ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো কি অহংকারী, ঔদ্ধত্যে পরিপূর্ণ এক সুপারস্টার? ফুটবল বিশ্বে রোনাল্ডোর আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা নতুন কোনো বিষয় নয়। তবে রোনাল্ডোকে একদম সামনে থেকে দেখা কোচ ড্যান গ্যাসপার জানিয়ে দিচ্ছেন, সিআরসেভেনের মত মানবিক যোদ্ধা আর দেখেননি।
ড্যান গ্যাসপার- ভদ্রলোক ফুটবল বিশ্বে ভীষণই সম্ভ্রম আদায় করে নেওয়া এক ব্যক্তিত্ব। সাফল্যের উত্তুঙ্গ চূড়ায় পৌঁছেছেন একাধিকবার। দক্ষিণ আফ্রিকায় পর্তুগালের জাতীয় দলের কোচিং স্টাফে ছিলেন গোলকিপার কোচ হিসেবে। ২০১৬-য় যে পর্তুগাল দল ঐতিহাসিক ইউরো কাপ জেতেন, সেই দলেরও সহকারী কোচের ভূমিকায় ছিলেন।
আরো পড়ুন: EXCLUSIVE: মারাদোনার সঙ্গে একটাও ছবি নেই! আক্ষেপ নিয়েই কফিনবন্দি দিয়েগোর ‘শিক্ষক’
কার্লোস কুইরোজ এবং লুই ফিলিপ স্কোলারির প্রিয় বন্ধু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে জানিয়ে দিলেন, "খেলায় দুই ধরণের নেতা দেখতে পাওয়া যায়। রোনাল্ডো এমন একজন যে কথায় নয়, মাঠে নেমে নেতৃত্ব দিতে চান। আর ওঁর স্বভাবজাত আত্মবিশ্বাস এবং আগ্রাসনকেই অহং ভেবে ভুল করে। গত কয়েকবছর ওঁর নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা এবং পরিণতিবোধের অনেক উন্নতি হয়েছে। বছরের পর বছর ধরে অভিজ্ঞতার সঙ্গেই অর্জিত হয় প্রজ্ঞা, জ্ঞান এবং সহমর্মিতা। লোকে পর্দার পিছনে রোনাল্ডোকে জানে না যাঁর একটা মহান হৃদয় রয়েছে।"
আরো পড়ুন: মাদারের কলকাতা এখনও হৃদয়ে, সাক্ষাৎকারে অকপট মেসি-মারাদোনার আদরের ‘বুরু’
এখনো ভুলতে পারেন না ইউরো কাপ জেতার সেই দুরন্ত অভিজ্ঞতা। বেনফিকা, পোর্ত-র প্রাক্তন কোচ জানাচ্ছেন, "অসাধারণ সেই জার্নির অংশ হতে পারাটা একটা স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পর্তুগালের সাফল্য আরো গগনচুম্বী মনে হয় যখন ভাবি দেশটার জনসংখ্যা মাত্র ১০ মিলিয়ন। ইউরো কাপের ট্রফি রোনাল্ডোর হাতে দেখে গর্বিত হয়নি, এমন কোনো পর্তুগিজ নেই। এটা আমার অন্যতম গর্বের একম মুহূর্ত হিসাবে আজীবন রয়ে যাবে। মাঠ আর মাঠের বাইরে দারুণভাবে নেতৃত্ব দিয়েছিল রোনাল্ডো। এটা সেই টুর্নামেন্ট হয়েই থেকে যাবে যেখানে রোনাল্ডো ফুটবলার হিসাবেই শুধু নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেনি, একজন দুর্ধর্ষ নেতা হিসাবে বিশ্বের কাছে নিজেকে তুলে ধরেছিল।"
৩৬-এ এসেও সুপার ফিট রোনাল্ডো। ম্যাচের পর ম্যাচ গোল করে চলেছেন এই বয়সেও। মহাতারকার সুপার ফিট হওয়ার রহস্য জানালেন ড্যান গ্যাসপার। এই প্রসঙ্গে তিনি ২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের এক মুহূর্ত শেয়ার করেছেন। টুর্নামেন্টের সময় স্টিম রুমে একবার গ্যাসপার এবং রোনাল্ডো মুখোমুখি বসেছিলেন। সেই সময়েই কোচ জিজ্ঞাসা করেন, তোমার এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা কী? রোনাল্ডোর জবাব ছিল স্পষ্ট, "জয়। আমি সেরা হতে চাই। সর্বকালের সেরা হতে চাই।"
"কেরিয়ারের প্রতিটি মুহূর্ত, সেকেন্ড, পল, অনুপল, দিন, মাস, বছর রোনাল্ডো বাঁচেন সেরা হওয়ার তাড়নায়। তাই কঠোর পরিশ্রমে নিজেকে নিংড়ে দেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সেরা মেডিক্যাল টিম, পুষ্টিবিদ, পারফরম্যান্স ট্রেনার। যাঁদের সম্মিলীত লক্ষ্য একটাই সেরা, সেরা, আরো উঁচুতে ওঠা। রেকর্ডের পর রেকর্ড ধূলিসাৎ করে সর্বোচ্চ শৃঙ্গে চিরস্থায়ী আসন পাওয়া" বলছিলেন ড্যান।
Read the full article in ENGLISH
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন