ভারত: ২১৩/১০
শ্রীলঙ্কা: ১৭২/১০
প্রথমে বল হাতে। তারপর ব্যাট হাতে ভারতের নাভিশ্বাস তুলে দিয়েছিলেন। তবে ২০ বছরের তরুণ ওয়ালালাগের বিক্রম সরিয়ে শেষমেশ জিতল ভারত। যুব বিশ্বকাপে নজরকাড়া প্রতিভার ঝলকানিতে ভারতের এশিয়া কাপের ফাইনালে ওঠা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছিল।
যখন ক্রিজে নেমেছিলেন, ছয় উইকেট হারিয়ে ধুঁকছে লঙ্কানরা। টার্গেট তখনও একশোর ওপর বেশি। সেই সময়েই সিনিয়র ধনঞ্জয় ডিসিলভার সঙ্গে হাফসেঞ্চুরি পার্টনারশিপে কার্যত ভারতের জেতা ম্যাচ একা হাতে ছিনিয়ে নিচ্ছিলেন। তবে রবীন্দ্র জাদেজা ডিসিলভাকে ফেরানোর পরেই খেল খতম।
টানা তিনদিনে দুটো ম্যাচ। আর জোড়া ম্যাচ জিতেই এশিয়া কাপের ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। একদিন আগেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডের ইতিহাসে অন্যতম বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছিল। ২৪ ঘন্টা পরেই ভারত শ্রীলঙ্কাকে নিজেদের মাঠে হারাল ৪১ রানে। প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে স্পিন সহায়ক পিচে ধসে গিয়েছিল ভারত।
২১৩ রান ডিফেন্ড করতে অবশ্য সমস্যা হয়নি ভারতের। প্ৰথমে বুমরা, সিরাজ ম্যাচের রিংটোন সেট করে দেন। নিশঙ্কা, দ্বিমুথ করুণারত্নে, কুশল মেন্ডিসকে পাওয়ার প্লে-র মধ্যে ফিরিয়ে দেন দুই পেসার। তারপর চেনা ছকে মাঝের ওভারে ঘূর্ণির জালে জড়িয়ে দেন জাদেজা, কুলদীপরা।
পাওয়ার প্লে-র মধ্যে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর শ্রীলঙ্কা ৪৩ রানের পার্টনারশিপে ম্যাচে ফেরে সমরাবিক্রমা, আশালঙ্কার জুটিতে ভর করে। তবে কুলদীপ ১৮তম ওভারে সমরাবিক্রমাকে ফেরানোর পর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি।
৬ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর লঙ্কানরা তীব্রভাবে ম্যাচে ফিরেছিল। নবাগত ওয়ালালাগে (৪২) এবং ধনঞ্জয় ডিসিলভার (৪১) ব্যাটে ভর করে। দুজনে সপ্তম উইকেটে ৬৩ রান যোগ করে ভারতকে প্রায় হারিয়ে দিয়েছিলেন। তবে স্পিনাররা এই অঘটন ঘটাতে দেননি।
আগের ম্যাচের মতই ঝলমলে বোলিং করে গেলেন কুলদীপ। ৪ উইকেট তাঁর নামের পাশে। বুমরা এবং জাদেজার সংগ্রহে দুটো করে উইকেট।
তার আগে ভারতকে প্রথমে বিধ্বস্ত করে দেন শ্রীলঙ্কান স্পিনার দুনিথ ওয়েলালাগে। সুপার ফোরের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে লঙ্কান নয়া মিস্ট্রি স্পিনার একাই ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন।
টানা তিন দিন খেলতে নামা ভারতীয় ব্যাটারদের ওপর দিয়ে স্পিনের ঘূর্ণি চালিয়ে দেন ২০ বছরের স্পিনার। দুই ওপেনার শুভমান গিল, রোহিত শর্মা তো বটেই মিডল অর্ডারের বিরাট কোহলি, কেএল রাহুল, হার্দিক পান্ডিয়াও তাঁর শিকার।
গত বছর পাল্লাকেলেতে অভিষেক ঘটিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। তারপর ১২ ওয়ানডে খেলে ১৮ উইকেট দখল করে ফেললেন। সুপার ফোরে বাংলাদেশের বিপক্ষেও এক উইকেট দখল করেছিলেন তিনি। এর মধ্যে সেরা বোলিং করে গেলেন ভারতের বিপক্ষে, এদিন, মঙ্গলবারই। ওয়েলালাগেকে বল হাতে যোগ্য সহায়তা করে গেলেন চরিত আশালঙ্কা। তিনিও অন্যপ্রান্তে দখল করলেন ৪ উইকেট। দুই স্পিনার মিলেই ভারতীয় ইনিংসের ৯ উইকেট তুলে নেন।
ভারত টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। পাক ম্যাচের একাদশ থেকে একটিই বদল করে টিম ইন্ডিয়া। স্পিন বিভাগ মজবুত করার জন্য শার্দূলকে বসিয়ে অক্ষর প্যাটেলকে খেলানো হয়।
শ্রেয়স আইয়ার এদিনও মাঠের নামেননি। সবমিলিয়ে বিশ্বকাপের আগে শ্রেয়সের ইনজুরি নিয়ে প্রশ্ন রয়েই গেল।