ভারত: ১ (রাহুল)
চিন: ৫ (গাও, তাও-২, দেই, ফাং)
কোনও পরিকল্পনা নেই। ক্লাব বনাম দেশ দ্বন্দ্বে উত্তাল হয়েছে ফুটবল মহল। কোনওরকমে জোড়াতালি দেওয়া দল নিয়ে দল সাজানো হয়েছে এশিয়ান গেমসে। ফলত, যা হওয়ার তা-ই হল। কোচ স্টিম্যাচের আশঙ্কাই সত্যি হল। এশিয়ান গেমসের প্ৰথম ম্যাচে ভারত ১-৫ গোলে উড়ে গেল আয়োজক চিনের কাছে। মাত্র ২৪ মিনিটের স্পেলে তিন-তিনটে গোল হজম করল। দ্বিতীয়ার্ধে এর মধ্যে তিন মিনিটের ব্যবধানেই ভারত খেল দুই গোল। যে ম্যাচে ভাবা হচ্ছিল কোনওরকমে দল নামিয়ে লড়াইয়ের ঘটনা শিরোনাম হবে, সেই ম্যাচেই লজ্জার কাহিনী শুনিয়ে দিল সদ্য শুরু হওয়া এশিয়ান গেমস।
মাত্র কয়েক ঘন্টা আগে চিন পৌঁছেছেন। কোচ আগেই আশঙ্কা করেছিলেন কোনও প্রস্তুতি ম্যাচ তো বটেই ট্রেনিং সেশনও হয়নি। ফিফা উইন্ডোর বাইরে পড়ায় দেশের সেরা ফুটলারদের ছাড়েনি ক্লাব। স্কোয়াডের অধিকাংশ ফুটবলারই প্ৰথমবার ক্রোয়েশিয়ান কোচের সেট আপে এলেন। আর এসব কিছুর প্রতিচ্ছবি ধরা পড়ল ম্যাচে।
প্ৰথম দিকে কোচের দর্শন মেনে ভালো লড়াই দিলেও শেষদিকে সময় গড়ানোর সঙ্গে ম্যাচ ফিটনেসে ঘাটতি দেখা গেল, বোঝাপড়ার অভাব প্রকট হল। আর সেসবের ফায়দা নিয়ে চিনের যুব ছেলেরা উড়িয়ে দিল ভারতকে।
প্রথমার্ধে পরিস্থিতি অবশ্য এরকম ছিল না। চিনের সঙ্গে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর দিচ্ছিল ভারত। ব্রায়াস মিরান্দা, রাহুল কেপি, রহিম আলির নিয়ম করে প্রতিপক্ষ বক্সে হানা দিচ্ছিলেন। মাঝমাঠের দখল নেওয়ার জন্য মিডফিল্ডে লোক বাড়িয়ে ৩-৫-২ ছকেও রণকৌশল বদলে ফেলেছিলেন।
নজর কাড়ছিলেন গুরমিত। একের পর এক সেভ করে ভারতের সুযোগ্য লাস্ট লাইন অফ ডিফেন্স হয়ে উঠেছিলেন পাঞ্জাব তনয়।
১৭ মিনিটেই প্ৰথম গোল হজম করে ভারত। কর্ণারের সময় ম্যান মার্কিং ঠিকমত হয়নি। অরক্ষিতে দাঁড়িয়ে থাকা গাও চিনকে প্ৰথমে এগিয়ে দেন। ২৩ মিনিটে নিশ্চিত পেনাল্টি সেভ করেন গুরমিত। চিনা স্ট্রাইকার তান লংকে বক্সের মধ্যেই ফাউল করেছিলেন তিনি। নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত তিনি করেন দুর্ধর্ষ সেভ করে।
প্ৰথমার্ধে ম্যাচ গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মাঠে আধিপত্যও বেড়েছিল ভারতের। মিডফিল্ডে প্রেস করে চিনের অর্ধে বিপদ বাড়াচ্ছিলেন সুনীলরা।
বিরতির আগে সংযোজিত সময়ের একদম শেষ মুহূর্তে ভারতকে ম্যাচে ফেরান রাহুল কেপি। ডান উইং দিয়ে একক প্রচেষ্টায় গোল করে যান তিনি। নিজের মার্কারকে গতিতে পরাস্ত করেন। মাঝমাঠ থেকে উড়ে আসা বল বক্সের মধ্যে নিখুঁত ফিনিশিং করে যান।
বিরতিতে ১-১ করে মাঠ ছেড়েছিল ভারত। ভাবা হয়েছিল হয়ত দ্বিতীয়ার্ধে চমক দেবে টিম ইন্ডিয়া। তবে প্রথমার্ধের লড়াই বিরতির পর হয়ে দাঁড়ায় আত্মসমর্পণে। প্ৰথমে ৫১ মিনিটে দাই ওয়াংজু গোলবন্যার মুখ খুলে দেন। ৭২ এবং ৭৫ মিনিটে আরও দু-গোল হজম করে ভারত।
ওয়াং হাইজানের দূরপাল্লারর শট প্রতিহত করে দিয়েছিলেন গুরমিত। তবে ঠিকমত ক্লিয়ার করতে পারেননি। ফিরতি বলেই গোল করে যান তাও কুয়াংলং। ৭৫ মিনিটে তাও নিজের দ্বিতীয় গোল করে যান সন্দেশ ঝিংগানকে মাটি ধরিয়ে। সংযোজিত সময়ে হাও ফাং চিনের হয়ে পঞ্চম গোল করে যান।
ভারত: গুরমিত সিং, সন্দেশ ঝিংগান, নুঙ্গা, আয়ুশ ছেত্রী, ব্রায়াস মিরান্দা, সুনীল ছেত্রী, রাহুল কেপি, রহিম আলি, আব্দুল আঞ্জুকান্দন, অমরজিৎ সিং, সুমিত রাঠি