শ্রীলঙ্কা: ৫০/১০
ভারত: ৫১/০
ইতিহাসে ভুল সময়ে খেলতে নেমেছিল শ্রীলঙ্কা। রবিবার কলঙ্কজনক ইতিহাসের সাক্ষী থাকল লঙ্কান বাহিনী। তাও আবার নিজেদের দেশে এশিয়া কাপের মঞ্চে। প্ৰথমে ব্যাট করতে নেমে সিরাজের আগুনে স্পেলে মাত্র ৫০ রানে ধ্বংস হয়ে গেল দাশুন সানাকা ব্রিগেড। সেই রান চেজ করল ভারত হাতে ১০ উইকেট ২৬৩ বল বাকি থাকতে। লঙ্কান ইনিংস ১৫.২ ওভারে খতম হয়ে যাওয়ার পর ভারত সেই রান চেজ করতে নিল মাত্র ৬.১ ওভার। সবমিলিয়ে ওয়ানডে ম্যাচ দুই ইনিংস মিলিয়ে শেষ হল ২১.৩ ওভারে।
রোহিত শর্মার জায়গায় ওপেন করতে নামা ঈশান কিষান (১৮ বলে ২৩) এবং শুভমান গিল (১৯ বলে ২৭) টি২০-র মেজাজে খেলা শেষ করে দেন।
এশিয়া কাপের ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোর ছিল বাংলাদেশের। ২০০০ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মাত্র ৮৭ রানে অলআউট হয়ে গিয়েছিল টাইগার বাহিনী। সেই 'কীর্তি' ছাপিয়ে গেল রবিবার শ্রীলঙ্কার কাণ্ড কারখানা।
বৃষ্টির সম্ভবনা নিয়ে খেলতে নেমে মহম্মদ সিরাজ প্রেমদাসায় উইকেটের বৃষ্টি করে গেলেন। নিজে ৭ ওভার বল করে ৬ উইকেট তুললেন। এর মধ্যে এক ওভারে ৪ উইকেট নিলেন। হার্দিক পান্ডিয়া লোয়ার অর্ডার ফিনিশ করে ৩ উইকেট নিলেন মাত্র ১৪ ডেলিভারিতে।
আরও পড়ুন: ১০ বলে ৫ উইকেট, ১ ওভারে ৪! ইতিহাস কাঁপানো মিয়াঁ ম্যাজিকে ধ্বংস শ্রীলঙ্কা
বৃষ্টির কারণে ম্যাচের শুরু সামান্য বিলম্ব হয়েছিল। গোটা মাস ধরেই কলম্বোর আকাশে মেঘের ঘনঘটা। এমনকি ফাইনালে বল গড়ানোর সময়ও আকাশে ছিল মেঘ। আর মেঘকে সাক্ষী রেখেই প্রেমদাসা স্টেডিয়ামে মাতাল করা বোলিংয়ের নিদর্শন তুলে ধরলেন মহম্মদ সিরাজ। ওয়ানডেতে দ্রুততম পাঁচ উইকেটের শিকার আপাতত যুগ্মভাবে তিনি।
প্রথম ওভারে উইকেট পাননি। তবে দ্বিতীয় ওভারেই তান্ডব শুরু করলেন মিঞা। সেই ওভারে ছয় বলের মধ্যে ৪ উইকেট তুলে নিলেন। হ্যাটট্রিকের সম্ভবনা থাকলেও হয়নি। ওভার-হ্যাটট্রিক করেই থামলেন না সিরাজ। আরও দুটো উইকেট দখল করে নিজের নামের পাশে হাফডজন উইকেট লিখে নিলেন। বুমরা প্রথম ওভারেই উইকেট নিয়েছিলেন।
চলতি এশিয়া কাপে এর আগে চার ম্যাচ খেলে সিরাজের নামের পাশে ছিল ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ওভারের প্ৰথম বলেই উইকেট তুলে নিয়েছিলেন সিরাজ। ওভার দ্য উইকেট-এ বল করতে এসে পাথুম নিশঙ্কাকে হালকা করে সুইংয়ের মারণাস্ত্র ভাসিয়ে দিয়েছিলেন। নিশঙ্কাত ক্যাচ ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে পাকড়াও করতে বিন্দুমাত্র দেরি হয়নি জাদেজার।
এরপরে সিরাজের শিকার সমরাবিক্রমা। তাঁকেও লেগ বিফোর করেন সিরাজ। চরিত আশালঙ্কা ক্রিজে এসেই প্ৰথম বলে কভারে ঈশান কিষানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন।
হ্যাটট্রিকের সুযোগ ছিল সিরাজের কাছে। তবে লং অন দিয়ে সিরাজকে সেই বলে ধনঞ্জয় ডিসিলভা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান। নিজের বোলিংয়েই বাউন্ডারি আটকাতে সিরাজকে ছুটে যান লং অন ধরে।
মিয়াঁ স্বপ্নের সেই ওভার ফিনিশ করেন সুইংয়ে ডিসিলভাকে প্যাভিলিয়নে পাঠিয়ে। মিডল স্ট্যাম্পে পড়ে বল হালকা আউটসুইং হয়ে ডিসিলভার ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটকিপার কেএল রাহুলের হাতে জমা পড়ে। পরের ওভারেই সিরাজ নিজের ইনিংসে পাঁচ উইকেট সমাপ্ত করেন লেগ কাটারে দাশুন সানাকার স্ট্যাম্প উড়িয়ে দিয়ে।
ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করতে সিরাজের লাগে মাত্র ১৬ ডেলিভারি। ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে এটাই যুগ্মভাবে দ্রুততম পাঁচ উইকেট শিকারের নজির। এই একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার চামিন্দা ভ্যাস। ২০০৩। শ্রীলঙ্কার মাটিতেই ২০ বছর পর সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি সিরাজের হাত ধরে।
তার আগে টসে জিতে শ্রীলঙ্কান ক্যাপ্টেন দাশুন শানাকা প্ৰথমে ব্যাটিং নিয়েছিলেন। প্ৰথম একাদশে একটি বদল করে লঙ্কানরা। মহেশ থিকসানার জায়গায় নিয়ে আসা হয় দুশন হেমন্তকে। অন্যদিকে, ভারত গত বাংলাদেশ ম্যাচের একাদশে একাধিক পরিবর্তন করেছিল। বিশ্রাম পাওয়ার পর বিরাট কোহলি, হার্দিক পান্ডিয়া, জস্প্রীত বুমরা, কুলদীপ যাদব, মহম্মদ সিরাজরা ফিরেছিলেন।