Advertisment

তিনিই নায়ক, তিনিই ভিলেন! কামিন্সের জোড়া অবতারে ধ্বংস মাজিয়া

পেনাল্টি মিস করলেন কামিন্স

author-image
Subhasish Hazra
New Update
Jason-cummings

জোড়া গোলে বাগানকে জেতালেন কামিন্স (মোহনবাগান টুইটার)

মোহনবাগান: ২ (কামিন্স)

মাজিয়া এফসি: ১ (ওয়াদা)

Advertisment

হিরো থেকে ভিলেন। তারপর শেষ মুহূর্তে আবার দলের পরিত্রাতা। এমন ভূমিকায় জেসন কামিন্স ধরা দিলেন সোমবার। যুবভারতীতে হাজার হাজার দর্শকদের সামনে। প্ৰথমে গোল করে দলকে এগিয়ে দিয়েছিলেন। তারপর পেনাল্টি মিস করে গ্যালারিতে হা-হুতাশের বন্যা বইয়ে দিলেন। খলনায়ক হয়ে গিয়েছিলেন। তবে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত নিজেই করলেন। ইনজুরি টাইমে খেলা শেষ হওয়ার ঠিক সময়েই দলকে জয়সূচক গোল এনে দিলেন। জেসন কামিন্স স্বমহিমায় ধরা দিলেন ভারতে, হয়ত এই প্ৰথমবার।

মেসি, সুয়ারেজ, নেইমাররা প্রায়শই এরকম করতেন। ২০১৬-য় সেল্টা ভিগোর বিরুদ্ধেই মেসি-সুয়ারেজ যুগলবন্দিতে এরকম গোল দেখেছে বিশ্ব। পেনাল্টি থেকে হালকা টাচে সুয়ারেজ এভাবে মেসিকে বল বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। মেসি দারুণভাবে ফিনিশ করেছিলেন।

মেসি-সুয়ারেজের মতই স্কিল দেখাতে গিয়েছিল কামিন্স-পেত্রাতোস যুগলবন্দি। তবে যুবভারতীতে নকল করার ফল হল ভয়াবহ। নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে গোল তো হলই না। মাজিয়ার বিরুদ্ধে ঠিক চার মিনিটের মধ্যেই গোল হজম করল বাগান।

মালদ্বীপের ক্লাবটি কলকাতা থেকে বাগানকে রুখে দিয়ে পয়েন্ট নিয়ে দেশে ফিরছে। বসুন্ধরাকে প্ৰথম ম্যাচে উড়িয়ে দিয়ে যেভাবে এএফসি কাপ অভিযান শুরু করেছিল মোহনবাগান, তা এক ম্যাচ পরেই মুখ থুবড়ে পড়ল। আইএসএল-এ জোড়া জয়ে অভিযান শুরু করলেও এএফসিতে গ্রুপ পর্বে হতাশ হতে হতে বাঁচল বাগান। ২-১ গোলে কোনওরকমে মুখরক্ষা হল মাজিয়া ম্যাচে।

এরকম অবশ্য হওয়ার কোনও ইঙ্গিতই পাওয়া যায়নি। ম্যাচে দাপট দেখিয়েই শুরু করে সবুজ মেরুন শিবির। প্ৰথম থেকেই ট্রেডমার্ক পাসিং ফুটবলে নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন কামিন্সরা।

গোলের জন্যও বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাগানকে। ২৮ মিনিটেই হুগো বুমোস দুরন্ত পাস বাড়িয়ে ছিলেন কামিন্সকে উদ্দেশ্য করে। সেই পাস ধরেই বাগানকে লিড এনে দিয়েছিলেন স্কটিশ-অজি তারকা।

এরপরে সাদিকু, পেত্রাতোসরা ব্যস্ত রেখেছিল মাজিয়া রক্ষণকে। ৪০ মিনিটে পেনাল্টি আদায় করে বাগান। মাজিয়া ডিফেন্ডার জজিক বক্সের মধ্যে ফাউল করে বসেন সাদিকুকে। সেই পেনাল্টি থেকেই 'কায়দা' করতে গিয়ে বাগান সমর্থকদের চক্ষুশূল হয়ে উঠেছিলেন দুই অজি ফরোয়ার্ড। পরিস্থিতি অন্যদিকে টার্ন নেয় পেনাল্টি মিস করার ঠিক চার মিনিট পর বাগান গোল হজম করায়। মোহনবাগান বক্সের ঠিক ওপর থেকে জোরালো ভলিতে টপ কর্নার দিয়ে গোল করে যান মাজিয়ার ওয়াদা।

৫০ মিনিটে মাজিয়া গোলরক্ষক শরিফ বাগানের কাছে দুশ্চিন্তা নিয়ে আবির্ভূত হয়ে যান জোড়া সেভ করে। মাজিয়া ডিফেন্ডার রেগান মারাত্মক ভুল করে বসেন। তাঁর লুজ ব্যাক পাসেই প্রথমে শট নেন পেত্রাতোস। সেই শট রুখে দেন শরিফ। রিবাউন্ডে বল গিয়ে পড়ে কামিন্সের পায়ে। তাঁর শটও বাঁচিয়ে দেন মাজিয়া গোলকিপার।

এরপর বাকি সময় পুরোটাই মোহনবাগানের নাছোড় আক্রমণ বনাম মাজিয়া রক্ষণের হয়ে দাঁড়ায়। নির্ধারিত সময়ে মাজিয়ার রক্ষণ প্রায় রুখে দিতে সমর্থ হয়েছিল সাহাল, বুমোসদের। ম্যাচ তখন নিশ্চিত ড্রয়ের দিকে এগোচ্ছে। সম্ভাব্য পয়েন্ট নষ্টের আশঙ্কায় বাগান সমর্থকরা শাপ-শাপান্ত করছেন আইএসএল-এর সবথেকে দামি সুপারস্টারকে।

তবে তিনি সমর্থকদের হতাশ করেননি। সংযোজিত সময়ে সাহালের কাছ থেকে দুর্দান্ত থ্রু বল পেয়ে শরিফকে ওয়ান টু ওয়ান পেয়ে যান। সেখান থেকেই নাটমেগ করে মাজিয়া কাস্টডিয়ানকে পরাস্ত করে বাগানে স্বস্তি হাজির করেন। শাপমুক্ত হন নিজেও।

মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, আনোয়ার আলি, ব্রেন্ডন হ্যামিল, আর্মান্দো সাদিকু, হুগো বুমোস, জেসন কামিন্স, দিমিত্রি পেত্রাতোস, গ্লান মার্টিন্স, লিস্টন কোলাসো, হেক্টর ইউৎসে, আশিস রাই

atk-mohun-bagan Mohunbagan Mohun Bagan Super Giants Mohun Bagan Indian Football Kolkata Football
Advertisment