২১ দিনের লক ডাউনের পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পরিযায়ী শ্রমিকরা সমস্যায় পড়েছেন। নিজেদের রাজ্যে ফিরে আসার জন্য পায়ে হেঁটে অনেকেই চেষ্টা করেছেন। হেঁটে হেঁটে মৃত্যুর মুখেও ঢলে পড়েছেন। এমনও নজির রয়েছে। সিকিমে এদের সাহায্যার্থে এবার এগিয়ে এলেন স্বয়ং বাইচুং ভুটিয়া।
সোমবার বাইচুং জানান, লুমসেতে তাঁর পুরোপুরি তৈরি না হওয়া যে বাড়ি রয়েছে সেখানে বিপদগ্রস্ত শ্রমিকরা আশ্রয় নিতে পারেন। জীবনধারনের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তাঁর ক্লাব ইউনাইটেড সিকিমের থেকে সরবরাহ করা হবে।
ফোনে এরপর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে পাহাড়ি বিছে বলেন, "লকডাউনের পরে সবথেকে বিপদের মুখে পড়েছেন পরিযায়ী শ্রমিকরা। সিকিমেও প্রতিবেশী রাজ্য বিহার, পশ্চিমবঙ্গের বহু শ্রমিক রয়ে গিয়েছেন। রাজ্যের সীমান্ত সিল করে দেওয়ায় আটকা পড়েছেন তাঁরা। রাস্তাতেই লোকেরা শুয়ে রয়েছেন। মাথার উপর কোনো ছাদও নেই।"
এরপরে তাঁর সংযোজন, "আমার বিল্ডিংয়ে যাঁরা কাজ করছিলেন তাঁরাও ফিরে যাচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি যদি গ্যাংটকে আমার বিল্ডিংয়ে থাকার বন্দোবস্ত করা যায়। চার তলা বাড়িতে যদিও ১০০ জনের থাকার ব্যবস্থা করা যাবে। তবে বেশ কিছু প্রতিকূলতাও রয়েছে।"
বাইচুং আরো জানিয়েছেন, "প্রশাসনকে জানিয়েছি যাতে প্রয়োজনীয় রেশন সরবরাহ করা হয়। এবং আশা করছি আমার ক্লাবের সহযোগিতায় আরো বেশি মানুষকে আমরা সাহায্য করতে পারবো। আপাতত শ্রমিকদের সংখ্যা মাত্র ১৫ জন। এটা সমস্যা হওয়ার কথা নয়।"
গত বছরই বাইচুংয়ের তৈরি ক্লাব ইউনাইটেড সিকিম তৃণমূল স্তরে কাজ করার বার্তা দিয়ে ক্লাব বন্ধ করা হয়েছিল। বাইচুং নিজের ফেসবুক ভিডিওয় জানিয়েছেন ক্লাবের সিনিয়র ম্যানেজার অর্জুন রাই কে যেকোনো সহযোগিতায় পাওয়া যাবে। তিনি অর্জুন রাইয়ের ফোন নাম্বারও শেয়ার করেছেন।
বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া শ্রমিকদের সাহায্যের পাশাপাশি বাইচুং এএফসি র সচেতনতা মূলক প্রচারেও অংশ নিয়েছেন। বর্তমান জাতীয় দলের অধিনায়ক সুনীল ছেত্রীর সঙ্গে এএফসি র করোনা- ক্যাম্পেনিংয়ে অংশ নিয়েছেন তিনি। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি, লকডাউনের নিয়মবিধি এবং হু এর গাইডলাইন মেনে চলার কথা প্রচার করছেন তিনি।
গোটা ভারতে ৩৫ জন করোনার বলি হলেও সিকিমে এখনও করোনা প্রবেশ করতে পারেনি।
দেড় বছর আগে সিকিমিস স্নাইপার নিজের রাজনৈতিক পার্টি 'হামরো সিকিম' আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছিলেন। তিনি অবশ্য বর্তমান পরিস্থিতিতে জানিয়েছেন, "রাজনৈতিক ভাবে বিষয়টিকে একদম দেখছি না। ব্যক্তিগতভাবে প্রত্যেকেই সমস্যায় আক্রান্ত মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসার কথা বলেছি। সাহায্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বার্তার প্রয়োজন হয় না। যদি কেউ ৬ জনের খাওয়ার বন্দোবস্ত করতে পারে সেটাই অনেক। পাশাপাশি আমি নিশ্চিত এআইএফএফ, কিংবা আইএসএলের মতো সংস্থা অনেক সাহায্য করতে পারে। যেমন স্টেডিয়ামে আইসোলেশন সেন্টার খোলার কাজেও সহায়তা করতে পারে।"