Tripura Violence: সত্যের জয় হয়েছে। জামিন পেয়ে সংবাদ মাধ্যমকে এই প্রতিক্রিয়া দিলেন সায়নী ঘোষ। রবিবার খুনের চেষ্টার অভিযোগে ত্রিপুরায় গ্রেফতার হয়েছিলেন এই অভিনেত্রী-রাজনীতিবিদ। তৃণমূলের যুবনেত্রীকে সোমবার আদালতে তোলে পুলিশ। চাওয়া হয় দুই দিনের পুলিশ হেফাজত। কিন্তু সেই আবেদন খারিজ করে ব্যক্তিগত ৩০ হাজার বন্ডে সায়নীর জামিন মঞ্জুর করে আদালত। এদিন আদালতের বাইরে সায়নীকে স্বাগত জানান কুণাল ঘোষ, ব্রাত্য বসুরা।
স্বস্তির খবরে তৃণমূল যুবনেত্রী বলেছেন, ‘ত্রিপুরায় বিজেপি সঙ্গে তৃণমূলের লড়াই চলবে। আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম জয় পাবই। দলীয় নেতৃত্ব আমার পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।‘ যুব তৃণমূল নেত্রীর জামিনের পর ট্যুইট করেন দলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি লেখেন, ‘জামিন পেলেন সায়নী ঘোষ। আদালতকে ধন্যবাদ। ভিত্তিহীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার আইনি জবাব।‘
এদিকে, সোমবার বিকেলে সায়নী ঘোষের গ্রেফতারি প্রসঙ্গ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর কাছে তোলেন তৃণমূলের সাংসদদের প্রতিনিধি দল। এদিন সকাল থেকেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ চেয়ে মন্ত্রকের সামনে অবস্থান করেন তাঁরা। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সোমবার বিকেলে সাফল্য পেলেন তৃণমূল সাংসদরা। এদিন বিকেল ৪টের কিছু পরে মন্ত্রকের সামনে অবস্থানরত তৃণমূল সাংসদদের সঙ্গে দেখা করেন অমিত শাহ। মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই ডেকে আনেন তৃণমূল সাংসদদের। সেই সাক্ষাতেই ত্রিপুরার অশান্তি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সামনে একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দেন ডেরেক, কল্যাণ, সৌগতরা। বিজেপি শাসিত সেই রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়েও সরব হয়েছিলেন তাঁরা।
তৃণমূল সাংসদদের অভিযোগ শুনে খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। এমনটাই ঘাসফুল শিবির সূত্রে খবর। তিনি তৃণমূল সাংসদদের বলেছেন, ‘আপনাদের কথা শুনলাম এবার ত্রিপুরা সরকারের সঙ্গে কথা বলে আইনশৃঙ্খলা ব্যাপারে অবগত হয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেব।‘ শ্রীরামপুরের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘আমরা সায়নী ঘোষের গ্রেফতারি নিয়েও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। জমা দিয়েছি স্মারকলিপি।‘ অপর এক সাংসদ সৌগত রায় জানান, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ত্রিপুরায় আর সন্ত্রাস হবে না।‘
এদিকে, আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠক করে বিপ্লব দেবের সরকারকে কড়া চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কা করে আগরতলায় অভিষেকের পদযাত্রার অনুমতি দেয়নি বিপ্লব দেবের সরকার। এই বিষয়টিকে ঢাল করেই এদিন সাংবাদিক বৈঠকে অভিষেকের তোপ, ‘আজ ২২ তারিখ, আইনশৃঙ্খলার কারণ দেখিয়ে পদযাত্রার অনুমতি দেওয়া হল না। তবে ২৫ তারিখ অবাধ ভোট হবে কী করে।’ সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আগরতলা কর্পোরেশনে বিজেপি খাতাই খুলতে পারবে না বলে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন অভিষেক। এছাড়াও সায়নী গ্রেফতার, ত্রিপুরায় দলের উপর ‘হামলা’-সহ একাধিক বিষয় তুলে এদিন বিপ্লব দেবের সরকারকে নিশানা করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন ঠিক কী বলেছেন অভিষেক? একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
*ত্রিপুরায় নৈরাজ্যের পরিবেশ, বিরোধীদের সভার অনুমতি দেওয়া হয় না।
*হাসপাতালের ভিতরে গুন্ডা ঢুকে যায়। রাজনৈতিক দল, সংবাদমাধ্যমর উপর আক্রমণ।
*দমন-পীড়নের ঘটনায় রোজ রেকর্ড ভাঙছে বিজেপি।
*ত্রিপুরায় একদিনে থানায় দু’বার হামলা। আইনশৃঙ্খলার রক্ষাকারীদের এই অবস্থা হলে বাকিদের নিরাপত্তা কোথায়?
*থানার ভিতরে ঢুকে আক্রমণ। নীরব দর্শকের ভূমিকায় পুলিশ। কারও মাথা, কারও কোমরে আঘাত, মিডিয়াকেও ছাড়া হয়নি।
*মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের ইন্ধনে হেলমেট পরে গুন্ডাবাহিনীর হামলা। পুলিশের সামনে থানার ভিতরে আক্রমণ।
*বিজেপি নেতাদের খুশি করার চেষ্টা করছে পুলিশ। ত্রিপুরা পুলিশকে বলব, আপনারা কর্তব্য পালন করুন।
*যা ভাবমূর্তি তৈরি করা হচ্ছে তাতে ৫০ বছর পিছিয়ে গেছে ত্রিপুরা। বিরোধীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
*সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমনানার মামলা করেছি। কাল শুনানি।
*বিপ্লব দেবের ইন্ধনে দুয়ারে গুন্ডা। পায়ের তলার মাটি সরে গেছে। নির্লজ্জ হয়ে গেছেন বিপ্লব দেব।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন