মোহনবাগান: ৩ (জেসন কামিন্স, আর্মান্দো সাদিকু, মিলাদ শেখ-আত্মঘাতী)
আবাহনী ঢাকা: ১ (কর্ণেলিয়াস)
ভাড়াটে ফুটবলার নিয়ে এসেও সুবিধা করতে পারল না আবাহনী। যুবভারতীতে সবুজ মেরুন ঝরে তছনছ হয়ে গেল বাংলাদেশের দলটি। পিছিয়ে পড়েও আবাহনীর বিপক্ষে ৩-১ জয় ছিনিয়ে নিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। দ্বিতীয়ার্ধে মাত্র তিন মিনিটের ঝড়েই কুপোকাত আবাহনী। জয়ের সঙ্গেসঙ্গেই মোহনবাগান সাউথ জোনের গ্রুপ পর্বে কোয়ালিফাই করে ফেলল।
চার বিদেশিকে নিয়ে দল সাজিয়েছিলেন বাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দো। চমকে দিয়ে আনোয়ার আলির সঙ্গে জুটি বাঁধতে স্প্যানিশ কোচ মঙ্গলবারই নামিয়ে দেন স্বদেশীয় হেক্টর ইউৎসেকে। ব্রেন্ডন হ্যামিলকে বাইরে রেখে। মাত্র কয়েকদিন আগে কলকাতায় এসেছেন। পুরোপুরি মানিয়ে নেওয়ার আগেই হেক্টরকে নামিয়ে চমক দেন বাগান বস।
গতবারের কোয়ালিফাইং রাউন্ডেরই রি-ম্যাচ ছিল দুই দলের। সেই ম্যাচে ১-৩ ব্যবধানেই হেরেছিল আবাহনী। সেই হারের প্রতিশোধ নিয়েই ধার করা বিদেশিদের নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল ওপার বাংলার ক্লাবটি। আর ম্যাচ শুরু থেকেই সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিচ্ছিল আবাহনী।
১৭ মিনিটেই বিশাল কাইথের ক্ষমার অযোগ্য ভুলে লিড নিয়ে নিয়েছিল আবাহনী। সহজ বল গ্রিপ করার সময় হিসাবে গড়বড় করে ফেলেন কাইথ। সুযোগসন্ধানী কর্ণেলিয়াস গোলে বল জড়াতে বিন্দুমাত্র সময় নেননি। গোল হজম করে মোহনবাগান নতুন উদ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। বারবার আবাহনী অর্ধে আক্রমণ শানাচ্ছিলেন হুগো বুমোস, লিস্টন কোলাসোরা। ২৮ মিনিটে বুমোসকে বক্সের মধ্যে ফাউল করলেও রেফারি পেনাল্টির পথে হাঁটেননি।
বারবার সুযোগ তৈরি করলেও ফিনিশিংটাই হচ্ছিল না। পেনাল্টির জন্য অবশ্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি মোহনবাগানকে। ৩৫ মিনিটে লিস্টন কোলাসোকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন আবাহনী ডিফেন্ডার। সেই স্পট কিক থেকেই গোল করে যান জেসন কামিন্স। এই নিয়ে টানা দুই ম্যাচে দুই গোল হয়ে গেল অজি-গোলশিকারির।
মোহনবাগান প্রথমার্ধে বল পজেশনে এগিয়ে থাকলেও মারিও লেমোসের আবাহনী প্রতি আক্রমণ ভিত্তিক স্ট্র্যাটেজিতে পরীক্ষা নিচ্ছিল সবুজ মেরুন রক্ষণকে।
বিরতির পর আরও অক্সিজেন নিয়ে ঝাঁঝ বাড়িয়েছিল হুয়ান ফেরান্দো ব্রিগেড। কামিন্স-সাহাল-সাদিকুরা বারবার আক্রমণে ফালাফালা করে দিচ্ছিলেন বাংলাদেশি দলটির। ৫৮ মিনিটে বুমোসের জন্য ঠিকানা লেখা পাস বল জালে জড়িয়ে দেন আবাহনী ডিফেন্ডার মিলাদ শেখ। সেই গোলের ধাক্কা হজম করার আগেই ৩-১। ২-১'এ এগিয়ে যাওয়ার মাত্র দু-মিনিট পরে তৃতীয় গোল করে যান আর্মান্দো সাদিকু। বুমোসের দূরপাল্লার শট বাঁচিয়ে দেন আবাহনী গোলকিপার শহিদুল আলম। তবে কর্ণার পেয়ে যায় বাগান। সেই কর্ণার থেকে প্ৰথমে লিস্টনের পা ঘুরে সাদিকুর কাছে পৌঁছতেই গোল করে যান তিনি।
৩ গোল দেওয়ার পর স্প্যানিশ কোচ সাদিকু-কামিন্সকে তুলে নামিয়ে দেন মনবীর, কিয়ান নাসিরিকে। দুজনে শেষবেলায় আবাহনী রক্ষণে নাভিশ্বাস তুলে দিলেও গোলের ব্যবধান আর বাড়েনি।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, আশিস রাই, আনোয়ার আলি, হেক্টর ইউৎসে, শুভাশিস বোস, অনিরুদ্ধ থাপা, সাহাল আব্দুল সামাদ, লিস্টন কোলাসো, হুগো বুমোস, জেসন কামিন্স, আর্মান্দো সাদিকু
আবাহনী ঢাকা: শহিদুল আলম, সুশান্ত ত্রিপুরা, রিদয়, কর্ণেলিয়াস স্টুয়ার্ট, মুজাফফারভ, ইউসেফ মহম্মদ, ডেভিড ইফেগ, আসাদুজ্জামান বাবলু, এমেকা অগবু, মিলাদ শেখ, রহমত মিঞা