এশিয়ান গেমসে জন্ম দিচ্ছে তারকাদের। বা বলা যেতে পারে তারকারা হয়ে উঠছেন মহাতারকা। অষ্টাদশ এশিয়াড শুরু হওয়ার আগে পর্যন্ত অনেকের কাছেই অপিরিচত ছিল জিনসন জনসনের নামটা। কিন্তু কেরলের কোঝিকোড়ের বছর সাতাশের বাসিন্দা চলতি এশিয়ান গেমসে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি অন্য ধাতুর। ৮০০ মিটারে রুপো ও ১৫০০ মিটারে দেশকে সোনা এনে দিয়েছেন জনসন।
মাখন-পাঁউরুটির প্রাতঃরাশে বিশ্বাস রাখেননি জনসন। ভাতের সঙ্গে পনীর আর মুরগির মাংসই হয়েছিল তাঁর চালিকাশক্তি। শেষ ৪০ মিটারের জন্য নিজের সেরা দৌড়টা বাঁচিয়ে রাখা মানুষটা স্বর্ণপদক জিতে এমনটাই বলেছেন। দু’দিন আগেও জনসন হতাশ হয়েছিলেন ৮০০ মিটারে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করার জন্য। স্বদেশীয় প্রতিদ্বন্দ্বী মনজিং সিংয়ের কাছে সোনা হাতছাড়া হয়েছে। টুইটারে শয়ে শয়ে মন্তব্যে ভরে গিয়েছিল, কেন জনসন সোনা পেলেন না বলে! তখনই ঠিক করে নেন ছক ভেঙে বেরিয়েই কিছু করবেন তিনি।
আরও পড়ুন: Asian Games 2018: সংবর্ধনা তো বুঝলাম, কিন্তু টাকা-পয়সা? প্রশ্ন স্বপ্নার ইনচার্জ কল্যাণ চৌধুরির
গেমস ভিলেজে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করেই ১৫০০ মিটারে সোনা ছিনিয়ে আনার শপথ নেন মনে মনে। জনসন বলছেন, “এশিয়াডে রুপোটাই ছিল আমার প্রথম পদক। আমার দৌড়টা ভালই হয়েছিল। মনজিত আমার থেকে ভাল দৌড়েছিল। আমি ওর জন্য খুশি হয়েছিলাম। সত্যি বলতে আমার একটুও খারাপ লাগেনি। আমি কৃতজ্ঞ যে আমি দৌড়তে পেরেছি। ১৫০০ মিটারে নতুন করে শুরু করতে চেয়েছিলাম। রুটিন মাফিক পরিকল্পনা থেকে বেরিয়ে সোনা জিততে চেয়েছিলাম। বুঝেছিলাম সময়টা ব্যাপার নয়, আমার ৮০০ মিটারের শেষটায় ভুল ছিল। আমাকে যদি চার মিনিটের মধ্যেও দৌড়তে হয়, তাহলে সোনাটাই পেতে হবে। মাথা ঠান্ডা রেখেই সোনাটা আসবে। জানতাম সেটা।” হাসতে হাসতেই কথাগুলো বললেন জনসন। সোনার দৌড়ে সময় নিয়েছিলেন ৩:৪৪:৭২ সেকেন্ড।জনসনের জীবনেও অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে। তার রাজ্যে ৪০০-র বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে ভয়াবহ বন্যায়। এই জয়টা তিনি কেরলবাসীকে উৎসর্গ করেছেন।