CAS verdict Inter Kashi as I-League Champions 2024-25: অবশেষে আইনি লড়াইয়ে বিরাট জয় ইন্টার কাশীর (Inter Kashi FC)। বহু জল্পনার অবসান ঘটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রীড়া আদালত (কোর্ট অফ আরবিট্রেশন ফর স্পোর্টস বা CAS) ইন্টার কাশীর পক্ষেই রায় দিল। গত আই লিগ (I-League) মরশুমে চ্যাম্পিয়ন হিসেবে অবিলম্বে ইন্টার কাশীকে ঘোষণা করতে নির্দেশ দিয়েছে ক্যাস। এই রায়ে বড় ধাক্কা খেল সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশন (AIFF)।
গত তিন মাস ধরে আই লিগ চ্যাম্পিয়নশিপ নিয়ে যে বিতর্ক চলছিল, তার অবসান হল। ক্যাসের নির্দেশ অনুযায়ী, ৪২ পয়েন্ট নিয়ে চূড়ান্ত তালিকায় ইন্টার কাশী শীর্ষে থাকবে। চার্চিল ব্রাদার্স পাবে ৪০ পয়েন্ট, রিয়াল কাশ্মীর ৩৭ এবং নামধারী এফসি শেষ করবে ২৯ পয়েন্টে।
মামলা খরচও গুনতে হবে ফেডারেশনকে
মামলার খরচ বহনের ক্ষেত্রেও ক্যাস সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ফেডারেশনকে দিতে হবে মোট খরচের ৫৫ শতাংশ। বাকি ১৫ শতাংশ করে ভাগ করে দেবে চার্চিল ব্রাদার্স, রিয়াল কাশ্মীর এবং নামধারী এফসি। পাশাপাশি, ইন্টার কাশীর আইনি খরচ বাবদ ফেডারেশনকে দিতে হবে ৩০০০ সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ৩.২২ লক্ষ টাকা)। অন্য তিন ক্লাবকে দিতে হবে ১০০০ সুইস ফ্রাঁ (প্রায় ১.০৭ লক্ষ টাকা) করে।
কী নিয়ে তৈরি হয়েছিল বিতর্ক?
গত এপ্রিল মাসে নামধারী এফসি অভিযোগ তোলে যে, ইন্টার কাশী আই লিগের নিয়ম ৬.৫.৬ এবং ৬.৫.৭ লঙ্ঘন করেছে। নিয়ম অনুযায়ী, এক ক্লাব সর্বাধিক ছ’জন বিদেশিকে রেজিস্টার করাতে পারবে এবং কোনও বিদেশিকে মরশুমে দ্বিতীয়বার সই করানো যাবে না যদি তাঁকে আগেই বাদ দেওয়া হয়।
নামধারীর অভিযোগ ছিল, নবম রাউন্ডের আগে স্প্যানিশ স্ট্রাইকার মার্কো বারকোর পরিবর্তে সার্বিয়ার মাতিজা বাবোভিচকে সই করিয়েছিল কাশী। পরে ১৫তম রাউন্ডের আগে আবার বারকোকে দলে নেওয়া হয় জুয়ান পেরেজের জায়গায়। চার্চিল ব্রাদার্স এবং রিয়াল কাশ্মীরও একই অভিযোগে যুক্ত হয়।
ফেডারেশনের আপিল কমিটি সেই দাবি মেনে নিয়ে কাশীর ৪ পয়েন্ট কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। ফলস্বরূপ, চার্চিলকে ২ পয়েন্ট এবং নামধারীকে ৩ পয়েন্ট দেওয়া হয়। এর ভিত্তিতে চার্চিলের পয়েন্ট দাঁড়ায় ৪২ এবং কাশীর পয়েন্ট কমে হয় ৩৭। চার্চিলকে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে এআইএফএফ।
ক্যাস জানাল, নিয়মভঙ্গ হয়নি
তবে ক্যাস এই যুক্তি একেবারেই মানেনি। আদালতের বক্তব্য, ইন্টার কাশী কোনও নিয়ম ভাঙেনি, তাই তাদের পয়েন্ট কাটা যাবে না। অর্থাৎ, কাশীর প্রাপ্ত আসল পয়েন্ট (৪২) বহাল থাকবে।
বিতর্কিত ম্যাচ ও প্রতিবাদ
মূল সমস্যা শুরু হয় ১৩ জানুয়ারির কাশী বনাম নামধারী ম্যাচ নিয়ে। সেই ম্যাচে ০-২ গোলে হারে কাশী। কিন্তু পরে কাশীর পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়, নামধারী ওই ম্যাচে একজন নিষিদ্ধ ফুটবলার ক্লেডসন কার্ভালহো দা সিলভাকে খেলিয়েছে, যিনি আগেই চারটি হলুদ কার্ড পাওয়ায় ওই ম্যাচে নিষিদ্ধ থাকার কথা ছিল। সেই ভিত্তিতে কাশী ফেডারেশনের কাছে আবেদন জানায়।
পুরস্কার বিতরণ নিয়ে বিতর্ক
১৮ এপ্রিল চার্চিল ব্রাদার্সকে চ্যাম্পিয়ন ঘোষণা করে ফেডারেশন। কাশী তার বিরুদ্ধে ক্যাসে যায়। ২৭ এপ্রিল ক্যাস নির্দেশ দেয়, মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ট্রফি বিতরণ করা যাবে না। কিন্তু ফেডারেশন তার আগেই ২১ এপ্রিল গোয়ায় পুরস্কার বিতরণ করে দেয়। পরে ফেডারেশন চার্চিলের কাছে ট্রফি ফেরত চায়।
অবশেষে বিচার পেল ইন্টার কাশী
এই দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর ক্যাসের রায়ে ইন্টার কাশী আই লিগ ২০২৩-২৪ মরশুমের আসল চ্যাম্পিয়ন হিসেবে স্বীকৃতি পেল। আইনি লড়াই শেষে এবার কাশীর কাছে ট্রফি ফিরিয়ে দেওয়া ও ফেডারেশনের ভূমিকা পর্যালোচনা করার সময় এসেছে, এমনটাই মনে করছেন ফুটবল বিশেষজ্ঞরা।