কলকাতা নাইট রাইডার্স: ২০২/৬ (২০ ওভার)
চেন্নাই সুপার কিংস: ২০৫/৫ (১৯.৫ ওভার)
এক বল বাকি থাকতেই পাঁচ উইকেটে জয়ী চেন্নাই
ম্য়াচের সেরা: স্যাম বিলিংস
মহেন্দ্র সিং ধোনি ভালবেসে রবীন্দ্র জাদেজাকে স্যার উপাধি দিয়েছিলেন। ব্যাটে-বলে কামাল দেখান বলেই ধোনি স্যার বলে ডাকেন জাড্ডুকে। মঙ্গলবার চিপকে স্যারের ছক্কাতেই কলকাতাকে পাঁচ উইকেটে হারিয়ে ব্যাক-টু-ব্যাক ম্যাচ জিতে নিল ইয়েলো ব্রিগেড। দু বছর পর চিপকে আইপিএল ফিরল এদিন। জিতে প্রত্য়াবর্তন স্মরণীয় করে রাখল চেন্নাই। ২০২ রান তাড়া করে জিতে ব্লকব্লাস্টার ম্য়াচ উপহার দিল হলুদ জার্সিধারীরা।
SIR! VICTORY! #WhistlePodu ???????? #CSKHomeComing #Yellove #CSKvKKR pic.twitter.com/aHmS5xMezl
— Chennai Super Kings (@ChennaiIPL) April 10, 2018
এটাই টোয়েন্টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। আইপিএল-এর অমোঘ টানে গ্যালারির সিট ছেড়ে ওঠা যায় না। বা টিভির সামনে থেকেও নড়া সম্ভব হয় না। শেষ ওভারের আগেও বোঝা যায় না কোন দল হাসবে শেষ হাসি! মঙ্গলবার চিপকে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম চেন্নাই সুপার কিংসের ম্যাচটাও সেরকম। ২০ নম্বর ওভারে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারিত হল। আন্দ্রে রাসেলের মঞ্চে নায়ক হয়ে গেলেন স্যাম বিলিংস, রবীন্দ্র জাদেজারা। এদিন চিপকে ম্যাচের শুরুটা দেখেছিল আন্দ্রে রাসেলের ব্যাটের আগুন। চেন্নাইয়ের ঘরে ঢুকে কলকাতার হয়ে দাদাগিরি করলেন তিনি। কিন্তু রাসেলের অতিমানবীয় ইনিংসের আর কোনও দাম থাকল না শেষ পর্যন্ত। বিশাল রান করেও হারতে হল কার্তিক অ্য়ান্ড কোং-কে।
এদিন টস জিতে দীনেশ কার্তিকের কলকাতাকে ব্যাট করতে পাঠান মহেন্দ্র সিং ধোনি। জোড়া আইপিএল জয়ী ক্যাপ্টেনের স্ট্র্যাটেজি ১০ ওভার পর্যন্ত ঠিকঠাকই চলছিল। ১৯ রানের মধ্যেই প্রথম উইকেট চলে যায় কলকাতার। ৪ বলে ১২ রান করে ফিরে যান কলকাতার গত ম্যাচের নায়ক সুনীল নারিন। এই ক্যারিবিয়ান মিস্ট্রি স্পিনারের সঙ্গে ওপেন করতে নেমেছিলেন ক্রিস লিন। ১৬ বলে ২২ রান করে ফিরে যান তিনিও। এরপর রবিন উথাপ্পা (২৯), নিতীশ রানা (১৬) ও দীনেশ কার্তিক (২৬) বেশিক্ষণ ক্রিজে সময় কাটাতে পারেননি। রিঙ্কু সিংও চার বলে দু রান যোগ করে ডাগ-আউটে হাঁটা দেন।১০ ওভারের শেষে ৮৯ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো ধুঁকছিল কেকেআর। সেখান থেকে ২০ ওভারের পর খেলার স্কোর গিয়ে দাঁড়াল ৬ উইকেট হারিয়ে ২০২। আর সবটাই সম্ভব করলেন রাসেল।
কলকাতার মরা গাঙে বাণ আনলেন তিনি। বিধ্বংসী মেজাজেই চেন্নাইয়ের বোলারদের ছিঁড়ে খেতে থাকেন কলকাতার স্টার অলরাউন্ডার। এক বছর ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত ছিলেন রাসেল। বোঝাই যাচ্ছিল রানের খিদেতে ছটফট করছিলেন তিনি। আর এদিন তাঁর পরিণতি ভোগ করলেন চেন্নাইয়েরর বোলাররা।৩৬ বলে ৮৮ রানের অপরাজিত ইনিংস খেললেন তিনি। কষ্ট করে একটি মাত্র চার মেরেছেন তিনি। কারণ বাকি সময়টা তাঁর হাত থেকে এসেছে একটা বা দু'টো নয়, ১১টি ছয়।
#Thala3000 for CSK in IPL. #WhistlePodu #CSKHomeComing #Yellove #CSKvKKR???????? pic.twitter.com/3zXoQ9QNsK
— Chennai Super Kings (@ChennaiIPL) April 10, 2018
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দুরন্ত শুরু করেছিল চেন্নাই। শেন ওয়াটসন ও আম্বাতি রায়ডুর ওপেনিং জুটিতে ৬ ওভারে ৭৫ রান চলে এসেছিল। প্রাক্তন অজি ক্রিকেটার ওয়াটসন আগুনে মেজাজেই ব্যাট করছিলেন। তিনটি চার ও তিনটি ছয়ের সুবাদে ১৯ বলে ৪২ করেই আউট হন তিনি। ওয়াটো ফিরতে ক্রিজে আসেন আইপিএল-এর সর্বোচ্চ রানের মালিক সুরেশ রায়না। চেন্নাইয়ের এই মারকুটে ব্যাটসম্যান ১৪ রানে ফিরে যান। চারে নামেন ধোনি। বিলিংসকে সঙ্গে নিয়ে ধীরে ধীরে ইনিংসটা গড়ার কাজ করছিলেন তিনি। কিন্তু ২৮ বলে ২৫ করে পীযূষ চাওলার বলে কার্তিকের হাতে ক্যাচ আউট হয়ে যান। ধোনি ফিরতেই চিপকে শ্মশানের নীরবতা নেমে আসে।
Bravo bravo! #WhistlePodu #CSKHomeComing #Yellove #CSKvKKR???????? pic.twitter.com/jOQeEy03Bz
— Chennai Super Kings (@ChennaiIPL) April 10, 2018
যদিও বিলিংস চার-ছক্কাতেই ম্যাচটা জিইয়ে রেখেছিলেন। তিনি ফিরলেন ২৩ বলে ৫৬ করে। এরপর রবীন্দ্র জাদেজা (১১) ও ডোয়েন ব্র্যাভো (১১) অপরাজিত থেকেই চেন্নাইকে জিতিয়ে দেন। শেষ ৬ বলে জেতার জন্য চেন্নাইয়ের প্রয়োজন ছিল ১৭ রান। কার্তিক বল তুলে দেন বিনয় কুমারের হাতে। প্রথম বলটাই কোমরের ওপর হাই ফুলটস করে নো করে ফেলেন। ব্র্যাভো এক হাতে লেগ সাইডের উপর দিয়ে ওভার বাউন্ডারি মারেন। এরপর পরের বলটায় ফ্রি-হিটে আসে দু রান। এরপর যথাক্রমে এক রান, ওয়াইড বল, এক রান ও এক রান। পঞ্চম বলে জাদেজা লং-অনের ওপর দিয়ে গগনচুম্বী ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জেতান।