বাংলাদেশ: ২৬৫/৮
ভারত: ২৫৯/১০
শুভমান গিলের দুর্ধর্ষ সেঞ্চুরি এল। শেষে অক্ষর প্যাটেলের বিগ হিটিংও দেখা গেল। তবে বাংলাদেশের কাছে হেরেই ফাইনালে খেলতে নামছে ভারত। ফাইনালের লাইন আপ আগেই চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। নিয়ম রক্ষার ম্যাচে খেলতে নেমেছিল ভারত-বাংলাদেশ। সেই দ্বৈরথই যে এভাবে থ্রিলারের আমদানি করে যাবে, কে জানত! সাকিবদের ২৬৬ রানের টার্গেট তাড়া করে ভারত থামল ২৫৯ রানে।
শেষ ওভারে জয়ের জন্য দরকার ছিল ১২ রান। হাতে ১ উইকেট। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণকে নন-স্ট্রাইকিং এন্ডে রেখে ম্যাচ ফিনিশ করার দায়িত্ব ছিল মহম্মদ শামির কাছে। প্ৰথম তিনটে বল ডট হওয়ার পর শামি চতুর্থ বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অসম্ভব জয়ের সম্ভবনা উস্কেও দেন। তবে পঞ্চম বল মরিয়া হয়ে দু-রান নিতে গিয়েই রান আউট এবং ভারতের ইনিংসের পরিসমাপ্তি এক বল বাকি থাকতে।
রান চেজ করতে নেমে প্ৰথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই নবাগত তানজিম সাকিবের সুইং পড়তে না পেরে কভারে ক্যাচ তুলে দেন। কিছুক্ষণ পর অভিষেককারী তিলক ভার্মাও বলের জাজমেন্ট ভুল করে বোল্ড হয়ে যান। ঘাতক সেই তানজিম সাকিব।
তৃতীয় উইকেটে গিল-কে এল রাহুল হাফসেঞ্চুরি পার্টনারশিপ করে টানছিল। তবে মেহেদি হাসান ফিরিয়ে দেন পাক ম্যাচের নায়ককে। এরপর যত সময় গড়িয়েছে ভারত নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়ে বসে লক্ষ্য কঠিন থেকে কঠিনতর করে তুলেছে।
অন্যপ্রান্তে উইকেট পতন অব্যাহত থাকলেও শুভমান গিল ক্রিজে টিকেছিলেন। দুর্ধর্ষ সেঞ্চুরি করে দলকে ফিনিশ করার লক্ষ্যে এগোচ্ছিলেন। মেহেদি হাসানের ফ্লাইটে ঠকে গিয়ে লং অফে ক্যাচ তুলে বিদায় নেন। গিল (১৩৩ বলে ১২১) ফেরার পর ম্যাচ শেষ করার দায়িত্ব পুরোটাই পড়ে অক্ষর প্যাটেলের ওপর। তিনি কার্যত ম্যাচ ফিনিশও করে এনেছিলেন। ৪৭ তম ওভারে মিরাজের ওভার থেকে ১৪ রান তুলে লক্ষ্য অনেকটাই সহজ করে আনেন।
তবে ৪৮ তম ওভারে মুস্তাফিজুরের স্লোয়ারে ক্যাচ তুলে ফিরে যেতেই কার্যত ম্যাচের ভাগ্য চূড়ান্ত হয়ে যায়।
তার আগে প্রথমে টসে জিতে বাংলাদেশকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। প্ৰথম দুই ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করেছিল ইন্ডিয়া। রান চেজ করতে নেমে কীরকম করে দল, তারই মহড়া সেরে ফেলতে চেয়েছিলেন ক্যাপ্টেন রোহিত।
আর স্লো পিচে বাংলাদেশ যে আড়াইশোর ওপর তুলল, তাও আবার অক্ষর-শার্দূলদের সামলে তাঁর পুরোটাই কৃতিত্ব প্রাপ্য ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান এবং লোয়ার অর্ডারের।
এশিয়া কাপে দলকে ফেলে শো-রুম উদ্বোধন করতে বাংলাদেশ চলে এসেছিলেন। তা নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল। তবে পদ্মাপাড়ের তারকা অলরাউন্ডার দেখিয়ে দিলেন তিনি বিগ ম্যাচ প্লেয়ার। ভারতের বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে জ্বলে উঠলেন।
বাংলাদেশ একসময় ২৮/৩ হয়ে গিয়ে প্রবল গাড্ডায় পড়ে গিয়েছিল। শার্দূল, শামিরা সুযোগ পেয়েই জ্বলে উঠেছিলেন। আনামুল হক এবং হাসানকে আউট করেন শার্দুল। নিজের পরপর দু-ওভারে। লিটনকে ফেরান শামি।
প্রবল বিপদেই বাংলাদেশের হয়ে ত্রাতা হয়ে আবির্ভূত হন ক্যাপ্টেন। মেহেদি হাসান আউট হয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ৫৯/৪ হয়ে যায়। তবে এরপরেই তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে ১০১ রানের পার্টনারশিপে দলের পতন রোধ করেন। সাকিবকে (৮৫ বলে ৮০) আউট করে অবশেষে ব্রেকথ্রু দেন শার্দূল। তৌহিদ হৃদয়ও হাফসেঞ্চুরি করে যান। শেষদিকে নাসুম আহমেদ (৪৪), মেহেদি হাসান (২৯), তানজিম সাকিব (১৪) মিলে দলগতভাবে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা ঢেকে দলকে আড়াইশোর গন্ডি পার করিয়ে দেন।
শার্দূল ঠাকুর ৩ উইকেট নিলেও খরুচে হয়ে দাঁড়ান। ৬৫ রান খরচ করেন তিনি। শামি ৩২ রানের বিনিময়ে নেন ২ উইকেট।