গত শুক্রবার থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে কাবাডির মহাযজ্ঞ। সৌজন্যে প্রো-কাবাডি সিজন সিক্স। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে চলবে কর্পোরেট কাবাডির এই আসর। প্রো-কাবাডি এবার ছ’বছরে পা দিয়েছে। প্রথম দু’তিনটে মরসুম শহরবাসীর থেকে উপচে পড়া ভালবাসা পেয়েছে কাবাডির এই ফ্র্যাঞ্চাইজি ভিত্তিক টুর্নামেন্ট। এবার কলকাতায় ১২ দলীয় কাবাডি কিছুটা দেরিতেই হচ্ছে। অন্যান্যবারের আরও মাস দু-তিনেক আগেই হয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে দু’টো বিষয় অবশ্যই ভাবিয়েছে আয়োজক থেকে প্লেয়ারদের। একে তো শীতের কলকাতা। তার ওপর রাতের দিকে ম্যাচ। মানুষ আসবেন তো?
ডিসেম্বরের শেষটায় রাতের দিকে তাপমাত্রা বেশ দাপটেই ব্যাট করে। লেপের হাতছানিকে উপেক্ষা করে কাবাডি দেখতে কি আদৌ নেতাজী ইন্ডোর মুখী হবে শহরবাসী? গত দু’দিনে উত্তরটা পেয়ে গিয়েছে প্রো-কবাডি। সংখ্যার হিসেবটা আয়োজকদের কাছেও এই মুহূর্তে নেই যে, ইন্ডোরে ঠিক ক’জন মানুষ খেলা দেখতে এসেছেন। কিন্তু এটা বলা যেতেই পারে যে শীতের রাতকে থোড়াই কেয়ার বলেই এগিয়ে চলেছেন কলকাতা ও রাজ্যবাসী। গ্যালারিতে কখনও ডিজে-র মিউজিকে দুলে উঠছেন সমর্থকরা, তো কখনও সাইকেডেলিক লাইটের আলোয় তুলছেন সেলফি। এর মাঝে বলিউডের নায়িকাকে এক ঝলক দেখার প্রয়াস তো আবার রেফারির সিদ্ধান্তে উষ্মা। প্রো-কাবাডির কলকাতা লেগের বাকি আরও পাঁচ দিন। কিন্তু এখনই বলা যায় টুর্নামেন্ট হিট।
আরও পড়ুন: শহরে ইলিশের খোঁজে পদ্মাপারের ‘বেঙ্গল ওয়ারিয়র’ জিয়াউর
প্রো-কাবাডির এক আয়োজক বললেন, "দেখুন রাতের ম্যাচে অভ্যস্ত শহরবাসী। অতীতে আমরা জনপ্লাবন দেখেছি। কিন্তু শীতের মধ্যেও এত মানুষ খেলা দেখতে আসছেন, এটা দেখে ভাল লাগছে। জনসমর্থন প্রত্যাশিত ছিল। এবার বাংলা দারুণ কাবাডি খেলছে। ওরা প্লে-অফে পৌঁছে গিয়েছে। ফলে রাজ্যের মানুষ সাপোর্ট করবেই। কলকাতার একটা আলাদা স্পিরিট রয়েছে।" বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের অলরাউন্ডার অমরেশ মণ্ডলও বলছেন শহরবাসীর ভালবাসায় তাঁরা মুগ্ধ।
রবিবার দাবাং দিল্লির বিরুদ্ধে নামার কয়েক ঘণ্টা আগে হোটেল থেকে ফোনে বললেন, "শীতের জন্য একটু হলেও সমর্থকদের সংখ্যায় প্রভাব পড়েছে। কিন্তু তাও এতো মানুষ আমাদের সাপোর্ট করতে আসছেন, দারুণ লাগছে। সবচেয়ে ভাল লাগছে, এবার অনেক বাচ্চারাও আসছে খেলা দেখতে। বোঝা যাচ্ছে, খেলাটা খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। চাই মানুষ এভাবেই আমাদের ভালবাসুন। ওঁদের সমর্থনেই আমরা প্লে-অফে পৌঁছে গিয়েছি। সব ম্যাচ জিতে টেবিল টপার হয়েই শেষ করতে চাই। মানুষ পাশে থাকলে অবশ্যই চ্যাম্পিয়ন হতে পারব।"
শনিবার বেঙ্গল ওয়ারিয়র্সের খেলা দেখতে আসার কথা ছিল অভিনেতা অক্ষয় কুমারের। দলের অন্যতম মালিক শেষ পর্যন্ত কর্মব্যস্ততায় সুরজিতদের ম্যাচে থাকতে পারেননি। আক্কিকে না-পেলেও নেতাজী ইন্ডোর পেয়েছিল নীতু চন্দ্রাকে। পাটনা পাইরেটসের সমর্থনেই হাজির ছিলেন ‘গরম মশালা’ ছবিতে অক্ষয়ের বিপরীতে অভিনয় করা এই নায়িকা। পাটনার হয়ে বারবার ভিআইপি স্ট্যান্ড থেকে চিয়ার করলেন তিনি। গতবারের চ্যাম্পিয়ন পাটনাকে হারিয়েই প্লে-অফের টিকিট পাকা করেছে বঙ্গযোদ্ধারা। ৩৯-২৩ ব্যবধানে ম্যাচ জিতেছেl। ব্যাক-টু-ব্যাক ম্যাচ জিতলেন জগদীশ কুম্বলের শিষ্যরা। তাঁর মতে এটাই মরসুমের সেরা পারফরম্যান্স তাঁদের।