শনিবার বেলা বাড়তেই সুখবর পেয়ে যায় আমুসদ্র হিমাচল। ভারতবাসীর মুখে হাসি ফুটিয়ে টোকিও অলিম্পিকে রুপো জেতে ভারত্তোলক মীরবাই চানু। মহিলাদের ৪৯ কেজি বিভাগে এই সাফল্য তাঁর। এর আগে ২০০০ সালের সিডনি অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন ভারতের কে মালেশ্বরী। দুই দশকের খরা কাটিয়ে ফের ভারত্তোলনে টোকিও অলিম্পিকে ভারতকে প্রথম পদক জেতালো চানু। এরপরেই শুভেচ্ছার বন্যায় ভেসে যান এই ক্রীড়াবিদ। রাষ্ট্রপতি থেকে প্রধানমন্ত্রী থেকে শচিন তেন্ডুলকর, উচ্ছ্বসিত হয়ে প্রত্যেকেই চানুকে অভিননন্দন জানান। সেই তালিকায় নাম রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এদিন ট্যুইটারে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘টোকিও অলিম্পিকে মহিলাদের ভারত্তোলনে মীরবাই চানু রুপো জিতেছেন। তাঁকে আন্তরিক অভিননন্দন। তুমি আমাদের গর্বিত করেছো। তোমার সাফল্য অন্যদের কাছে অনুপ্রেরণা।‘ দেখুন সেই ট্যুইট:
এদিকে, ২০১৬ সালে রিওতে প্রথম অলিম্পিকে ফিনিশ করতে পারেননি চানু। চোখের জলে সেবার গেমস ভিলেজ ছেড়েছিলেন মণিপুরের এই তরুণী। জানা গিয়েছে, ইম্ফলের নংবক কাকচিং গ্রামে ১৯৯৪-এর ৮ অগস্ট জন্ম চানুর। জন্ম থেকেই তাঁর শক্তি আর পাঁচটা মেয়ের চেয়ে বেশি। সেটা অনেক আগেই আঁচ করেছিল তাঁর পরিবার। পেশায় কাঠ কুড়ুনি তাঁর বাবা-মা জ্বালানির জন্য বনে কাঠ কাটতে গেলেও, ভারী কাঠ তাঁর দাদা বইতে পারতেন না।
কিন্তু চানু অনায়াসেই সেই ভার বহন করে বাড়ি নিয়ে আসতেন। সেই থেকেই পরিবারে একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়। যদিও চানুর প্রথম পছন্দের খেলা ছিল তিরন্দাজি। কিন্তু বাবা-মায়ের ইচ্ছায় তিনি ১২ বছর বয়সে ভারোত্তোলনে ভর্তি হন। অনুশীলন শুরু করেন ইম্ফলের খুমান লাম্পাক স্টেডিয়ামে। সেখান থেকে মণিপুর সাই হয়ে পটিয়ালায়। ক্রমে জাতীয়স্তরে নজরে আসতে শুরু করেন তিনি। এক বছর অনুশীলন করেই সাফল্য পান তিনি। ছত্তিশগড় যুব চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জেতেন। ২০১৪-য় গ্লাসগো কমনওয়েলথ গেমস তাঁর জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সেই গেমসে ৪৮ কেজি বিভাগে রুপো জেতেন মীরাবাঈ। এরপর কুঞ্জরাণী দেবীর ১২ বছরের রেকর্ড ভেঙে মোট ১৯২ কেজি তোলেন। দুরন্ত ছন্দে থেকেই রিয়োতে প্রথম অলিম্পিকে নামেন তিনি।
কিন্তু ক্লিন এবং জার্ক বিভাগে তিন বারই ওজন তুলতে ব্যর্থ হন চানু। স্ন্যাচে মাত্র এক বার ওজন তুলতে পেরেছিলেন। ফলে তাঁর নামের পাশে ছিল না কোনও সংখ্যা। লেখা হয়েছিল তিনি ইভেন্ট শেষ করতে পারেননি অর্থাৎ ডু নট ফিনিশ। সেই শেষ না হওয়া ইভেন্ট থেকেই পাঁচ বছর পর কামব্যাক ভারতের রুপোলী মেয়ের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন