এএফসির গ্রুপ পর্বে এটিকে মোহনবাগানকে হারানোর মত কোনও প্রতিপক্ষ খুঁজে পাচ্ছেন না। ২৪ ঘন্টা আগে বাঙালিদের দিয়ে তাঁর গড়া একাদশ পূর্ণ শক্তির বিদেশিদের দিয়ে গড়া সবুজ মেরুন একাদশকে হারালেও।
সন্তোষ ট্রফিতে বাংলাকে খেতাবের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে বলছিলেন, "এটিকে মোহনবাগান নিঃসন্দেহে এএফসির গ্রুপ পর্বে ফেভারিট দল। গোকুলাম, বসুন্ধরা হোক বা মাজিয়া- ওঁদের হারানোর মত অস্ত্র কারোরই নেই। প্ৰথম ম্যাচেই গোকুলামকে অন্তত তিন গোলে ওড়াবে এটিকে মোহনবাগান।"
আরও পড়ুন: বাবা-মা’কে আর কাজে বেরোতে দেবেন না! সরকারি চাকরি পেয়েই ঠিক করলেন মনোতোষ
সন্তোষের পরে প্রস্তুতি ম্যাচেও হৃদয় হয় করা ফলাফল। রঞ্জন ভট্টাচার্য অবশ্য বাংলার ছেলেদের পারফরম্যান্সকে একদমই ফ্লুক বলতে নারাজ। বলছিলেন, "মাঠে ফেরান্দোর সঙ্গে ট্যাকটিক্যাল লড়াই হল। আমি এই ম্যাচে নামার আগে রীতিমত চর্চা করেছি ফেরান্দোর স্ট্র্যাটেজি নিয়ে। ফেরান্দোও আমাদের বেশ কয়েকটা ম্যাচের ক্লিপিংস সাজিয়ে দল নামিয়েছিল। আর ম্যাচ যে ওঁরা হালকাভাবে নেয়নি, ম্যাচ চলাকালীন ওঁর অভিব্যক্তিতেই স্পষ্ট। জলের বোতলেও বাগান কোচকে লাথি মারতে দেখেছি। দুই অর্ধ মিলিয়ে স্কোয়াডের সমস্ত ফুটবলারকেই ফেরান্দো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে নামাল। জানতাম ওঁদের উইংব্যাকরা প্রান্ত ধরে ওভারল্যাপ করে না। কাট করে মিডল দিয়ে এটাকিং থার্ডে পৌঁছয়। সেটা আটকে দিই বাসুদেব, তন্ময়, নবিদের দিয়ে।"
ফেরান্দোর সঙ্গে জার্সি বিনিময় কোচ রঞ্জন ভট্টাচার্যের (এটিকেএমবি মিডিয়া)
"আমার রণকৌশলই ছিল ওঁদের হতাশ করে দেওয়া। প্ৰথম থেকেই রে রে করে আক্রমণে যাওয়ার বদলে আমরা অপেক্ষা করছিলাম। জানতাম, ৬০-৭০ মিনিট ওঁদের রুখে দিলেই হতাশ হয়ে আক্রমণে লোক বাড়াবে। সেই সময়েই কাউন্টার এটাকে গোল করে আসা- এই স্ট্র্যাটেজিতেই আমরা তিনটে সুযোগ পেয়ে একটাতে গোল করে দিই।"
যুবভারতীতে দুই দলের ফটোসেশন (এটিকেএমবি মিডিয়া)
বাঙালি ছাত্রদের গর্বিত পারফরম্যান্সে খুশি হওয়ার পরই হেডস্যার সুসংবাদ পেয়েছেন ম্যাচের পরে। স্বয়ং ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ফোন করেছিলেন রঞ্জন ভট্টাচার্যকে। তবে ম্যাচের সময়ে তিনি ফোন ধরতে পারেননি। পরে কলব্যাক করতেই শোনেন দুই ছাত্র- দিলীপ, মনোতোষকে রাজ্য সরকার চাকরির ব্যবস্থা করেছে।
আরও পড়ুন: ইস্টবেঙ্গল অফার প্রত্যাখ্যান ISL স্বপ্নে শান দিতে! বড় দলের ডাকের অপেক্ষায় রাজমিস্ত্রি-পুত্র মনোতোষ
সেই উচ্ছ্বাসের রেশ গলায় মেখেই রঞ্জনবাবু বলছিলেন, "ক্রীড়ামন্ত্রী পুরো বিষয়টি আমার মাধ্যমেই কমিউকেট করছিলেন। আমিই দিলীপ, মনোতোষের নম্বর দিই। আমাকে উনি একান্ত আলাপচারিতার বলেন, 'হার্ড লাক রঞ্জন। ২৬ হাজার দর্শকের সামনে দল যা ফুটবল খেলেছে, কোনও কথা হবে না। মন খারাপ কোরো না।"
বাংলার গর্বিত হেড স্যার যেন নতুন শৃঙ্গজয়ের অক্সিজেন পেয়ে যান।