Mahammed Siraj-BCCI: জন্মদিন বলে কথা। বুধবার ক্রিকেটের সীমানা ছাড়িয়ে তাই সে নিয়েই ব্যস্ততায় কাটালেন টিম ইন্ডিয়ার পেসার মহম্মদ সিরাজ। তারই মধ্যে ফিরে গেলেন নিজের অতীতে। একসময় ক্যাটারিংয়ের কাজ করতেন। ২০১৯-এ অভাবের তাড়নায় ছাড়তে চেয়েছিলেন ক্রিকেটও। সিরাজের সেই সব দিনের কথা নিয়ে বলা এক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁরই জন্মদিনে প্রকাশ করেছে ভারতীয় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা বিসিসিআই।
সেই ভিডিওয় নিজের শহর হায়দরাবাদ দেশবাসীকে ঘুরিয়ে দেখিয়েছেন ভারতীয় বোলিংয়ের বর্তমান আইকন। জানিয়েছেন, কোথা থেকে তিনি তাঁর খেলা শুরু করেছিলেন। ফাঁকা পেলেই কোথায় সময় কাটাতেন। আল্লাহভক্ত সিরাজের কথায়, 'হায়দরাবাদে নামলেই প্রথমে বাড়ি ফেরার কথা ভাবি। তারপর ইদগা ময়দানে যাই। কারণ, বিশ্বে যেখানেই যাই না কেন, ইদগা ময়দানের মত শান্তি কোথাও পাই না। এখান থেকেই আমি খেলা শুরু করেছিলাম।'
প্রকাশিত ভিডিওয় নিজের অতীতে স্মৃতিপটে তুলে ধরে সিরাজ বলেছেন, 'ক্যাটারিংয়ে কাজ করতাম। বাড়ির লোকজন বলত পড়তে। কিন্তু, আমার ক্রিকেটটাই বেশি ভালো লাগত। ভাড়াবাড়িতে থাকতাম। বাবাই ছিল একমাত্র রোজগেরে। তাই ক্রিকেট থেকে রোজগার হলে ভালো লাগত। একটা সেঞ্চুরি বা ২০০ টাকা পেলে, সেটাতেই আমার মন ভরে যেত। পুরো টাকা অবশ্য খরচ করতাম না। ১০০-১৫০ টাকা তো বাড়িতেই দিয়ে দিতাম। একবার তো রুমালি রুটি বানাতে গিয়ে হাতই পুড়ে গেছিল। তবে, তাতে কোনও খেদ নেই। কারণ, এতখানি কষ্ট করেছি বলেই আজ এই জায়গায় আসতে পেরেছি।'
এতেই না থেমে ওই ভিডিওয় সিরাজ আরও বলেছেন, '২০১৯-২০ সালে তো ঠিকই করে ফেলেছিলাম, খেলাটাই ছেড়ে দেব। কিন্তু, সত্যি বলতে কী, কঠোর পরিশ্রম করলে কোনওদিন তা বৃথা যায় না। সেদিন ফল না পেলেও, আজ হোক বা কাল, পরিশ্রম আপনার কাজে লাগবেই।'
সিরাজ পুরোনো সেই সব দিনের কথা না ভুললেও, তাঁর আর্থিক পরিস্থিতি কিন্তু আজ বদলে গেছে। প্রতিম্যাচে কয়েক লক্ষ টাকা পান। বিসিসিআইয়ের বার্ষিক চুক্তি থেকে পান পাঁচ কোটি টাকা। মাত্র দুই মাসের আইপিএল থেকেই আয় করেন সাত কোটি টাকা। সেদিনের ১৫০-২০০ টাকা আয় করা ছেলেটার কাছে আজ বিলাসবহুল গাড়ি আছে। ভিডিওয় দেখা গেল, নিজেই সেই গাড়ি চালিয়ে ইদগাহ মাঠে গেলেন টিম ইন্ডিয়ার পেসার। ছোটবেলায় সেখানেই তিনি বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। ছোটবেলার সেই বন্ধুরা আজও তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। মাঠেই তাঁর হাজির ছিলেন।
আরও পড়ুন- কোহলি-রোহিতদের টাকা দেখে জ্বলে-পুড়ে খাক ইংরেজ ক্রিকেটাররা! বিস্ফোরক মন্তব্য এবার সানির
তবে, সিরাজ যে একেবারে না-খেতে পাওয়া ঘরের ছেলে ছিলেন, তা কিন্তু, নয়। তাঁর বাড়িতে সেই সময়ই অটোরিক্সা, প্ল্যাটিনা বাইক ছিল। যদিও সেই বাইক ধাক্কা দিয়ে স্টার্ট করতে হত বলেই দাবি ভারতীয় পেসারের। যদিও সেসব দিনের সঙ্গে আজকের সিরাজের জীবনের কোনও তুলনাই চলে না। ১৯-২০ বছর বয়সেও ক্যাটারিংয়ের কাজ করা ছেলেটার বুধবার ছিল ৩০তম জন্মদিন।