বিহার নির্বাচন শেষ। সরকার গড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না পাওয়া গেলেও, এবার বিহার নির্বাচনে মহাগটবন্ধন জোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ছিলেন লালু-পুত্র তেজস্বী যাদব। বুথ ফেরত সমীক্ষায় তেজস্বীকেই বিহারের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কার্যত বলে দেওয়া হয়েছিল। সংখ্যাগরিষ্ঠ সিংহাসন পেয়ে মসনদ দখল করবে আরজেডি-কংগ্রেস জোট। এমনটাই ইঙ্গিত দেওয়া হয়। তবে ইভিএম গণনায় কিন্তু অন্য বার্তা দিয়েছে।
নীতিশ কুমারকে সরিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে থাকা তেজস্বী কিন্তু রাজনীতিতে নাম লেখানোর আগে চুটিয়ে ক্রিকেট খেলতেন। আইপিএলের মত মেগা টুর্নামেন্টে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের জার্সি চাপাতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। অনেকেই ভুলে গিয়েছেন ক্রিকেটার তেজস্বীর এই ক্রিকেট-প্রেম।
আরো পড়ুন: সামনেই ফের আইপিএল! নিলামে যে পাঁচ ক্রিকেটারকে নিয়ে কাড়াকাড়ি হবে, জানুন
রাজধানীতে মথুরা রোডে থাকার সময় পড়াশুনা করতেন দিল্লি পাবলিক স্কুলে। লম্বা চুলের তেজস্বীর প্রথম প্রেম ছিল ক্রিকেট। তাঁর ক্রিকেটের প্রতি প্যাশন দেখে অনেকেই ভেবেছিলেন নামি ক্রিকেটার হতে চলেছেন তিনি। তবে সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যায় তাঁর। পড়াশুনাতেও বেশিদূর এগোননি। ক্লাস নাইনে পড়ার সময়েই স্কুলছুটদের তালিকায় নাম লেখান।
টানা চার বছর আইপিএলে দিল্লি ডেয়ারডেভিলস স্কোয়াডের সদস্য ছিলেন তিনি। মিডল অর্ডারে ব্যাট করার পাশাপাশি সুইং বল করাতেও দক্ষ ছিলেন। তবে চার বছরে একবারও প্রথম একাদশে খেলার সুযোগ জোটেনি তাঁর।
পুত্রের টানা ব্রাত্য থাকার বিষয়ে একবার লালু প্রসাদ যাদবকে প্রশ্ন করা হয়। লালুর সরস উক্তি ছিল, অতিরিক্ত ক্রিকেটার হিসেবে মাঠে ড্রিংকস বয়ে দেওয়ার জন্য তেজস্বীকে দলে নেওয়া হয়েছে।
আইপিএলে না খেলতে পারলেও প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে একটা ম্যাচে খেলেছিলেন তিনি। ২০০৯ সালে ঝাড়খন্ড দলের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয় তাঁর। রঞ্জি ট্রফি প্লেট লিগে রাঁচিতে বিদর্ভের বিরুদ্ধে খেলেছিলেন তিনি। সেই ম্যাচে মাত্র ১ রান করেছিলেন তিনি। লেগ বিফোর আউটের শিকার হন তিনি। বিদর্ভের প্রথম ইনিংসে পাঁচ ওভার বল করে ১৭ রান খরচ করেছিলেন সেই ম্যাচে। উইকেট পাননি একটিও। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে তেজস্বীর অবদান ছিল মাত্র ১৯ রান। সেই ম্যাচই ছিল তাঁর কেরিয়ারের প্রথম ও শেষ ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ।
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট বাদ দিলে দুটো লিস্ট-এ (ঘরোয়া ওডিআই ম্যাচ) এবং চারটে টি২০ ম্যাচেও খেলেছেন তিনি। লিস্ট এ এবং টি২০-তে তেজস্বীর সর্বোচ্চ স্কোর যথাক্রমে ৯ এবং ৩। একটি উইকেট রয়েছে লিস্ট-এ ম্যাচে। আসলে তেজস্বীর কেরিয়ার কখনই কাঙ্খিত মাত্রা ছুঁতে পারেনি। সুযোগ না পেয়ে এরপরেই লালু-পুত্র নাম লিখিয়েছেন রাজনীতিতে। ক্রিকেটে ব্যর্থ তেজস্বী এখন রাজনীতির ময়দানে রান কুড়োতে পারেন কিনা, সেটাই দেখার।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন