আইপিএলের পর এবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মঞ্চেও গম্ভীর বনাম কোহলি। শনিবার গম্ভীর নাম না করেই বলে দিলেন, প্রতিপক্ষ দলের সঙ্গে মোটেই খুব বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ কাম্য নয়।
এমন সময়ে গম্ভীর এমন মন্তব্য করলেন যে সেই সময়েই কোহলির পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে প্রীতি রীতিমত চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। অতীতে পাক ক্রিকেটারদের মাঠে আলিঙ্গন করতে দেখা গিয়েছে। এশিয়া কাপে সদ্য ভারত-পাক ম্যাচেও কোহলি অনুশীলনে পাক ক্রিকেটারদের সঙ্গে খোশগল্প করেছেন। বৃষ্টিবিঘ্নিত শনিবাসরীয় ম্যাচেও কোহলিকে দেখা গিয়েছে গ্যালারিতে পাক ক্রিকেটার বেষ্টিত হয়ে রীতিমত আড্ডা দিচ্ছেন।
এমন প্রেক্ষিতে গম্ভীরের মন্তব্য বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ। ২০১১-য় ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী স্কোয়াডের তারকা গম্ভীর এশিয়া কাপে ধারাভাষ্যকার হিসাবে যুক্ত রয়েছেন। তিনি সরাসরি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটকে দায়ী করে জানিয়েছেন, নতুন দুনিয়ায় মাঠে আর সেরকম আগ্রাসন দেখা যায় না।
স্টার স্পোর্টসে ইনিংসের মাঝে বিরতিতে গম্ভীর বলে দেন, "জাতীয় দলের হয়ে খেলার সময় মাঠে নামলে সমস্ত বন্ধুত্ব বাউন্ডারি লাইনের ওপারে ফেলে আসতে হয়। ম্যাচে মোকাবিলা করা আসল। বন্ধুত্ব বাইরে ফেলে আসতে হবে। দুই দলের ক্রিকেটারদের চোখেই আগ্রাসন থাকা জরুরি। ছয়-সাত ঘন্টা মাঠে খেলার পর যত খুশি বন্ধুত্ব করো! তবে এই সময়টা জরুরি। কারণ সেই সময় স্রেফ তুমি নিজের জন্য খেলছ না, গোটা দেশের এক বিলিয়ন মানুষের হয়ে তুমি প্রতিনিধিত্ব করছ!"
"এখনকার দিনে দেখা যাচ্ছে দুই দলের ক্রিকেটাররা একে অন্যের পিঠে চাপড় মারছে। ম্যাচ চলাকালীন করমর্দন করছে। দেখে মনে হবে যেন কোনও ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলা হচ্ছে। কয়েক বছর আগেও এমন চিত্র দেখা যেত না।"
২০১০ এশিয়া কাপে পাক উইকটকিপার কামরান আকমলের সঙ্গে লেগে গিয়েছিল গম্ভীরের। সেই সময় গম্ভীরকে শান্ত করেন ক্যাপ্টেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। সেই ম্যাচে পাকিস্তান প্ৰথমে ব্যাট করে স্কোরবোর্ডে ২৬৭ তুলেছিল। সালমান বাটের (৭৪) সঙ্গেই রানের দেখা পেয়েছিলেন কামরান আকমল (৫১)। ভারত রান চেজ করতে নামার পর পাক ক্রিকেটাররা স্লেজিংয়ের আশ্রয় নেয়। আকমল গম্ভীরকে উত্যক্ত করার প্রয়াস চালিয়ে যান। তারপরেই মাঠের মধ্যে গম্ভীর ধুন্ধুমার পরিস্থিতি বাঁধিয়ে দেন। সেই ম্যাচে গম্ভীর ৮৩ করেন। আর হাফসেঞ্চুরিয়ন ধোনির সাহায্যে গম্ভীর শেষ বলে ভারতকে ৩ উইকেটে জয় এনে দেন।
গম্ভীর জানাচ্ছেন, কামরান আকমলের সঙ্গে তাঁর লেগে গেলেও দুজনের মধ্যে সম্পর্কে কোনও অবনতি হয়নি। বাঁ-হাতি তারকা জানান, "আমরা ভালো বন্ধু। ঘটনা হল, আমরা পরস্পর ব্যাট বিনিময় করেছিলাম। কামরানের দেওয়া ব্যাট দিয়ে আমি গোটা এক সপ্তাহ ব্যাট করেছিলাম। সম্প্রতি কামরানের সঙ্গে একঘন্টা ধরে কথাও হয়।"
গম্ভীরের যুক্তি, মাঠে পরিমিত স্লেজিং খারাপ নয়। "স্লেজিং করা যেতেই পারে। তবে তা ব্যক্তিগত পর্যায়ে না নেমে এলেই ভালো। নির্ধারিত বাউন্ডারির মধ্যে তা হওয়া বাঞ্ছনীয়। একদম ব্যক্তিগত পর্যায়ে নেমে এসে কারোর পরিবারের সদস্যদের টানা উচিত নয়। তির্যক মন্তব্য তো চলতেই পারে। অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রুপ হবেই।" বলছেন সুপারস্টার।