গত পাঁচ বছর উত্তরপ্রদেশে সরকার চালিয়েছে যোগী সরকার। প্রচারে তাই উঠে আসছে উন্নয়নের কথা। কিন্তু, এতেই যে চিঁড়ে ভিজবে না তা ভালোই বুঝেছেন পদ্ম বাহিনীর কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই উন্নয়ের সঙ্গেই ফের বিজেপির নির্বাচনী প্রচার কৌশলে প্রাধান্য পাচ্ছে হিন্দুত্ব। আর এই হিন্দুত্বকে তুলে ধরতেই এবার রামজন্মভূমি অযোধ্যা থেকে আসন্ন বিধানসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
মঙ্গলবার দিল্লিতে বসেছিল পাঁচ রাজ্যের ভোট নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক। সেখানেই যোগী আদিত্যনাথের অযোধ্যায় দাঁড়ানোর প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়। কট্টর হিন্দুত্ববাদের বার্তা গেরুয়া বসনধারী যোগীই পারবেন ছড়িয়ে দিতে- এমনটাই মনে করছেন পদ্ম শিবিরের তাবড় নেতারা। তবে কে কোথা থেকে প্রার্থী হবেন সেই সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত মোদী-শাহ বিশিষ্ট বিজেপির কেন্দ্রীয় নির্বাচনী কমিটি গ্রহণ করবে। শীর্ঘ্রই এই কমিটি বৈঠকে বসবে।
সূত্র জানাচ্ছে, বর্তমানে রাজ্যসভার সাংসদ যোগী আদিত্যনাথ। তিনিই পাঁচ বছরের শাসনের পর অযোধ্যা থেকে এবার ভোট ময়দানে নামতে মুখিয়ে রয়েছেন। দলকে অযোধ্যায় তাঁকে প্রার্থী করারও প্রস্তাব দিয়েছেন যোগী। প্রচারে হিন্দুত্বের তকমা প্রকট করতেই এই কৌশল বলে খবর।
হিন্দি বলয়ের বৃহৎ রাজ্য উত্তরপ্রদেশে হিন্দুত্ব, হিন্দুদের জোটকে বরাবরই প্রাধান্য দিয়েছে বিজেপি। এবার পদ্ম বাহিনীর হিন্দুত্বের পাল্টা অ-যাদব অনগ্রসর শ্রেণির ভোটকে পাখির চোখ করেছে অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টি। তার বিরুদ্ধে লড়াই য়ে শুধু হিন্দুত্ব নয়, উল্টে হিন্দুদের বৃহৎ জোট ও তার প্রয়োজনীয়তাকে প্রচারে তুলে ধরতে মরিয়া গেরুয়া দলটি।
গত পাঁচ বছরে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অযোধ্যায় গিয়েছেন ৪২বার। গত কয়েক মাসে মোদী-শাহ জুটিও উত্তরপ্রদেশে যাতায়াত বাড়িয়েছেন। কাশী থেকে অযোধ্যা- মোদী গিয়েছেন বেশ কয়েকবার। ভোটমুখী রাজ্যে উদ্বোধন করেছেন একের পর এক উন্নয়ন প্রকল্প। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, এগুলির বেশিরভাগই দলের হিন্দুত্বনীতি তুলে ধরার চেষ্টায়।
যোগী পাঁচবার লোকসভা ভোটে লড়াই করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন গোরক্ষপুর থেকে। এবার অযোধ্যা থেকে লড়লেই প্রথমবার গোরক্ষনাথ মঠের প্রধান পুরোহিত গোরক্ষপুরের বাইরেরকোনও কেন্দ্র থেকে ভোট লড়বেন।
বর্তমানে অযোধ্যার বিধায়র বিজেপির বেদ প্রকাশ গুপ্তা। এই কেন্দ্রের বরাবরই গেরুয়া দলের প্রাধান্য বেশি। তবে ২০১২ সালে অযোধ্যা থেকে লড়ে জয় পেয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টির নেতা অখিলেশ যাদব।
কট্টর হিন্দুত্বকে পুঁজি করতে দিন কয়েক আগেই মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য়নাথ বলেছিলেন যে, উত্তরপ্রদেশে এবার ভোট ৮০ শতাংশের সঙ্গে ২০ শতাংশের। যা ঘিরে বিতর্ক হয়। পরে যোগী ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন ২০ শতাংশ হল রামমন্দির বিরোধী, পাকিস্তানপন্থী, নারী নিগ্রহকারীদের। উল্লেখ্য, উত্তরপ্রদেশে সংখ্যালঘু মুসলিম ভোটার সংখ্যা ১৯.২৬ শতাংশ।