ছেলে অটিস্টিক, দেখতেও পায় না চোখে। বছর বারোর নিকোলাস বোঝে শুধু ফুটবল, তার কাছে ভালবাসা মানে নেইমার জুনিয়র। নিকোলাসের মা সিলভিয়া গ্রিকো চেয়েছিলেন প্রতিবন্ধকতা যেন সন্তানের ফুটবল প্রেমে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়। ছেলের কথা ভেবেই ৫৬ বছরের সিলভিয়া হয়ে গিয়েছেন ‘ধারাভাষ্যকার’।
ছেলের সঙ্গে গ্যালারিতে বসেই তাকে ম্যাচের সব লাইভ ধারা বিবরণী দেন সিলভিয়া। এএফপি-তে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিলভিয়া বলছেন, "আমি সবিস্তারে সবটা বুঝিয়ে বলি। কোন প্লেয়ার শর্ট স্লিভ পরেছে, বা কার চুলের বা বুটের কী রঙ।” ব্রাজিলিয়ান এই মা-ছেলের গল্প এখন নেট দুনিয়ায় ভাইরাল। সম্প্রতি পালমেইরাস ও বোটাফোগোর ম্যাচের সময়ও নিকোলাসের জন্য সিলভিয়াকে ধারা বিবরণী দিতে দেখা গিয়েছে। তিনি জানাচ্ছেন, “আমার আবেগটাও ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করি। যা দেখি সবটাই বলি, এমনকি রেফারিং নিয়ে অভিযোগটাও জানাই। আমি তো আর পেশাদার নই। কিন্তু চেষ্টা করি আমার মতো করে।”
আরও পড়ুন: FIFA 2018 World Cup Final: কোটি-কোটি হৃদয়ে রাজ করছেন ক্রোট প্রেসিডেন্ট
নিকোলাস-সিলভিয়া এখন ব্রাজিলে সেলিব্রিটি হয়ে গিয়েছেন। একাধিক টিভি অনুষ্ঠানে এসেছেন তাঁরা। এমনকি পালমেইরাসের ট্রেনিং সেশনেও হাজির ছিল মা-ছেলের জুটি। নিকোলাসের বাবা ও বোন কিন্তু পালমেইরাসের সমর্থক নন, তাঁরা অন্য দলকেই সাপোর্ট করেন। কিন্তু ফুটবল সংক্রান্ত পারিবারিক বিবাদ মিটিয়েছেন খোদ নেইমারই। পিএসজি সুপারস্টারের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে দেখা হয়েছিল নিকোলাস-সিলভিয়ার। সেখানে নেইমার কাঁধে তুলে নিয়েছিল নিকোলাসকে। আর নিকোলাস নেইমারের চুলে হাত দিয়ে তাঁকে অনুভব করার চেষ্টা করেছিল। নেইমারই তখন বলে দিয়েছিলেন যে, নিকোলাসের পালমেইরাসকেই সাপোর্ট করা উচিত।
ফুটবলে এই ঘটনা প্রথম নয়। গত বছর রাশিয়ায় বিশ্বকাপও দেখেছিল, কীভাবে কলম্বিয়া বনাম পোলান্ড ম্যাচে একজন কলম্বিয়ান ফ্যান হাত নাড়িয়ে তার বধির বন্ধুকে খেলাটা বুঝিয়েছিলেন। রাতারাতি সেই দৃশ্য ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। একজন ব্রাজিলিয়ান দোভাষী একইভাবে এক দল বধির ফ্যানকে সাও পাওলোতে ফুটবল বুঝিয়েছিলেন।