বহু আগেই গোটা ক্রিকেট দুনিয়াতে ফ্রাঞ্চাইজি ক্রিকেটের চল শুরু হয়েছে । এই উপমহাদেশে বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান নিয়মিত ফ্রাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট আয়োজন করে চলেছে। কোনও সন্দেহ নেই আইপিএল তামাম দুনিয়ার মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয়। সব ক্রিকেটারই এই লিগে খেলার জন্য উন্মুখ হয়ে থাকেন সারা বছর। এখান থেকে যেমন রাতারাতি কোটিপতি হওয়ার পাসওয়ার্ড পাওয়া সম্ভব, তেমনই একই সঙ্গে অনেক ক্রিকেটারের উত্থানের মঞ্চও তৈরি হয়েছে আইপিএল থেকে। ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা, অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়াটসন ও স্টিভ স্মিথ কিংবা পাকিস্তানের সোহেল তানভীররা নজর কেড়েছিলেন আইপিএল থেকে।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এখনও সেই উচ্চতায় পৌঁছোতে পারেনি। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘরোয়া লিগ হলেও এখনও গোটা ক্রিকেটবিশ্বের কাছে সেই অর্থে আবেদন রাখতে পারেনি। বিপিএলের জনপ্রিয়তা বাংলাদেশের গণ্ডি ছাপিয়ে যেতে পারেনি। এটা অস্বীকার করলেন না বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালনা বিভাগের প্রধান আক্রম খান। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে সাফ জানিয়ে দেন, "দেখুন, আইপিএল যে একনম্বর এটা সকলেই জানে। কারণ ভারতের ক্রিকেট বাজার অনেক বড়। এখানে দুনিয়ার শীর্ষস্থানীয় ক্রিকেটাররা অংশগ্রহণ করে। আইপিএলের প্রভাব এতটাই যে টুর্নামেন্ট চলাকালীন অন্য কোথাও কোনও টি-টোয়েন্টি হয় না। এই প্রভাব, ব্যপ্তিতেই আইপিএল অনেক এগিয়ে।"
আরও পড়ুন বাংলাদেশেও এবার গোলাপি টেস্ট, সৌরভের শহরে ঢোকার আগেই জানালেন আক্রম
আইপিএল থেকে বিপিএল কোথায় পিছিয়ে রয়েছে? পদ্মাপাড়ের 'বিগম্যান' আক্রম খান মনে করেন, আইপিএলের সঙ্গে বিপিএলকে মেলানো যাবে না। তাঁর কথায়, "ভারতে ক্রিকেট অনেক জনপ্রিয়। একই সঙ্গে ওদের মার্কেটও বড়। আর্থিকভাবে ওরা অনেক শক্তিশালী। সবকিছু মিলিয়ে ওরা আমাদের চেয়ে ঢের এগিয়ে রয়েছে। প্রত্যেক ক্রিকেটার ওখানে খেলার জন্য আগ্রহ দেখায়। ভারত এই বাড়তি সুবিধা পায়, যেটা বাংলাদেশের নেই।"
বাংলাদেশের ক্রিকেট মানে ঘুরেফিরে ঢাকা আর চট্টগ্রাম। এই দুই ভেন্যুর মধ্যে আটকে আছে আন্তর্জাতিক কিংবা ঘরোয়া ক্রিকেট। যদিও গত কয়েক বছর হলো সিলেটও বিপিএলের বেশ কিছু ম্যাচ আয়োজন করা হচ্ছে। কিন্তু এত বড় টুর্নামেন্টকে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তিনটি ভেন্যু কী যথেষ্ট? বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন বিভাগের দায়িত্বে থাকা আক্রম খান জানিয়ে দিলেন, "ভেন্যু আমাদের একটা বেড়েছে। আস্তে আস্তে বাড়বে। আমাদের একটু সময় লাগবে। ভারতের সঙ্গে আমাদের ক্রিকেটের তুলনা করলে তো আর হবে না।"
আরও পড়ুন নেতা সৌরভের প্রথম প্রতিপক্ষই অভিষেক টেস্টে নামা বাংলাদেশ, কোথায় এখন তাঁরা
আইপিএল যে এত জনপ্রিয় তার অন্যতম কারণ সেখানে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ম্যাচ হয়। এ শহর থেকে ও শহরে খেলা হয় বলে গোটা ভারতই আইপিএল উপভোগ করে। শুধু তাই নয়, তাদের শহরকেন্দ্রিক সমর্থকগোষ্ঠীও তৈরি হয়। বিপিএল এই জায়গায় পিছিয়ে। শুধু ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটই খেলা দেখছে। বাকি শহরগুলো বঞ্চিত হচ্ছে। আক্রম জানিয়ে দিলেন আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে বিপিএলও হোম অ্যান্ড অ্যাওয়েতে চলে যাবে, "এখন তো মোটামুটি শুরু হয়েছে। একটু অপেক্ষা করতে হবে। আশা করি, চার-পাঁচ বছরের মধ্যে হয়ে যাবে। ভারতের মতো আমরাও একসময় ওই স্তরের ক্রিকেটার উপহার দেব।"