/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2023/01/wenger-india.jpg)
বিশ্বকাপ ফুটবলে নামার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এবার কোমর বেঁধে দেশের ফুটবলের তৃণমূল স্তরের পরিকাঠামো খোলনলচে বদলে ফেলতে চলেছে সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থা। আর এই পরিকল্পনায় হাত থাকছে স্বয়ং ফিফার ফুটবলের বিশ্বজনীন উন্নয়নের প্রধান আর্সেন ওয়েঙ্গারের। ভারতের প্রাথমিক টার্গেট আপাতত এশিয়ায় পুরুষদের ফুটবলে সেরা দশ এবং মহিলাদের সেরা আটে নিয়ে আসা। শনিবার দিল্লিতে ফেডারেশন নিজস্ব রোডম্যাপ প্রকাশ করে দিল। যেখানে বলা হচ্ছে, ভারতীয় ফুটবল থেকে ফেডারেশনের প্রাপ্ত আয় ২০২৬-এর মধ্যে ৫০০ শতাংশ বাড়ানো হবে।
পুরো পরিকল্পনায় তিনটে স্তরে ভাগ করা হয়েছে-স্বল্পমেয়াদি প্ল্যান ২০২৬-এর, মধ্যম মেয়াদি ২০৩৬-এর এবং দীর্ঘমেয়াদি ২০৪৭-এর কথা মাথায় রেখে।
আরও পড়ুন: এমবাপের দেশেই সর্বসেরার স্বীকৃতি মেসিকে! পঞ্চম ফুটবলার হিসাবে বিরল কীর্তি বিশ্বচ্যাম্পিয়নের
ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে জানিয়েছেন, ফিফার ডেলেভপমেন্টাল টিমের সঙ্গে বেশ কয়েকবার তাঁর কথাবার্তা হয়েছে। জাতীয় গ্রাসরুট স্তরের উন্নয়নের খসড়া তৈরি করতে ওয়েঙ্গারের টিমের কোচেরা পরের মাসেই ভারতে পা রাখছেন। সচিব শাজি প্রভাকরণ জানিয়েছেন, ভারতের এই ফুটবল উন্নয়ন যজ্ঞে রীতিমত বড়সড় ভূমিকা থাকছে ফিফার। ওয়েঙ্গার ইতিমধ্যেই নিজস্ব টিমের কোচেদের ওপর মিশন-ভারতের দায়িত্ব ছকে দিয়েছেন।
কল্যাণ চৌবে-শাজি প্রভাকরণ জমানায় ভারতীয় ফুটবল যে বিশ্ব ফুটবলে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে চলেছে, তা বোঝা গিয়েছিল ২০২৭-এ এএফসি এশিয়ান কাপের বিডিং প্রসেস থেকে নিজেদের নাম তুলে নেওয়ায়। ফেডারেশনের নিজস্ব ভাবনা আপাতত হাইপ্রোফাইল ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন করার বদলে যুব পর্যায়ের বিশ্বজনীন ইভেন্টে নিজস্ব দক্ষতায় কোয়ালিফাই করা। এর আগে ২০১৭-য় যুব ফুটবল বিশ্বকাপ হোক বা ২০২২-এ যুব মহিলা ফুটবলের আয়োজন- জোড়া হাইপ্রোফাইল ফিফা ইভেন্ট আয়োজন করার পরেও ভারতীয় ফুটবল যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে গিয়েছে। তাই এবার ফেডারেশন নিজেদের অগ্রাধিকার বদলে ফেলছে। বদল আনা হচ্ছে পরিকল্পনার স্ট্যান্স-এ।
An honest journey towards incredible football in incredible 🇮🇳 India.
We are delighted to share #IndianFootball Strategic Roadmap “Vision 2047”.
Each of us who believe in Indian football will be part of that one team - one goal, one mission and one vision ➡️ #vision2047 https://t.co/OU6Y3jcsg9— Shaji Prabhakaran (@Shaji4Football) January 7, 2023
জানা যাচ্ছে, একদম তৃনমূল স্তর থেকে সিনিয়র ফুটবল দল পর্যন্ত একই স্ট্র্যাটেজি ফলো করতে হবে। জেলা ফুটবলের স্তরেও যে দর্শন মেনে খেলা হবে, সেই দর্শনই বহাল থাকবে জাতীয় ফুটবল দলের ক্ষেত্রেও। একইভাবে মহিলা ফুটবল ফেডারেশনের অন্যতম অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ছে। শুধুমাত্র গ্রাসরুট লেভেলেই উন্নয়ন নয়, মহিলা ফুটবলার বেতনও বাড়ানো হবে পুরুষ ফুটবলারদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে। বলা হচ্ছে, মহিলা ফুটবলে জাতীয় স্তরে চারটে লিগ করা হবে। ২০২৬-এর মধ্যেই প্ৰথম ডিভিশন হবে ১০ দলকে নিয়ে। দ্বিতীয় ডিভিশনে থাকবে ৮ দল। দশকের পর দশক ধরে রাজ্য ফুটবল সংস্থা গুলি অবহেলিত রয়ে গিয়েছে। নতুন প্ল্যানিংয়ে রাজ্য ফুটবল সংস্থাগুলিকে উন্নয়ন-যজ্ঞে সামিল করার কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিয়ে না করেই বান্ধবীর সঙ্গে সহবাস! সৌদিতে কড়া শাস্তিতে পড়তে পারেন রোনাল্ডো
ভারতীয় ফুটবলের বর্তমান মার্কেটিং পার্টনার এফডিএসএল গ্রুপ। যারা আইএসএল আয়োজন করছে। ফেডারেশনের বক্তব্য অনুযায়ী, বার্ষিক মোট লভ্যাংশের ৬১ শতাংশই আসে মার্কেটিং থেকে। মার্কেটিং থেকে বোর্ডের আয়ের পরিমাণ ৮০ কোটি টাকা। ২০২৬-এর মধ্যে বোর্ডের আয় ৫০০ শতাংশ বাড়ানোর প্রাথমিক টার্গেট রাখা হয়েছে।
বলা হচ্ছে, বিভিন্ন দেশে যেমন ফুটবল হাব রয়েছে নির্দিষ্ট এলাকাকে কেন্দ্র করে, সেরকম ভারতেও বানানো হবে। ইংল্যান্ডে সেন্ট জর্জেস পার্কের মত কলকাতায় উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। ২০২৬-এর মধ্যে ভারতে ফিফা মানের ৩০ টি স্টেডিয়াম এবং ২০৪৭-এর মধ্যে ১২টি স্মার্ট স্টেডিয়াম গড়ার লক্ষ্যমাত্রাও নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পৃথিবী ছড়িয়ে মহাকাশেও এবার মার্টিনেজ! বিরাট কীর্তিতে সেলাম আর্জেন্টিনার গোল্ডেন গ্লাভসজয়ী কিপারকে
বর্তমানে এশিয়ার সেরা দশ দল হল জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, চিন, অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান, সৌদি আরব, ইরান, কাতার, ইরাক, আরব আমিরশাহি। ভারত এশিয়াতেই ১৯ নম্বরে রয়েছে। শীর্ষ পর্যায়ের এই দলগুলির সঙ্গে মানের ফারাক ঘোচানোর জন্য ভারত আপাতত যুব বিশ্বকাপে কোয়ালিফিকেশনে জোর দিতে চলেছে। এশিয়ান দেশগুলির মধ্যে পুরুষদের ফুটবলে সেরা দশ এবং মহিলাদের ফুটবলে প্ৰথম আটে ঢোকার টার্গেট নেওয়া হচ্ছে।