Advertisment

সৌরভের অপসারণেও অন্য সমীকরণ! BJP অধ্যুষিত বোর্ডে সবথেকে প্রভাবশালী কংগ্রেসের এই সাংসদ

কংগ্রেসের সাংসদ হয়েও বিজেপি-বোর্ডে বরাবর কাছের এই হাইপ্রোফাইল ব্যক্তি

author-image
IE Bangla Sports Desk
New Update
NULL

তিনি কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের সাংসদ। তবে বিজেপি নেতাদের সঙ্গেও দহরম মহরম কম নয়। সেই জন্য এখনও বিজেপি 'অধ্যুষিত' বোর্ডে বহাল তবিয়তে বিরাজমান। বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যয়ের অপসারণ ঘিরে যখন তোলপাড় দেশের রাজনীতি, তখন রাজীব শুক্লা যেন বোর্ডে মিলিয়ে দিচ্ছেন সমস্ত রাজনীতি। আইপিএল চেয়ারম্যান ছিলেন। এবার ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে একাই মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মঙ্গলবারের এজিএম-এ রাজীব শুক্লার সহ-সভাপতিত্ব প্রাপ্তিতে সরকারি শিলমোহর পড়ার কথা।

Advertisment

সাংবাদিক থেকে রাজনৈতিক নেতা হয়েছেন। সেই রাজীব শুক্লাই বোর্ডে সমস্ত মরশুমে ভরসা জুগিয়েছেন। ৬৩ বছরের রাজীব ২০১১ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত আইপিএলের কমিশনার ছিলেন। ২০২০-তে সর্বসম্মতভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। বোর্ডের ক্ষমতায় যেই আসুন- জগমোহন ডালমিয়া, শরদ পাওয়ার, শশাঙ্ক মনোহর, এন শ্রীনিবাসন, অনুরাগ ঠাকুর, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা জয় শাহ- সকলেই রাজীব শুক্লার জন্য জায়গা বরাদ্দ রেখেছেন।

আরও পড়ুন: এই ৫ কীর্তিতেই বোর্ডে ‘অমর’ প্রেসিডেন্ট সৌরভ! কুৎসা করেও ঢাকা যাবে না এই হিসেব

ক্ষমতার কাছাকাছি থাকা রাজীব শুক্লার বিষয়ে একবার বোর্ডের প্রাক্তন সচিব সঞ্জয় প্যাটেল বলেছিলেন, যে কোনও কাজে ওঁর ওপর ভরসা করা যায়। "উনি আগাম আঁচ করতে পারেন কোনদিকে হাওয়া বইছে। মনে হয় একমাত্র রাজীব শুক্লাই এই দক্ষতা অর্জন করতে পেরেছে। তাছাড়া যে কোনও কাজ সম্পন্ন করতে ওঁর জুড়ি মেলা ভার। মনে আছে, আমাদের কোনও একটা বিষয়ে সরকারি অনুমোদনের বিষয় ছিল। আমরা সঙ্গেসঙ্গেই শুক্লার সঙ্গে যোগাযোগ করি। এরকম কোনও পরিস্থিতি হলেই আমাদের ফোনে 'ডায়াল শুক্লা' বার্তা আসে।"

২০০০ সালে অখিল ভারতীয় লোকতান্ত্রিক কংগ্রেস পার্টির তরফে সাংসদ হয়েছিলেন। যে দল পরে কংগ্রেসের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে পড়ে। এরপরেই ক্রীড়া প্রশাসনে চলে আসেন তিনি উত্তরপ্রদেশ রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার মাধ্যমে। উত্তরপ্রদেশ ক্রিকেট সংস্থায় সেই সময় সর্বেসর্বা ছিলেন জ্যোতি বাজপেয়ী। তিনি বোর্ডে কানপুরের বাসিন্দা শুক্লাকে প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠাতেন।

আরও পড়ুন: সৌরভ সরতেই ৯৫৬ কোটি টাকা ক্ষতির মুখে BCCI! ‘মাথার চুল ছেঁড়ার জোগাড়’ জয় শাহদের

বোর্ডে ক্ষমতার গন্ধ পেয়ে আর ফিরে তাকাতে হয়নি শুক্লাকে। শরদ পাওয়ার ২০০৫-এ বোর্ডে ক্ষমতায় আসার পরে বেসরকারিভাবে।বোর্ডের মুখপত্র বানিয়ে দেন রাজীব শুক্লাকে। মিডিয়ার সামনে সড়গড় শুক্লা সহজেই বোর্ডের আস্থা আদায় করে নিয়েছিলেন। কংগ্রেসের সাংসদ হওয়ার সুবাদে দিল্লির ক্ষমতার অলিন্দেও সহজেও ঢুকে পড়েন তিনি। শেষে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় তিনিই বোর্ড এবং কেন্দ্রীয় সরকারের লিংকম্যান হয়ে পড়েন। বোর্ডের প্রাক্তন শীর্ষকর্তা রত্নাকর শেঠি বলছিলেন, "প্রয়াত অরুণ জেটলির ঘনিষ্ঠ ছিলেন রাজীব শুক্লা। ২০০০ সাল থেকে বিভিন্ন ভূমিকায় বোর্ডে একাধিক দায়িত্ব সামলেছেন রাজীব শুক্লা।

দলমত নির্বিশেষে সমস্ত রাজনৈতিক পার্টির কাছের লোক হয়ে উঠেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হোক বা অমিত শাহ, প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, মনমোহন সিং- রাজীব শুক্লা যেকোনই সময়ে যে কোনও হেভিওয়েট ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ সারতে পারেন। আর কেন্দ্রীয় সরকার সংক্রান্ত ক্ষেত্রে তাই তিনি বোর্ডের ক্রাইসিস ম্যান হয়ে উঠেছেন বছরের পর বছর।

আরও পড়ুন: দাদাকে বোর্ডে চূড়ান্ত অপমান শ্রীনিবাসনের, মুখ খুলে পাল্টা ছোবল সৌরভেরও

তাঁর সহজ সরল ব্যক্তিত্বও তাঁকে সকলের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছিল। বোর্ডের প্রাক্তন সচিব নিরঞ্জন শাহ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলছিলেন, "উনি মোটেই প্রতিহিংসাপরায়ণ নন। কোনও লবিবাজি করেন না। ওঁর চোখে সকলেই সমান। সকলকে খুশি রাখতে পারেন তিনি।"।

বোর্ড একাধিক নেতিবাচক কারণে একাধিকবার শিরোনামে উঠে এসেছে অতীতে। তবে রাজীব শুক্লা বরাবর নিজেকে সমস্ত বিতর্ক থেকে দূরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। ২০১৮-য় একটা স্টিং অপারেশনে একবার যদিও বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর আপ্ত সহায়কের বিরুদ্ধে। তিনি সেই সময়ে আইপিএল চেয়ারম্যান ছিলেন। যাইহোক, সেই ব্যক্তি পরে পদত্যাগ করেন।

Sourav Ganguly BCCI
Advertisment