রবিবার মেগা-ফাইনাল! একদিকে ইস্টবেঙ্গল। অন্যদিকে পিয়ারলেস। কার্যত ডেভিড বনাম গোলিয়াথ যুদ্ধ শহরের দুই মাঠে। শক্তি সামর্থ্য বিচার্য হলে ইস্টবেঙ্গল অবশ্যই গোলিয়াথ, পিয়ারলেস ডেভিড। তবে পয়েন্ট তালিকার সমীকরণ মানলে শক্তিশালী ইস্টবেঙ্গল অনেকটাই চাপে। সিএফএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার ব্যাপারে ফেভারিট জহর দাসের পিয়ারলেসই।
ইস্টবেঙ্গল: ১০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে লিগ তালিকায় যুগ্মভাবে শীর্ষে ইস্টবেঙ্গল। তবে গোল পার্থক্যে এগিয়ে পিয়ারলেস। এই ছোট্ট পরিসংখ্যানই চাপে রাখছে আলেহান্দ্রো মেনেন্ডেজের দলকে। কলকাতা লিগে শুরু থেকেই কোচ আলেহান্দ্রো যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে খেলতে চাননি। ডুরান্ডের সঙ্গে সমান্তরালভাবে কলকাতা লিগ শুরু হয়েছিল। ডুরান্ডকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতে চাননি বলে একসময় লাল-হলুদ কোচ দ্বিতীয়সারির দল নামানোর কথা বলেছিলেন। তবে সেনাবাহিনী এবং ক্লাবের চাপে ডুরান্ডে প্রথমসারির দল নামিয়েছেন তিনি। তবে কলকাতা লিগ ও ডুরান্ড- দুই টুর্নামেন্টকেই মূলত আইলিগের প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট হিসেবে দেখেছেন স্প্যানিশ কোচ। তাই পুরো টুর্নামেন্টে কোনও সেট টিম খেলাননি। এটাই মূলত ফারাক করে দিয়েছে একাধিক ম্যাচে। স্টপার পজিশনে বোরহা-মার্তি ক্রেসপির মধ্যে, আপফ্রন্টে বিদ্যাসাগর-কোলাডো-পিন্টুদের নিয়ে পারমুটেশন কম্বিনেশন চালিয়ে গিয়েছেন গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে। তাই দলের ফর্মেশন নিয়েও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছেন। এই নিয়ে সমালোচিতও হয়েছেন তিনি।
পিয়ারলেস: পিয়ারলেসের প্রধান অস্ত্র কোচ জহর দাসের মগজাস্ত্র। নিজে আইজলে থাকার সময়ে পাহাড়ি ফুটবলারদের তুলে এনেছেন। কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করে বিদেশিদের সঙ্গে স্বদেশীদের সঠিক মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। ক্রোমা, এডমন্ড, ক্যালান, জীতেন, পঙ্কজ, দীপেন্দুদের টিম বন্ডিং পিয়ারলেসের সাফল্যের নেপথ্যে। পাশাপাশি বাঙালি ফুটবলাররা পিয়ারলেসের জার্সিতে অসাধারণ খেলছেন- ফুলচাঁদ হোক বা পঙ্কজ, অরূপ, দীপঙ্কর, অভিনব বাগ, নজর কাড়ছেন প্রত্যেকেই। দলকে আপফ্রন্টে দারুণ নেতৃত্ব দিচ্ছেন ময়দানের সুপরিচিত ক্রোমা। এটাই বাকি দলগুলির সঙ্গে ফারাক গড়়ে দিচ্ছে। রবিবার জর্জের ডিফেন্ডার থাকছেন না। এতে অনেকটাই অ্যাডভান্টেজ পিয়ারলেস।
সমীকরণ: কোনও সন্দেহ নেই কলকাতা লিগের ট্রফি জয়ের জন্য ফেভারিট পিয়ারলেসই। ১০ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে লিগ টেবিলের মগডালে জহর দাসের দল। তবে গোলপার্থক্যে অনেকটাই এগিয়ে তারা। ইস্টবেঙ্গলের যেখানে +৭, সেখানে পিয়ারলেস +১১। ম্যাচ শুরুর আগেই চার গোলে এগিয়ে পিয়ারলেস। এদিন যত গোলের ব্যবধানেই জিতুক না কেন পিয়ারলেস, মূল্যবান তিন পয়েন্ট পেলেই কাপ তুলে নেওয়ার মতো পরিস্থিতিতে চলে যাবে তারা। কারণ, গোলের এই ব্য়বধান পেরিয়ে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে জিতে ট্রফি ঘরে ঢোকানো সত্যিই মুশকিল।
কোথায় এবং কখন খেলা: ইস্টবেঙ্গল বনাম কাস্টমস ম্যাচ খেলা হবে ইস্টবেঙ্গল মাঠে। পিয়ারলেস বনাম জর্জ খেলা বারাসত স্টেডিয়ামে। পাশাপাশি এদিনই কালীঘাট এমএস-এর বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলতে নামছে মোহনবাগান। তিনটে খেলাই দুপুর আড়াইটে থেকে শুরু।
ইস্টবেঙ্গল বনাম কাস্টমস (দুপুর ২.৩০, ইস্টবেঙ্গল মাঠ)
পিয়ারলেস বনাম জর্জ টেলিগ্রাফ (দুপুর ২.৩০, বারাসাত স্টেডিয়াম)
মোহনবাগান বনাম কালীঘাট এমএস (দুপুর ২.৩০, মোহনবাগান মাঠ)