মোহনবাগান: ৪ (সাহাল, পেত্রাতোস-২, লিস্টন)
ওড়িশা: ০
ইস্টবেঙ্গলের কোচ হতে রাজি হননি। অন্যতম কারণই ছিল ওড়িশার হেড স্যার হলে জুটবে এএফসিতে কোচিং করানোর সুযোগ। সের্জিও লোবেরার সেই স্বপ্ন দুঃস্বপ্ন করে তুলল মোহনবাগান। ইস্টবেঙ্গলকে প্রত্যাখান করার বদলা যেন নিল মোহনবাগান। ভুবনেশ্বরের প্রতিপক্ষের ডেরায় গিয়ে ৪-০ গোলে কলিঙ্গ রাজ্যের দলকে লজ্জার রাত উপহার দিল মেরিনার্সরা।
ডুরান্ড চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর প্ৰথমবার হেভিওয়েট মেরিনার্সরা মাঠে নেমেছিল। আইএসএল-এ নামার আগে এএফসির মূলপর্বের প্ৰথম ম্যাচে খেলতে নেমেছিল সবুজ মেরুন তারকারা। লোবেরার ওড়িশার বিপক্ষে কেমন পারফর্ম করে হুয়ান ফেরান্দো বাহিনী, সেদিকে নজর ছিল। সেই পরীক্ষায় সসম্মানে উত্তীর্ণ মোহনবাগান।
ওড়িশার জার্সিতে বাগানকে দেখিয়ে দেওয়ার লড়াই ছিল রয় কৃষ্ণ এবং অমরিন্দর সিংয়ের। দুজনেই পুরোনো দলের বিরুদ্ধে খাপ খুলতে পারলেন না। অমরিন্দর প্রথমার্ধে ক্লিনশিট রাখতে সফল হলেও, বিরতির পর গোলের মালা পরলেন। সাহাল সবুজ মেরুন জার্সিতে কেরিয়ারের প্ৰথম গোল করে গেলেন। পেত্রাতোস জোড়া গোলে নিজের স্বপ্নের ফর্ম অব্যাহত রাখলেন। একই সঙ্গে এএফসি কাপের সঙ্গে নিজের 'প্রেমকাহিনী' জারি রাখলেন লিস্টন কোলাসো। পরিবর্ত হিসাবে নেমে দলের জার্সিতে গোল করলেন।
অন্যদিকে, রয় কৃষ্ণ ওড়িশার জার্সিতে প্ৰথমবার প্রিয় দলের বিপক্ষে নেমেছিলেন। তবে পুরোনো ফর্মের ঝলকও দেখাতে পারলেন না। হেক্টর ইউৎসে, হ্যামিলরা বোতলবন্দি করে দিলেন তাঁকে।
ম্যাচে বাঁশি বাজার পর থেকেই বাগান আক্রমণের ঢেউ তুলে দিয়েছিল ওড়িশা অর্ধে। উইং প্লেতে বাজিমাত করতে চাইছিলেন বাগান । শুভাশিস-বুমোস, কখনও শুভাশিস-পেত্রাতোস-মনবীর লিঙ্ক আপ কাঁপিয়ে দিচ্ছিল ওড়িশার রক্ষণ। প্রতি আক্রমণ অস্ত্র ছিল লোবেরার। তবে দাপটে খেললেও গোলমুখ খুঁজে পায়নি বাগান।
তবে বিরতির ঠিক আগেই ছন্দপতন। হুগো বুমোসকে দ্বিতীয়বারের মত ফাউল করে সেকেন্ড ইয়েলো কার্ড দেখেন মুরতাদা ফল। এতেই শেষ। ১০ জন হয়ে যাওয়া ওড়িশার পক্ষে ফুটন্ত বাগানকে সামলানো সম্ভব ছিল না। তা হয়-ও নি।
আগাম বিপদ বুঝতে পেরেই ওড়িশার স্প্যানিশ বস বিরতিতে মরিসিও এবং সাকামতোকে তুলে ডিফেন্সিভ ব্লকার মইরাংথেম এবং উইঙ্গার রুয়েটফেলাকে নামিয়ে দেন। তবে গোলের ঝড় আটকানো সম্ভব হয়নি। বিরতির পর বাঁশি বাজার পরেই দশ জনের ওড়িশা গোল হজম করে। বুমোস আক্রমণের সূচনা করেন। তারপর বক্সের মধ্যে দারুণ ফিনিশ করেন সাহাল। আক্রমণে গতি বাড়াতে সাদিকুকে তুলে বাগান বস নামিয়ে দেন জেসন কামিন্সকে।
এরপর সময় যত গড়িয়েছে, ততই গোলের পর গোল হজম করেছেন লোবেরা। টানা আক্রমণের স্রোতে বাগানকে দ্বিতীয় গোল এনে দেন পেত্রাতোস। সাহালের শট জালে জড়াতে ব্যর্থ হলেও রিবাউন্ড থেকে গোল করে যান অজি ফরোয়ার্ড। বাগানের হয়ে ৩-০ করেন লিস্টন। পরিবর্ত হিসাবে মাঠে নেমে মাত্র ৬ মিনিটের মাথায় মনবীরের ক্রস হেডে জালে জড়িয়ে দেন তারকা। ৮২ মিনিটে পেত্রাতোস নিজের দ্বিতীয় গোল করে যান চিপ করে অমরিন্দরের মাথার ওপর দিয়ে দারুণ ফিনিশ করে।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, আনোয়ার আলি, ব্রেন্ডন হ্যামিল, শুভাশিস বোস, হেক্টর ইউৎসে, অনিরুদ্ধ থাপা, সাহাল আব্দুল সামাদ, হুগো বুমোস, আর্মান্দো সাদিকু, দিমিত্রি পেত্রাতোস, মনবীর সিং