এটিকে: ৫ (ডেভিড উইলিয়ামসন-২, রয় কৃষ্ণ, এডু গার্সিয়া-২)
হায়দরাবাদ: ০
প্রথমবার আইএসএলে আবির্ভাব। অভিষেক ঘটেছিল একেবারে ফুটবলের মক্কা কলকাতায়। যুবভারতীতে সেই অভিষেক অবশ্য দুঃস্বপ্নের মতো গোটা টুর্নামেন্টে তাড়া করে বেড়াবে হায়দরাবাদ এফসিকে। প্রথম ম্য়াচেই হাবাসের এটিকের কাছে ৫-০ গোলে কচুকাটা হতে হল তাদের। যুবভারতীতে দুরন্ত জোড়া গোল করে গেলেন অস্ট্রেলিয়ান ডেভিড উইলিয়ামস এবং এডু গার্সিয়া। একটি গোল রয় কৃষ্ণের। ডেভিড-কৃষ্ণ জুটির কাছে শুক্রবার দাঁড়াতেই পারেনি হায়দরাবাদ এফসি।
আগের ম্যাচে শুরুতে গোল করেও বিরতিতে জোড়া গোল হজম করে ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল এটিকে। কেরল ম্যাচের একাদশই কার্যত অপরিবর্তিত রেখে হায়দরাবাদের বিপক্ষে দল সাজিয়েছিলেন কোচ হাবাস। কেবল প্রণয় হালদার আগের ম্যাচে হলুদ কার্ড দেখায়, তাঁকে বসিয়ে প্রথম একাদশে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল আনাস এডাথিকোডাকে।
কৃষ্ণ, ডেভিড উইলিয়ামসদের আটকাতে ব্যর্থ আদিল খানরা (আইএসএল)
নামেই হায়দরাবাদ এফসি। আসলে পুণে সিটি এফসি। পুণে সিটি এফসিরই অধিকাংশ ফুটবলার জ্বলজ্বল করছে হায়দরাবাদ স্কোয়াডে। কলকাতায় প্রথম ম্য়াচ খেলতে নেমে অবশ্য শুরুতে আশা জাগিয়ে শুরু করেছিল ফিল ব্রাউনের দল। সাহিল পানওয়ার, আদিল খান, মার্সেলিনহোরা টক্কর দিচ্ছিলেন এটিকে ফুটবলারদের সঙ্গে। আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে জমে উঠছিল খেলা।
তবে ২৫ ও ২৭ মিনিটে ডেভিড উইলিয়ামস ও রয় কৃষ্ণের জোড়া গোল হতোদ্যম করে দেয় হায়দরাবাদকে। ২৫ মিনিটে জাভি হার্নান্ডেজের পাস ধরে কমলজিৎয়ের পায়ের মাঝখান দিয়ে নিখুত প্লেসিংয়ে প্রথমে এটিকেকে এগিয়ে দিয়েছিলেন ডেভিড উইলিয়ামস। সেই গোলের হ্যাংওভার কাটতে না কাটতেই দ্বিতীয় গোল। এবারেও গোলে নাম লেখা থাকল ডেভিড উইলিয়ামসের। তবে স্কোরার নয়, অ্যাসিস্ট হিসেবে। উইলিয়ামস বক্সের বাইরে ফাঁকায় থাকা কৃষ্ণকে পাস দিয়েছিলেন। ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে জোরালো শটে ২-০ করেন কৃষ্ণ।
আদিল খানদের নিয়ে গড়া হায়দরাবাদ রক্ষণ এদিন ডাহা ফেল। কোচ ফিল ব্রাউনকে টুর্নামেন্টে টিকে থাকতে হলে রক্ষণের মান উন্নত করতেই হবে। যাইহোক, জোড়া গোল হজম করার পরে অনেকটাই হতোদ্যম হয়ে পড়ে নিজামের শহরের ফুটবলাররা। বিরতির ঠিক আগে ডেভিড উইলিয়ামস নিজের দ্বিতীয় গোল করে যান জয়েশ রানের পাস ধরে।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে মরিয়া হয়ে লড়াই চালাতে শুরু করে হায়দরাবাদ। মাঝমাঠে বল পজেশন বেশি রেখে আক্রমণ শানালেও অ্যাটাকিং থার্ডেই জারিজুরি শেষ হয়ে যাচ্ছিল হায়দরাবাদের। কোনও প্ল্যান-বি না থাকায় এটিকে রক্ষণকে সেভাবে এদিন পরীক্ষাই দিতে হল না। রবিন সিং, মার্সেলিনহোদের আক্রমণের পাশাপাশি গোটা ম্যাচে হায়দরাবাদকে ভুগিয়ে গেল দুর্বল রক্ষণ।
শেষ দিকে কয়েকমিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করে যান পরিবর্ত হিসেবে নামা এডু গার্সিয়া। নির্ধারিত সময়ে খেলা শেষ হওয়ার ঠিক এক মিনিট আগে এটিকের চতুর্থ গোল করে যান পরিবর্ত হিসেবে নামা এডু গার্সিয়া। ডান প্রান্ত থেকে প্রবীর দাস নিখুঁত সেন্টার করেছিলেন। গার্সিয়া সেখান থেকে ৪-০ করতে কোনও ভুল করেননি। সেলিব্রেশনের সময়ে গার্সিয়াকে চোখ মোছার ভঙ্গিতে হায়দরাবাদকে ব্যঙ্গও করতে দেখা গেল।
সংযোজিত সময়ে ফের প্রবীর দাস-এডু গার্সিয়ার যুগলবন্দিতে এটিকের পঞ্চম গোল। রাইট উইং থেকে ক্রস রেখেছিলেন প্রবীর। হায়দরাবাদের দুই সেন্টার ব্যাককে ঘাড়ের কাছে নিয়ে হেডে গোলকিপারকে পরাস্ত করে নিজের দ্বিতীয় গোল করে যান এডু গার্সিয়া।
আইএসএলের ইতিহাসে এটাই এটিকের সবথেকে বেশি ব্যবধানে জয়।