আর্জেন্টিনা: ১ (লাউতারো মার্টিনেজ)
কলম্বিয়া: ০
Argentina vs Colombia Final, Copa America 2024: কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল লিওনেল আন্দ্রেস মেসিকে। মিয়ামির হার্ড রক স্টেডিয়ামের বিশৃঙ্খলাও এতটা অন্ধকার নামিয়ে আনেনি ফুটবল মহলে যতটা আমদানি করেছিল মেসির দ্বিতীয়ার্ধে কাঁদতে কাঁদতে প্রস্থান।
তবে নাটকীয় জয়ে আর্জেন্টিনার চ্যাম্পিয়ন হওয়া আটকায়নি। ১১২ মিনিটে লাউতারো মার্টিনেজের গোল মেসির যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখে হাসি ফুটিয়ে দিল। ভুলিয়ে দিল পায়ের দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ার অসম্ভব কষ্ট।
মেসি বেরিয়ে গিয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ-ও শেষ হয়েছিল গোলশূন্যভাবে। কলম্বিয়ার রক্ষণ যেন চিনের প্রাচীর। ম্যান সিটির জার্সিতে কাঁপুনি ধরানো হুলিয়ান আলভারেজকে কোচ স্কালোনি তুলে নিয়েছিলেন এক্সট্রা টাইমের ৭ মিনিটের মাথায়।
সেটাই ম্যাচের ফারাক গড়ে দিল। পরিবর্ত হিসাবে নামা লাউতারো মার্টিনেজের পা থেকেই এল আর্জেন্টিনার দ্বিতীয়বার কোপা জয়ের গোল। টুর্নামেন্টে পঞ্চম গোল করে কোপার গোল্ডেন বুট-ও দখল করলেন ইন্টার মিলান ফরোয়ার্ড।
আর্জেন্টিনার রেকর্ড ১৬তম কোপা জয়
২০২০-র কোপা, ২০২২-এর বিশ্বকাপ জয়ের পর আবারও ২০২৪-এর কোপা- এই নিয়ে মেসির আর্জেন্টিনা টানা তিনটে মেজর ট্রফি জিতল। শেষবারের কোপা জয় এসেছিল রিও ডি জেনেইরোয় ব্রাজিলের ঘরের মাঠে সেলেকাওদের হারিয়ে।
৩০ বারের সংস্করণে মোট ১৬বার কোপা জিতে সর্বাধিক কোপা জয়ী দল হিসেবে রবিবার-ই আর্জেন্টিনা পেরিয়ে গেল উরুগুয়েকে।
ঘুচল আক্ষেপ
২০১৪-র বিশ্বকাপ ফাইনালে হারতে হয়েছিল আর্জেন্টিনা। জার্মানির কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার ঠিক দু-বছরের মাথায় আবার-ও নীল-সাদা জার্সিধারীদের ট্রফি জয় হাতছাড়া হয়ে চিলির কাছে হেরে। ২০১৬-র কোপা ফাইনালে টাইব্রেকার মিস করে বসেন স্বয়ং মেসি। যন্ত্রণা সইতে পারেননি। হারের মঞ্চেই অবসরের ঘোষণা করে দিয়েছিলেন।
তারপর কেটে গিয়েছে অনেক প্রহর। সাম্পাওলি, জেরার্ডো মার্টিনো হয়ে কোচের হট সিটে বসেছিলেন লিওনেল স্কালোনি। অবসর ভেঙে মেসি ফিরে আসেন সাম্পাওলি জমানাতেই। তারপর তাঁর শাপমুক্তি স্কালোনির কোচিংয়ে। হতাশার গহবরে নিমজ্জিত থেকে কেরিয়ারে শেষ করছেন দুবার কোপা, একবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে। ক্রীড়া দুনিয়ায় সমস্ত কামব্যাককে পিছনে ঠেলে মেসি উঠে গেলেন অতলান্ত উচ্চতায়।
দর্শক অব্যবস্থা
ম্যাচ নির্ধারিত সময়ের ৮২ মিনিট পরে শুরু হয়েছিল দর্শক অব্যবস্থার কারণে। দর্শকদের চাপে নিরাপত্তা গেট ভেঙে যাওয়াতেই বিপত্তি। স্টেডিয়ামে দক্ষিণ পশ্চিমে কলম্বিয়ার সমর্থকরা সিকিউরিটি গার্ডের ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। তারপর স্টেডিয়ামের নিরাপত্তা কর্মী এবং পুলিশ আধিকারিকদের পেরিয়ে তাঁদের ছুটতে দেখা যায় ভাইরাল ভিডিওয়। অনেক দর্শক আবার ফ্লোরিডার গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন।
মেসির ইনজুরি
ম্যাচের বয়স যখন ৬৪ মিনিট, সেই সময় গোড়ালি মচকে যাওয়ায় কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হয় মেসিকে। তারপর কিংবদন্তিকে দেখা যায় যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখে চোখে জল নিয়ে সাইডলাইনে বসে থাকতে। ফোলা পায়ে একের পর এক স্ট্র্যাপ এবং আইসপ্যাক বাঁধা ছিল।
তার আগে ম্যাচের ৩৬ মিনিটে বলে কিক করতে গিয়ে মেসির গোড়ালি মচকে যায়। তারপর একাধিকবার তাঁকে কাতরাতে দেখা গিয়েছিল। কলম্বিয়ার স্যান্টিয়াগো এরিয়াসের সঙ্গেও তাঁর সংঘর্ষ হয়। শেষমেশ দ্বিতীয়ার্ধে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।
মাঠে না থেকেও তাঁর চ্যাম্পিয়ন হওয়া আটকায়নি।