ভারতের হিরো হিসাবে আবির্ভাব ঘটল অক্ষর প্যাটেলের। অপরাজিত ৬৪ রান করে ভারতকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে রুদ্ধশ্বাস জয় এনে দিলেন। সেই সঙ্গে ২-০ এগিয়ে গিয়ে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলল টিম ইন্ডিয়া।
ত্রিনিদাদে ৩১২ রানের টার্গেট তাড়া করে ভারত জিতল হাতে ২ উইকেট নিয়ে। রবিবারের সিরিজ জয় ভারত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টানা ১২টা দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতল। ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে এই নিয়ে টানা ৫টা সিরিজ জয় পেল ভারত। বিশাল টার্গেট তাড়া করতে নেমে ভারতের শেষ চার ওভারে প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। সেই সময় রোমারিও শেফার্ডকে টানা দুটো বাউন্ডারি হাঁকিয়ে অক্ষর মাত্র ২৭ বলে নিজের হাফসেঞ্চুরি পূর্ণ করে যান। সেই ওভারে আবেশ খানও একটা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান। ৪৭তম ওভারে ভারত স্কোরবোর্ডে ১৩ রান যোগ করে ম্যাচের ভাগ্য অনেকটাই নির্ধারিত করে দেয়। ৪৮তম ওভারে আলজারি জোসেফ মাত্র ৪ রান খরচ করলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
আরও পড়ুন: শেষ ওভারে দরকার ১৫ রান, পারল না ক্যারিবিয়ানরা! টানটান ম্যাচে জয়ী ভারত
শেষ দু-ওভারে জয়ের জন্য সমীকরণ দাঁড়ায় ১২ বলে ১৫। জেদন স্মিথ ৭ রান খরচ করে ৪৯ ওভারে আউট করে দেন আবেশ খানকে। শেষ ওভারে ক্যারিবীয়দের হয়ে ৮ রান ডিফেন্ড করার জন্য বল করতে আসেন কাইল মায়ের্স। প্ৰথম তিন বলে মাত্র ২ রান খরচ ভারতের ওপর চরম চাপ বাড়িয়ে দিয়েছিলেন মায়ের্স। তবে চতুর্থ বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের ভাগ্য ঠিক করে দেন অক্ষর প্যাটেল।
শিখর ধাওয়ান ৩১ বলে ১৩ করে ১১তম ওভারের ফাইনাল ওভারে আইট হয়ে যান। শুভমান গিলের এদিনের সংগ্রহে ৪৩ রান। সূর্যকুমার যাদব আরও একবার ব্যাটে রান করতে পারলেন না। তিনটে উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে বিপদে পড়ে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সেখান থেকে ভারতকে উদ্ধার করেন সঞ্জু স্যামসন এবং শ্রেয়স আইয়ারের ৯৯ রানের চতুর্থ উইকেটের পার্টনারশিপ। শ্রেয়স আইয়ার ৭১ বলে ৬৩ করে প্রভাব সম্পন্ন ইনিংস খেলে যান। ৩৩তম ওভারের শেষ বলে আলজারি জোসেফের শিকার হয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। ওয়ানডেতে প্ৰথম হাফসেঞ্চুরি করার পথে সঞ্জু স্যামসন তিনটে করে বাউন্ডারি, ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান। তিনিই ভারতকে ২০০ পার করিয়ে দেন।
তার আগে নিজের একশোতম ওয়ানডেতে শতরান করে বিরল নজির গড়ে যান ক্যারিবিয়ান তারকা সাই হোপ। হোপের ১১৫, ক্যাপ্টেন নিকোলাস পুরানের ৭৪ রানে ভর করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতের বিপক্ষে প্ৰথমে ব্যাট করে ৩১১/৬ তুলেছিল। প্ৰথম ওয়ানডেতে ব্যর্থ হওয়া হোপ ওপেনিং জুটিতে কাইল মায়ের্স (৩৯)-এর সঙ্গে ৫৫ বলে ৬৫ যোগ করে যান। দ্বিতীয় উইকেটে সামারা ব্রুকসের (৩৫) সঙ্গে আরও ৬২ রানের পার্টনারশিপ গড়ে যান হোপ।
মায়ের্স এবং ব্রুকস আউট হয়ে যাওয়ার পরে হোপের সঙ্গে দুরন্ত পার্টনারশিপ গড়ে যান অধিনায়ক পুরান। ৭৭ বলে ৭৪ রানের মারকাটারি ইনিংসে পুরান হাফডজন ছক্কা হাঁকানোর পাশাপাশি একটা বাউন্ডারিও হাঁকান। দুজনে তৃতীয় উইকেটে ১২৬ বলে ১১৭ রানের জুটি গড়ে যান।
ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে দশম ব্যাটসম্যান হিসেবে একশোতম একদিনের ম্যাচে শতরান করার কীর্তি অর্জন করেন হোপস। তিনি কীর্তি গড়ার পরে ১১৫ রানে আউট হয়ে যান। ১৩৫ বলের ইনিংসে আটটা বাউন্ডারি, তিনটে ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়ে যান তিনি। অক্ষর প্যাটেল এবং দীপক হুডা দুজনেই একটি করে উইকেট দখল করেন। জুজবেন্দ্র চাহাল ১ উইকেট নিলেও খরুচে হয়ে যান। শেষ ১০ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৯৩ তুলে স্কোর ৩০০ পার করে দেয়।