কেবলমাত্র কিংবদন্তি ক্রীড়াবিদ হিসাবেও নয়, চুনী গোস্বামীর লড়াইয়ের স্পিরিট অন্যদের থেকে তাঁকে আলাদা করেছে। তীব্র প্রতিকূল পরিস্থিতিও তাঁর স্পিরিটে প্রভাব ফেলতে পারেনি। এমনটাই জানিয়েছেন বিখ্যাত ক্রিকেটার দিলীপ দোশি।
সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনকে দিলীপ দোশি জানিয়েছেন, "ফুটবল মাঠে বেড়ে ওঠা চুনী গোস্বামীর ফিটনেস ছিল অসাধারণ। সেই সময়ে ক্রিকেটারদের তুলনায় ফুটবলাররা ফিটনেসে অনেক বেশি এগিয়ে থাকতেন। যদিও সেই ট্রেন্ড এখন বদলে গিয়েছে। তবে সেই সময়ে ক্রিকেটে চুনীদা ফিটনেসের আমদানি করেছিলেন।"
ফুটবল বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ক্রিকেট পরিসংখ্যানেই তাক লাগান চুনী গোস্বামী। বাংলার হয়ে ৪৬টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে অংশ নিয়ে চুনী গোস্বামী ১৫৯২ রান করার পাশাপাশি ৪৭টি উইকেটও নিয়েছেন। রঞ্জিতে বাংলার অধিনায়ক হিসেবে ফাইনালে তুলেছিলেন।
প্রাক্তন ক্রিকেট সতীর্থের কথা জানাতে গিয়ে দোশি বলেন, "চুনীদা জানতেন তিনি ফুটবল মাঠের ব্যাকগ্রাউন্ডে বেড়ে উঠেছেন। একজন অসামান্য ক্রিকেটার ছিলেন। তবে ফাইটিং স্পিরিটে তিনি বাকি সকলের থেকে আলাদা। ব্যাট করার সময় নিজের উইকেট বাজি রেখে লড়তেন। কঠিন পরিস্থিতিও এই লড়াইয়ের স্পিরিট দুর্বল হত না। এটা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগাত।"
জাতীয় দলের জার্সিতে দিলীপ দোশি ৩৩টি ম্যাচ খেলে ১১৪টা উইকেট নিয়েছেন। তিনি বলেছিলেন, নেতৃত্বেও চুনী গোস্বামী অসামান্য ছিলেন, "উনি এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি সতীর্থদের সমসময় অনুপ্রেরণা জোগাতেন। হাসি ঠাট্টার মাধ্যমে মাতিয়ে রাখার বিরল ক্ষমতা ছিল ওঁর। সেইসময় তিনি ইতিমধ্যেই ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক হয়ে গিয়েছেন। নেতৃত্বের গুণ ছিল চোখে পড়ার মত। উনি সতীর্থদের কাছ থেকেও পরামর্শ নিতে দ্বিধা করতেন না। এটাই তাঁকে দুর্ধর্ষ নেতার প্রকৃত গুণ।"
প্রসঙ্গত, বেশ কয়েকবছর ধরেই বয়সজনিত অসুস্থতায় ভুগছিলেন চুনী গোস্বামী। শরীরে বাসা বেঁধেছিল ডায়াবেটিস, নার্ভের সমস্যা ও প্রস্টেটের সংক্রমণ। বাড়িতেই থাকতেন। বাইরে বেরোতেন না। লকডাউনের মধ্যেই বৃহস্পতিবার অসুস্থ বোধ করায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। বিকালের দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হন। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।