IPL new rules before auction: বুধবার সন্ধ্যায় মুম্বইয়ে বিসিসিআই এবং আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যদের মধ্যে বৈঠক হতে চলেছে। বৈঠকে থাকবেন ১০টি আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকরা। বৈঠকে খেলোয়াড় ধরে রাখার সংখ্যা, ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম, নিলামের মূল্যের সীমার মত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হতে চলেছে।
আগামী মরশুমে আইপিএলের মেগা নিলাম। এবছরের শেষের দিকেই সেই মেগা নিলাম হয়ে যাবে। আর, সেই কারণেই বুধবারের বৈঠকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আইপিএল পরিচালনা পরিষদ বেশ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে চায়। এই সব সিদ্ধান্ত নিলামের ওপর প্রভাব ফেলবে। এই পরিস্থিতিতে বেতন তহবিল ১০০ কোটি টাকা থেকে বাড়ানো হয় কি না, সেদিকেও নজর থাকবে সকলের।
সূত্রের খবর, বেশ কয়েকজন ভারতীয় খেলোয়াড় ইতিমধ্যেই বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে কথা বলে রেখেছে। তবে, তাদের বর্তমান ফ্র্যাঞ্চাইজি ওই খেলোয়াড়দের অনেককেই ধরে রাখতে চায়। তারা মনে করে বেতনের তহবিলের অঙ্কটা বাড়ানো না হলে ওই খেলোয়াড়দের ধরে রাখা যাবে না। তারমধ্যেই তরুণ ভারতীয় খেলোয়াড়রা যদি ৩০ ঊর্ধ্ব খেলোয়াড়দের চেয়ে নিলামে বেশি গুরুত্ব পায়, তবে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এমনটাই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধির এই সব ব্যাপারে বিভিন্নজনের সঙ্গে কথা বলেছেন। যা থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে, সমস্ত ফ্র্যাঞ্চাইজিই তাদের স্কোয়াডে ধারাবাহিকতা বজায় রাখার ব্যাপারে আগ্রহী। আর, এই জন্যই তারা আগের মরশুমের অন্ততপক্ষে ৫-৬ জন খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে চায়। তবে, সেটা কীভাবে করা সম্ভব, সেনিয়ে এখনও সাধারণ ঐক্যমত্য তৈরি হয়নি। আর, সেই কারণেই কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি চায় যে আইপিএল জিসি নিলামের আগে চারজন খেলোয়াড়কে ধরে রাখার পূর্ববর্তী নীতি বজায় রাখুক। পাশাপাশি, ফ্যাঞ্চাইজিদের একাংশ চায় যে আইপিএল জিসি তাদের রাইট টু ম্যাচ (RTM) কার্ড দিক। যদিও, সেনিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। কারণ, এই ভয় রয়েছে যে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এই আরটিএম ব্যবহার করে খেলোয়াড়দের মূল্য বাড়াতে পারে।
চার বা তার বেশি
বৈঠকে বিদেশি খেলোয়াড় নিয়েও সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা। ২০২২ মরশুমের আগে, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোকে সর্বাধিক চার জন খেলোয়াড় ধরে রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। এখন যদি আইপিএল জিসি ৫-৬ জন খেলোয়াড় ধরে রাখার ব্যাপারে ফ্র্যাঞ্চাইজির অনুরোধ মেনে নেয়, তাহলে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা কতজন বিদেশি খেলোয়াড়কে ধরে রাখতে পারবে, সেটাও নিশ্চিত হতে পারে বুধবারের বৈঠকে।
এই ব্যাপারে বারবার দলগঠনে মুখ্য ভূমিকা নেওয়া একজন ফ্র্যাঞ্চাইজি কর্তা বলেছেন, 'বড় নিলাম সবসময় দলগুলোকে নতুন করে গড়ে তোলার সুযোগ দিয়েছে। এই কারণেই দলগুলো আগের মরশুমে নতুন কোচ নিয়ে আসে। যাতে তারা মেগা নিলামে ভালো দল তৈরি করতে পারে। আইপিএলের যেমন প্রসার হয়েছে, তেমনই দলগুলোও তাদের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ব্যাপারে আগ্রহী। অবশ্যই, কিছু পরিবর্তন হবেই। কিন্তু, আমরা সবাই মূল কাঠামোটা ধরে রাখতে চাই।'
এমনও জল্পনা রয়েছে যে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো মেগা নিলামের মধ্যে ব্যবধান তিন থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করতে চায়। তবে, আবার শোনা যাচ্ছে যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ফ্র্যাঞ্চাইজি বর্তমান সেট-আপেই খুশি। কারণ, যদি তাদের কোনও ভুল হয়ে যায়, সেটা পরের মেগা নিলামে তিন বছরের মধ্যে সংশোধন করে নেওয়া যায়। অবশ্য প্রতি পাঁচ বছরে একটি বড় নিলাম হলে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তাদের একাডেমি থেকে আনক্যাপড স্থানীয় খেলোয়াড়দের ব্যবহার করার অনুমতি পেত। তবে সবাই সেই সুবিধা পেত না। কারণ, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, চেন্নাই সুপার কিংস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, রাজস্থান রয়্যালসের মত হাতেগোনা কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজিই তাদের একাডেমিতে বড় বিনিয়োগ করেছে।
আরও পড়ুন- ৩ বছর চাকরি নেই দেশকে জোড়া অলিম্পিক পদকজয়ী মানুর কোচের, মাথা কুটছেন অভাবে
কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি আবার আইপিএল জিসিকে তাদের চুক্তির সময় বেতন নিয়ে আলোচনা করার জন্য ফ্রিহ্যান্ড দেওয়ার চাপ দিচ্ছে। এতে দলগুলোর বেতনের বর্তমান সীমা অতিক্রম করার একটি বড় সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। গত মরশুমে বিসিসিআই আনক্যাপড ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য একটি ইনসেনটিভ চালু করেছিল। সেই সব ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য এই ইনসেনটিভ চালু করা হয়েছিল, যাঁরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে যায়। সেই নীতির কারণে, ওই আন্তর্জাতিক ভারতীয় খেলোয়াড়দের বেতন তাঁদের আন্তর্জাতিক অর্থপ্রাপ্তির ওপর ভিত্তি করে বৃদ্ধি পাবে। নিলামের তহবিল সেই অনুযায়ী প্রতিফলিত হতে পারে।
ইমপ্যাক্ট বা প্রভাবশালী খেলোয়াড়ের নিয়ম
আলোচনার অন্য বড় বিষয় হবে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম। ২০২৩ সালে এই নিয়মটি চালু হওয়ার পর থেকে, দলগুলোর রানের পরিমাণ ২০০-র বেশি বেড়েছে। গত মরশুমে, দলগুলো বারবার ২৫০ বা তার বেশি স্কোর করেছে। যার জেরে অনেক দল বড় স্কোর করেও নিশ্চিত জয় পায়নি। আইপিএলে জড়িত বেশ কয়েকজন কোচ অবশ্য এই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, এই নিয়মে কোনও ব্যাটারের বদলে ব্যাটার বা বোলারের বদলে বোলারকেই নেওয়া যায়। কিন্তু, কোনও অলরাউন্ডারকে নেওয়া যায় না। যার ফলে, অলরাউন্ডারদের রিজার্ভ বেঞ্চে বসে থাকতে হচ্ছে। আর, তাঁরা আইপিএলে ভালো পারফরম্যান্স না দেখাতে পেরে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে আবার ফ্র্যাঞ্চাইজিদের একাংশ ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম তুলে দেওয়ার পক্ষপাতী। তবে বিসিসিআই ও আইপিএল জিসি সেই ব্যাপারে রাজি হয় কি না, সেটাই দেখার বিষয়।