সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের উচিত এই মুহূর্তে বিসিসিআইয়ের সভাপতি পদ থেকে সরে দাঁড়ানো। এমনটাই জানিয়ে দিলেন মধ্যপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার লাইফ মেম্বার সঞ্জীব গুপ্তা।
রবিবারেই সৌরভ সহ বোর্ডের পদস্থ আধিকারিকদের এই মর্মে ইমেল করেছেন তিনি। সেখানে তিনি বোর্ডের নিজস্ব নিয়ম উল্লেখ করে জানিয়েছেন, আইসিসির বোর্ডের দ্বারা মনোনীত হওয়ার পর প্রেসিডেন্ট থাকা যায় না।
মার্চের ২৮ তারিখে বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি হওয়ার সুবাদে আইসিসির বোর্ডে মনোনীত হয়েছেন। এরপরেই শশাঙ্ক মনোহরের পরবর্তী আইসিসি চেয়ারম্যান হিসাবে ভেসে উঠছে সৌরভের নাম।
বোর্ডের সংবিধানের ১৪(৯) ধারা এনে বলেছেন, "এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে যদি কোনো বিসিসিআইয়ের অফিস বিয়ারার আইসিসিতে নির্বাচিত হয়। নাহলে বিসিসিআই-ই অফিস বিয়ারার ব্যতীত অন্য কাউকে মনোনীত করবে। যেটা রীতিমত হাস্যকর।"
ঘটনাচক্রে, সুপ্রিমকোর্টে বিসিসিআই যে আবেদন করেছিল সেখানে ১৪(৯) ধারার কোনো উল্লেখ নেই। আইনজীবী বীণা মাধবনের মাধ্যমে সুপ্রিমকোর্টে আবেদন করেছিলেন বোর্ডের সচিব অরুণ ধুমল। সেখানে বোর্ডের সংবিধানের ৬.৪, ৬.৫, ৭.৩, ১৫ (৩)& (৪), ১৯ (২)& (৪৫) ধারার সংশোধনী করতে চেয়ে আবেদন করা হয়। গত বছর ডিসেম্বরের ১ তারিখেই বোর্ডের এজিএমে এই সংশোধনী পেশ করার বিষয়ে সম্মত হন বোর্ড কর্তারা।
সেই আবেদনের সঙ্গেই বলা হয়, বোর্ডের অফিস বিয়ারারদের কুলিং অফে যাওয়ার আগে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার মেয়াদ যেন ধরা না হয়। পাশাপাশি বোর্ডের সিইও-র ক্ষমতা খর্ব করার কথাও জানানো হয়েছে শীর্ষ আদালতকে। বর্তমান বোর্ডের রুলবুক অনুযায়ী, বোর্ডের সিইও অতিরিক্ত ক্ষমতার অধিকারী। প্রেসিডেন্ট ও সচিব পদে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ও জয় শাহ নির্বাচিত হওয়ার পরই সিইওর ক্ষমতায়নের বিষয়ে সরব হন।
ঘটনা হল, কোভিড পরবর্তী সময়ে বিসিসিআই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেতৃত্ব দিতে চায়। সেইজন্যই শশাঙ্ক মনোহরের পরে বিসিসিআইয়ের তরফে সৌরভকে বসানোর তোড়জোড় চলছে। ইতিমধ্যেই আইসিসি চেয়ারম্যান পদে সৌরভকে সমর্থন জানিয়েছেন ডেভিড গাওয়ার, গ্রেম স্মিথের মত প্রাক্তনীরা।
বোর্ডের এক আধিকারিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, "বিশ্ব ক্রিকেটের ভালোর জন্য আমরা সেরা সিদ্ধান্ত নেব। অনেকেই মনে করছেন, ভারতীয় বোর্ডকে বিশ্বক্রিকেটে নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করতে হবে। এই বিষয়ে আলোচনা করে আমরা ঠিক সময়ে সিদ্ধান্ত নেব।"
সেই বোর্ড আধিকারিক আরো জানান, "প্রত্যেক দেশের ক্রিকেট বোর্ডই সমস্যার মুখে। সকলের কথা মাথায় রেখে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যাতে সবাই উপকৃত হয়।"
মঙ্গলবারই আইসিসির বৈঠকে নির্বাচনের চূড়ান্ত রূপরেখা ঠিক হবে। ২৮ তারিখে ফের একবার আইসিসির বোর্ড মেম্বাররা বৈঠকে মনোনয়নের বিষয়টি চূড়ান্ত করবেন। সেদিনই টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ভবিষ্যত নির্ধারণ করা হতে পারে। সূত্রের খবর সম্ভবত, টুর্নামেন্ট স্থগিত করার পথেই হাঁটবে আইসিসি। আর সেই বৈঠকেই বিসিসিআইয়ের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার কথা স্বয়ং সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের। শেষবারের আইসিসি বৈঠকে সচিব জয় শাহ বোর্ডের প্রতিনিধি থাকলেও এবার থাকবেন মহারাজ। আইসিসি সমীকরণ কি সৌরভের পক্ষেই যাবে, বোঝা যাবে এই বৈঠকের পরই।