সেই মেরুকরণের ফল হাতেনাতে সেবার বিধানসভা ভোটে পেয়েছিল গেরুয়া শিবির। এমনটাই বরাবর দাবি করেছেন বিশ্লেষকরা। সাড়ে ৪ বছ্র বাদে সেই রাজ্যের দুয়ারে যখন আরও একটা বিধানসভা ভোট, তখন ফের প্রাসঙ্গিক মুজফফরনগর দাঙ্গা। সোমবার কৈরানা পরিদর্শনে গিয়ে সেই স্মৃতি উসকে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
কার্যত হুমকির সুরে তিনি বলেছেন, ‘সেই সময় যারা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের আক্রমণ করেছিলেন, তাঁদের অন্য জগতে পাঠিয়েদ দেওয়া হবে।‘ অর্থাৎ অভিযুক্তদের খানিকটা এনকাউন্টারের হুমকি দিয়ে রাখলেন উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী। এমনটাই বিজেপি সূত্রে খবর। বিরোধীদের একহাত নিয়ে তিনি আরও বলেছেন, ‘তালিবানি মানসিকতা উত্তর প্রদেশে চলবে না। মুজফফরনগরে যখন হিন্দুদের বাড়িঘর পোড়ান হচ্ছিল, নিরীহ যুবকদের হত্যা করা হচ্ছিল, তখন বিরোধীরা প্রতিবাদ করেনি।‘
তিনি দাবি করেছেন, ‘কৈরানার স্থানীয় বাসিন্দা এবং ব্যবসায়ীদের যারা সেই সময় বিতাড়িত করেছিল, গত সাড়ে ৪ বছরে তাঁদের বিতাড়িত করা হয়েছে।‘ এদিকে, জিন্না মন্তব্যকে হাতিয়ার করে সমাজবাদী পার্টির প্রধানকে বিঁধলেন যোগী আদিত্যনাথ, আসাউদ্দিন ওয়েসি এবং মায়াবতী। সাম্প্রতিক মন্তব্যে মহাত্মা গান্ধি, বল্লভভাই প্যাটেল, জওহরলাল নেহেরু এবং মহম্মদ আলি জিন্নাকে একাসনে বসান অখিলেশ যাদব। সেই প্রেক্ষিতেই গত সপ্তাহে সরব হয়েছিলেন যোগী থেকে মায়াবতী।
উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রবিবার সর্দার প্যাটেলের সঙ্গে জিন্নার তুলনা করেছেন। এই তুলনা লজ্জাজনক। তালিবানি মানসিকতার পরিচয়। যারা বিভাজনে বিশ্বাস করে।’ একইভাবে সাংসদ এবং মিম প্রধান আসাউদ্দিন ওয়েসি বলেন, ‘অখিলেশ যাদবের বোঝা উচিত ভারতীয় মুসলিমদের সঙ্গে জিন্নার কোনও সম্পর্ক নেই। আমাদের পূর্বপুরুষরা দুই দেশ তত্ত্ব খারিজ করে ভারতকে বেছে নিয়েছেন।’
বিএসপি প্রধান মায়াবতী আবার বিজেপি-এসপির যোগসাজশের প্রসঙ্গ তুলে অখিলেশ যাদবকে কটাক্ষ করেন। আগামী বছর মহারণ। উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট। অপরদিকে, ২০২২ সালের উত্তর প্রদেশ ভোট আদিত্যনাথের নেতৃত্বেই লড়বে বিজেপি। গত মাসে লখনউয়ের এক অনুষ্ঠানে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন অমিত শাহ। পাশাপাশি তিনি দাবি করেছেন, ২০২৪-এ ফের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ফিরছেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁর নেতৃত্বেই সে বছর সাধারণ নির্বাচন লড়া হবে। এই দুটি মন্তব্য করে জাতীয় রাজনীতিতে চলা সাম্প্রতিক জল্পনায় জল ঢেলেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। বিশেষজ্ঞদের একটি অংশের দাবি ছিল, ২০২৪-এ সরবেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁর জায়গায় আসবেন যোগী আদিত্যনাথ। আর ২০২২ উত্তর প্রদেশ ভোটে যোগীকে সামনে রাখবে না বিজেপি।
এই দুই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে গত মাসের শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর প্রদেশের সব প্রয়োজন পূরণ করেছেন। যার ভিত্তিতেই ২০২৪ সালে ভোটে লড়বে বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী হবেন মোদিজি। একইভাবে ২০২২ উত্তর প্রদেশ বিধানসভা ভোটের পর মুখ্যমন্ত্রী হবেন যোগীজি।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন