মঙ্গলবার চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে জিততে পারেনি কলকাতা নাইট রাইডার্স। কিন্তু আন্দ্রে রাসেলের বিধ্বংসী ইনিংসের আলোচনা প্রায় সকলেরই মুখে। মারকাটারি এই ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানের সৌজন্যেই কলকাতা ২০৩ রানের টার্গেট দিতে পেরেছিল চেন্নাইকে। ১০ ওভারের শেষে ৮৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছিল কেকেআর। সেখান থেকে ২০ ওভারের পর খেলার স্কোর গিয়ে দাঁড়াল ৬ উইকেট হারিয়ে ২০২। সবটাই সম্ভব হল রাসেলের জন্য।৩৬ বলে ৮৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন তিনি। ১১টি ছয় আর একটি চারেই নিজের ইনিংস সাজালেন রাসেল। আর এসবের মাঝেই চিপকে বেশ কয়েকটি রেকর্ডেও নাম লেখালেন রাসেল।
Advertisment
রাসেলের একটি ১০৫ মিটারের ছক্কায় কিং খানের প্রতিক্রিয়া:
আসুন দেখে নেওয়া যাক তিনি কী করলেন:
Advertisment
১৭- এই সংখ্যক ছয় এসেছে নাইট রাইডার্সের ইনিংসে। চিপকে কোনও আইপিএল ম্যাচে এটাই সর্বোচ্চ ছয়ের রেকর্ড। ১৭-র মধ্যে ১১টি ছয় মেরেছেন রাসেল। ২০১০-এ রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে এই সংখ্যার ছয় এসেছিল চেন্নাইয়ের ইনিংসে। সেবার মুরলী বিজয় ও রাসেলের মতোই ১১টি ছয় মেরেছিলেন।
৮৮- রাসেলের স্কোর, সাত বা তার নিচে ব্যাট করতে নেমে করা এটাই আইপিএল ইতিহাসের সর্বোচ্চ রান। যদিও তিন দিন আগে এই রেকর্ড ছিল আরেক ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান ডোয়েন ব্র্য়াভোর। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে তিনি ৬৮ করেছিলেন।
১১- রাসেলের ছয়ের সংখ্য়া, টি-২০ ইনিংসে ১০০-র নিচে স্কোর করা ক্রিকেটারদের মধ্যে রাসেল ছাড়াও ক্রিস লিন, এভিন লুইস ও রোজ হোয়াইটলে ১১টি করে ছয় মেরেছেন।
পুরো নাম আন্দ্রে ডোয়েন রাসেল, আন্দ্রে রাসেল নামেই বাইশ গজে পরিচিত এই জামাইকান অলরাউন্ডার। সম্প্রতি ক্যারিবিয়ান ঘরানায় রাসেলই সেরা ইউটিলিটি ক্রিকেটার। বিশ্ব ক্রিকেটের অন্য়তম সেরা শক্তিশালী স্ট্রাইকারও তিনি। ২০১৪ থেকেই শাহরুখ খানের টিমের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রাসেল। এবছরও তাঁকে ধরে রেখেছে কেকেআর।
হার্ডহিটার রাসেল গত মরশুমে আইপিএল খেলতে পারেননি। ডোপের দায়ে ক্রিকেট থেকে একটা বছর নির্বাসিত ছিলেন তিনি। ফের আইপিএল-এ প্রত্য়াবর্তন করছেন রাসেল। ২০১৫ ও ২০১৬ মরশুমে নাইটদের জার্সিতে নিজের জাত চিনিয়েছেন। ব্যাটে আগুন জ্বালিয়েই বল হাতে বিষ উগরে দিয়েছিলেন তিনি। এবারও তাঁর থেকে সেরার প্রত্যাশায় রয়েছে কেকেআর-এর ফ্যানেরা। কলকাতার ফ্র্য়াঞ্চাইজিতে রাসেল এখনও পর্যন্ত ২৭টি ম্য়াচ খেলেছেন। তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫১৬ রান। ৩০টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। ১৭৩.৪১-এর দুরন্ত স্ট্রাইক রেট তাঁর।
এক ঝলকে আইপিএল-এ রাসেলের সেরা পারফরম্যান্স:
বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে ২৪ বলে ৩৯
চিন্নস্বামী স্টেডিয়ামে বেঙ্গালুরু ১৮৬ রানের টার্গেট দিয়েছিল কলকাতাকে। রান তাড়া করতে নেমে ১০.১ ওভারেই নাইটরা ৬৯ রানে চার উইকেট হারিয়ে ধুঁকতে থাকে। এরপর ত্রাতার ভূমিকায় উত্তীর্ণ হন রাসেল। ২৪ বলে ৩৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। কেকেআরকে পাঁচ উইকেটে জেতান ম্যাচটায়। চারটি বিশাল ছয় ও একটি চার এসেছিল সেদিন রাসেলের ব্যাট থেকে। এই ম্য়াচে তিনি চার ওভার বল করে ২৪ রান দিয়ে একটি উইকেটও নিয়েছিলেন। বলাই বাহুল্য সে ম্যাচের সেরার পুরস্কারও এসেছিল তাঁর হাতেই।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে দুরন্ত অলরাউন্ড পারফরম্য়ান্স
কলকাতার হয়ে রাসেলের পারফরম্য়ান্স কথা বলেছিল কিংস ইলেভেন পঞ্জাবের বিরুদ্ধে। ব্যাটে-বলে কামাল করেছিলেন এই ক্যারিবিয়ান। ১০ বলে ১৬ রান করেছিলেন তিনি। কেকেআর তিন উইকেট হারিয়ে ১৬৪-তুলেছিল। এই ম্যাচেই তিনি ২০ রান খরচ করে চার উইকেট তুলে নেন। এটাই তাঁর আইপিলএল-এ সেরা বোলিং পরিসংখ্যান। এই ম্যাচটা কেকেআর সাত রানে জিতে গিয়েছিল। সেই ম্যাচে ও ম্যান অফ দ্য ম্য়াচ হন রাসেল।