Advertisment

চার-ছক্কা মারছিলেন লিটন, টেনশনে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ইংল্যান্ডকে লজ্জার হোয়াইটওয়াশ করেছে বাংলাদেশ

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
NULL

রবিউল ইসলাম বিদ্যুৎ, ঢাকা

Advertisment


বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে একটা চমকপ্রদ কথার চল আছে ক্রিকেটের দৈর্ঘ্য বড় হলেও সমস্যা আবার ছোট হলেও সমস্যা। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে কিছুতেই যেন কিছু হচ্ছিল না। মাঝের যে ফরম্যাট অর্থাৎ ওয়ানডেতে বাংলাদেশ বছর সাতেক হলো নিয়মিত ভালই করে আসছে। কিন্তু টেস্ট এবং টি-টোয়েন্টিতে উন্নতির কোন রাস্তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। দ্বিতীয় দফায় চণ্ডিকা হাথুরুসিংহের শরণাপন্ন হয়ে মনে হচ্ছে আপাতত ছোট দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটের জন্য একটা সমাধান হলো। চার মাস আগে যে দলটা বিশ্বচ্যাম্পিয়নে মুকুট পড়েছিল সেই দলের বিরুদ্ধে ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতা যা তা বিষয় নয়!

২০১০ সালে নিউজিল্যান্ডকে ৪-০ তে হারানোর পর বাংলাদেশের জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান নতুন ‘বাংলাওয়াশ’ শব্দটি উচ্চারণ করেছিলেন। তারপর থেকেই এই শব্দটি বাংলাদেশের নিজস্ব ভাষা হয়ে গিয়েছে। ইংল্যান্ডকে ৩-০ তে হারানোর পর বহুদিন বাদে ‘বাংলাওয়াশ’ শব্দটি ফের উচ্চারিত হচ্ছে। ওয়ানডে সিরিজ ১-২ ব্যবধানে খোয়ানোর পর কে ভেবেছিলেন সাকিবের দল টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিততে পারবে! টি-টোয়েন্টি যে ইংল্যান্ড সিরিজের আগেও বাংলাদেশের নিকট ছিল এক ধাঁধার নাম।
এবার সেই ধাঁধার সঠিক উত্তর দিতে পেরেছে বাংলাদেশ দল।

আরও পড়ুন: বাঙালিকেই ক্যাপ্টেন করতে চলেছে KKR! বিরাট ইঙ্গিতে ব্যাপক ঘোষণার পথে নাইটরা

ভীষণ খুশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। তিনি খেলার মাঝে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনকে বারবার ফোন করেছেন। লিটন দাস যখন ছক্কা মারছিলেন তখন ফোন করে নাকি প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, এভাবে মারলে তো আউট হওয়ার ঝুঁকি থাকে! ম্যাচ শেষ হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী তাকে কি বলেছিলেন সে কথা সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে বলছিলেন নাজমুল হাসান পাপন, “একবার নয়, একাধিকবার ফোন করেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। যখন লিটন দাস চার-ছয় মারছিল তখন উনি বলছিলেন, 'এত ছয় মারতে গিয়ে আউট হয়ে যায় যদি!' আমি বলছি, 'আউট হয়ে গেলেও অসুবিধা নেই, মাত্র কয়েকটা ওভার বাকি রয়েছে, এখন মারতেই হবে। এরকমভাবে খেলার মধ্যেও ফোন করছিলেন। উনি বল বাই বল খেলা দেখেছেন। প্রধানমন্ত্রী সকলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত খুশি। তিনি বলছিলেন, 'ইংল্যান্ড হোয়াইটওয়াশড, এটা আসলে চিন্তাই করা যায় না।' আমরা নিজেরাও করিনি।”

চণ্ডিকা হাথুরুসিংহে এসেই চমকই দেখালেন ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে। তাই স্বভাবতই হাথুরুকে নিয়ে একটা প্রশ্ন উড়ে গেল বোর্ড সভাপতির দিকে। একটু ভেবে নাজমুল হাসান বলে দিলেন, "ওকে (হাথুরুসিংহে) নিয়ে এখনি কথা বলার সময় আসেনি। ও নিজস্ব মেথডে চলে। সুবিধাটা হলো এই টিমের প্রত্যেকে ওঁর প্ল্যান অনুযায়ী চলে। সে খেলার আগে কতগুলো প্ল্যান দিয়ে দেয় ওই পরিলল্পনা ওঁরা বাস্তবায়ন করছে। একটা নতুন কোচ এসেই কিছু করে ফেলবে এটা ভাবাটা ঠিক হবে না। কারণ এখনো সে দেখছে, সামনে আরও দুটো সিরিজ আছে, সেখানেও সে বেশকিছু খেলোয়াড়কে দেখবে। সেটা ওডিআইতেও হতে পারে, টি-টোয়েন্টিতেও হতে পারে, আমি ঠিক জানিনা। ও দেখবে, দেখার পরে এশিয়া কাপে আমরা যে দলটা দেব সেটাই হবে ফাইনাল স্কোয়াড। আমরা এর মধ্যে কোন হস্তক্ষেপ করতে চাই না। আমরা ওঁকে এই ব্যাপারে স্বাধীনতা দিয়েছি।”

মিরপুরের লো এন্ড স্লো উইকেট নিয়ে অতীতে অনেক কথা হয়েছে। কিন্তু ইংল্যান্ড সিরিজে মিরপুরের উইকেটকে স্পোর্টিংই মনে হয়েছে। হঠাৎ উইকেটের চরিত্র বদলে যাওয়ার নেপথ্যের কারণ জানাতে গিয়ে নাজমুল হাসান বলছিলেন, "এটা ছিল একটা প্ল্যানিংয়ের পাঠ। এখানে অবশ্যই কোচের একটা অবদান তো আছেই। সামনে হয়তো আরও কঠিন উইকেটে বাংলাদেশকে খেলতে দেখবেন। এরপর আয়ারল্যান্ড সিরিজে সিলেটে আরও কঠিন উইকেট হবে।”

বোর্ড সভাপতির মনে হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ জিতবেন। কিন্তু সেটি না হওয়ায় যারপনারই হতাশ হয়েছিলেন। টি-টোয়েন্টি সিরিজে সাকিবের দল কল্পনাতীত সাফল্যই উপহার দিয়েছে। নাজমুল হাসান বলেন, "আমাদের ধারণা ছিল ওয়ানডে সিরিজ জিতবো। ওয়ানডে না জেতায় হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম। তবে চট্টগ্রামে তৃতীয় ম্যাচটা জেতার পর আমাদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গিয়েছিল। তারপর আমাদের টি-টোয়েন্টি দল এত সুন্দর খেলেছে, আমরা সিরিজটা জিতেও গেলাম। সামনের দুটো সিরিজে পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হবে। সারাবছর ধরে পরীক্ষা নীরিক্ষা নয়, বিশ্বকাপের মাঝে গিয়ে কোন পরীক্ষা নীরিক্ষা হবে না, যা হবে এশিয়া কাপের আগে।”

England Bangladesh Cricket
Advertisment