বৃষ্টির কারণে ম্যাচের শুরু সামান্য বিলম্ব হয়েছিল। গোটা মাস ধরেই কলম্বোর আকাশে মেঘের ঘনঘটা। এমনকি ফাইনালে বল গড়ানোর সময়ও আকাশে ছিল মেঘ। আর মেঘকে সাক্ষী রেখেই প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে মাতাল করা বোলিংয়ের নিদর্শন তুলে ধরলেন মহম্মদ সিরাজ। ওয়ানডেতে দ্রুততম পাঁচ উইকেটের শিকার আপাতত যুগ্মভাবে তিনি।
প্রথম ওভারে উইকেট পাননি। তবে দ্বিতীয় ওভারেই তান্ডব শুরু করলেন মিঞা। সেই ওভারে ছয় বলের মধ্যে ৪ উইকেট তুলে নিলেন। হ্যাটট্রিকের সম্ভবনা থাকলেও হয়নি। ওভার-হ্যাটট্রিক করেই থামলেন না সিরাজ। আরও দুটো উইকেট দখল করে নিজের নামের পাশে হাফডজন উইকেট লিখে নিলেন। বুমরা প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়েছিলেন। বুমরার জায়গায় বল করতে এসে মাত্র ১৪ বলে ৩ উইকেট তুলে নিয়ে হার্দিক লোয়ার অর্ডার ফিনিশ করেন। সবমিলিয়ে মাত্র ৫০ রানে অলআউট শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কা একসময় ১২ রানের মধ্যেই ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল।
চলতি এশিয়া কাপে এর আগে চার ম্যাচ খেলে সিরাজের নামের পাশে ছিল ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারের প্ৰথম বলেই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন সিরাজ। ওভার দ্য উইকেট-এ বল করতে এসে পাথুম নিশঙ্কাকে হালকা করে সুইংয়ের মারণাস্ত্র ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। নিশঙ্কাত ক্যাচ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে পাকড়াও করতে বিন্দুমাত্র দেরি হয়নি জাদেজার।
এরপরে সিরাজের শিকার সমরাবিক্রমা। তাঁকেও লেগ বিফোর করেন সিরাজ। চরিত আশালঙ্কা ক্রিজে এসেই প্ৰথম বলে কভারে ঈশান কিষানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন।
আরও পড়ুন: ছেলেখেলা করে ইতিহাস গড়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত! সিরাজের স্বপ্নের স্পেলে লজ্জার কেলেঙ্কারি শ্রীলঙ্কার
হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল সিরাজের কাছে। তবে লং অন দিয়ে সিরাজকে সেই বলে ধনঞ্জয় ডিসিলভা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান। নিজের বোলিংয়েই বাউন্ডারি আটকাতে সিরাজকে ছুটে যান লং অন ধরে।
মিয়াঁ স্বপ্নের সেই ওভার ফিনিশ করেন সুইংয়ে ডিসিলভাকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে। মিডল স্ট্যাম্পে পড়ে বল হালকা আউটসুইং হয়ে ডিসিলভার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপার কেএল রাহুলের হাতে জমা পড়ে। পরের ওভারেই সিরাজ নিজের ইনিংসে পাঁচ উইকেট সমাপ্ত করেন লেগ কাটারে দাশুন সানাকার স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে।
ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করতে সিরাজের লাগে মাত্র ১৬ ডেলিভারি। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটাই যুগ্মভাবে দ্রুততম পাঁচ উইকেট শিকারের নজির। এই একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভ্যাস। ২০০৩। শ্রীলঙ্কার মাটিতেই ২০ বছর পর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সিরাজের হাত ধরে।