সীমান্তে সেনা জওয়ান শহিদ হয়েছে। চিনা সেনাদের নৃশংসতার শিকার হয়েছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষীরা। এরপরেই গোটা দেশে আওয়াজ উঠে গিয়েছে, চিন হঠাও। আর্থিকভাবে প্রতিবেশী দেশকে ধাক্কা দিতেই চিনা পণ্য বয়কটের ডাক উঠে গিয়েছে। তারপরেই বিসিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হল, আইপিএল এর স্পন্সরশিপ চুক্তি খতিয়ে দেখা হবে। আইপিএলের প্রধান স্পনসর চিনা মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা ভিভো।
বোর্ডের বক্তব্য, আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের মিটিংয়ে ভিভোর ৪০০ কোটি টাকার চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে। শুক্রবার, আইপিএলের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে জানানো হয়, "সীমান্তে সংঘর্ষে যেভাবে আমাদের বীর সৈনিকরা শহিদ হয়েছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে আগামী সপ্তাহে আইপিএলের গভর্নিং কাউন্সিলের মিটিং ডাকা হয়েছে। যেখানে আইপিএলের বিভিন্ন চুক্তি খতিয়ে দেখা হবে।"
প্রধান স্পনসর ছাড়াও আইপিএলের অন্যতম স্পন্সরের মধ্যে রয়েছে ডিজিটাল ওয়ালেট সংস্থা পেটিএম। যার অন্যতম ইনভেস্টর আলিবাবা।
এর আগে বোর্ডের সচিব অরুণ ধুমল জানিয়েছিলেন, "ভবিষ্যতে ক্রিকেট পরিকাঠামো তৈরির দায়িত্ব কোনো চীনের কোম্পানিকে দেওয়া হবে না। চুক্তি থাকলেও সেই বন্ধন ছিন্ন করতে দু-বার ভাববে না বোর্ড।”
সেই সঙ্গে কার্যত হুঙ্কার দিয়েই বোর্ডের এই প্রভাবশালী কর্তা জানান, "কেন্দ্রীয় সরকার যদি এদেশে চিনা দ্রব্য এবং কোম্পানি নিষিদ্ধ করে, তাহলে আমরা সেই নির্দেশ হাসি মুখেই মেনে নেব। কারণ, জনগণের সেন্টিমেন্ট নিয়ে বোর্ড ওয়াকিবহাল। ভারতীয় হিসাবে আমরাও চাই ওদের শিক্ষা দেওয়া হোক। ওদের অর্থনীতিতে আঘাত হানা বা চিনা দ্রব্য বর্জন করা- যাই হোক না কেন!”
যদিও সেই সময় অরুণ ধুমল চিনা স্পনসরশিপের পক্ষেই সওয়াল করেন। তাঁর যুক্তি ছিল, "আমাদের প্ৰথমে দুটো জিনিসের তফাৎ বুঝতে হবে- চিনা কোম্পানিগুলো স্পনসর হওয়া এবং চিনকে সমর্থন করা। স্পনসরের ক্ষেত্রে আমরা একটা চিনা কোম্পানির কাছ থেকে টাকা নিচ্ছি, টাকা দিচ্ছি না।”
২০১৮ সালে পাঁচ বছরের চুক্তিতে ২১৯৯ কোটি টাকার বিনিময়ে আইপিএলের সঙ্গে চুক্তি করে ভিভো। ধুমল বলছিলেন, “এই টাকার ৪২ শতাংশ অর্থ কেন্দ্রীয় সরকারকে কর বাবদ দেওয়া হয়। এভাবে কিন্তু দেশকেই সমর্থন জানানো হচ্ছে। এদেশের টাকা এখানেই থাকছে। ক্রিকেটের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারকেও সাহায্য করা হচ্ছে। চিনের কোম্পানীগুলো এখানে ফোন বিক্রি করে সেই অর্থ চিনে নিয়ে চলে যাচ্ছে। যদি সেই টাকা আমরা স্পনসর বাবদ না নিই, তাহলে সব টাকাই দেশ থেকে বেরিয়ে যাবে।"
আপাতত আগামী সপ্তাহে ভিভো, পেটিএম এর স্পনসরশিপ বাতিলের পথে বিসিসিআই হাঁটে কিনা, সেটাই দেখার।