Team India, BCCI, Stephen Fleming: রাহুল দ্রাবিড়ের জাতীয় দলের কোচিংয়ের মেয়াদ শেষ হচ্ছে টি২০ বিশ্বকাপের পরেই। আর নতুন হেড কোচ হিসেবে বিসিসিআই কার্যত ঠিক করে ফেলেছে স্টিফেন ফ্লেমিংকে। তবে আলাদা আলাদা ফরম্যাটের জন্য আলাদা আলাদা কোচ নয়, নতুন কোচকে তিন ফরম্যাটেই কোচিং করাতে হবে। তাই বছরে দশ মাস ভারতে কোচিং করাবেন কিনা কিউই কোচ তা নিয়ে প্ৰশ্নচিহ্ন রয়েছে। ফ্লেমিং সমস্ত দিক বিবেচনা করে ভারতের হেড কোচের পদে আবেদন করবেন কিনা, সেটাই দেখার।
সোমবারই বোর্ড বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে, টি২০ বিশ্বকাপের পর নতুন কোচ নিযুক্ত হবেন। আর সেই জন্য আবেদন প্রক্রিয়া এখন থেকেই চালু হয়ে গিয়েছে। আর বোর্ডের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, ২০০৯ থেকে সিএসকেতে কোচিং করানো ফ্লেমিংকে টিম ইন্ডিয়ার পরবর্তী হেড কোচ হিসেবে ভাবা হচ্ছে।
রোহিত-কোহলি কেরিয়ারের শেষের দিকে। নতুন ক্রিকেটাররা উঠে আসছেন। এই সন্ধিক্ষণে বোর্ডের তরফে অভিজ্ঞ কোচের উপর ভরসা রাখা হচ্ছে। ক্রিকেটারদের সেরাটা বের করে আনা, দলে পজিটিভ পরিবেশ বজায় রাখা, সিএসকেকে দীর্ঘদিন সাফল্য এনে দেওয়া- স্টিফেন ফ্লেমিংয়ে মুগ্ধ ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে, আইপিএল চলার সময়েই একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ৫১ বছরের কিউই কোচ এখনই সিএসকে টিম ম্যানেজমেন্টকে ফ্র্যাঞ্চাইজি ছাড়ার বিষয়ে কিছু জানাননি।
সিএসকের কোচ হওয়ার পরে ফ্লেমিং দুনিয়া চষে বেড়িয়েছেন। বিগব্যাশে মেলবোর্ন স্টার্স-এ চার বছর কোচিং করিয়েছেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় টি২০ লিগে জো'বার্গ সুপার কিংসের কোচ হয়েছেন। এমনকি মেজর লিগ ক্রিকেটের টেক্সাস সুপার কিংসের কোচ হিসেবে দেখা গিয়েছে। দুই ফ্র্যাঞ্চাইজিই সিএসকের সিস্টার ফ্র্যাঞ্চাইজি। এছাড়াও হান্ড্রেড লিগে সাদার্ন ব্রেভ-এর হেড কোচ হয়েছেন। জুলাইয়ে একই সঙ্গে মেজর লিগ ক্রিকেট এবং হান্ড্রেড হওয়ায় দুই টুর্নামেন্টেই ব্যস্ত সময় কাটাবেন তিনি।
স্টিফেন ফ্লেমিংয়ে বোর্ডের নজরে চমকের কিছু নেই। সাফল্যের সঙ্গে সিএসকেকে দীর্ঘদিন কোচিং করানো ফ্লেমিংয়ে মুগ্ধতার অভাব নেই বোর্ডের অন্দরমহলে। খেলোয়াড়ি জীবনে চতুর অধিনায়ক ছিলেন। কোচ হিসেবে দেখিয়ে দিয়েছেন, কীভাবে দীর্ঘদিন একই মন্ত্রে এক দলকে সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। দুবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, পাঁচবার দলকে আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করেছেন। আইপিএলে কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজিতে সবথেকে বেশি সময় কোচিং করানোর নজির তাঁর দখলে। ক্রিকেটারদের থেকে সেরাটা বের করে আনার আনার ক্ষেত্রে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। শিভম দুবেকেই তিনি যেমন আইপিএলে অন্য চেহারায় হাজির করিয়েছেন। এছাড়াও সিএসকে স্কোয়াডে থাকা একাধিক ঘরোয়া ক্রিকেটারও উপকৃত হয়েছেন ফ্লেমিংয়ের কোচিংয়ে।
জানা যাচ্ছে দলের সিনিয়র তারকাদেরও এরকম হাই প্রোফাইল কোচের প্রতি আস্থা রয়েছে। সিনিয়রদের প্রস্থানের পর নতুন প্রজন্মের তারকারা দলের কোর টিম গঠন করবেন আগামী তিন বছরের মধ্যেই। এই সময়েই ফ্লেমিংকে আনতে চাইছেন বিসিসিআই কর্তারা।
বিসিসিআই যদি কোনওরকমে ফ্লেমিংকে রাজি করাতে না পারে, তাহলে পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেইদিকে নজর থাকবে। ইংল্যান্ড, পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা নিজেদের ফরম্যাট অনুযায়ী কোচ নিয়োগের ট্রেন্ড চালু করেছে। তবে বিসিসিআই এখনই এই ট্রেন্ড ফলো করতে চায় না। কারণ টিম ইন্ডিয়ায় টেস্ট এবং ওয়ানডে ফরম্যাটে আলাদা আলাদা সেট প্লেয়ার নেই।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে আইপিএলের অন্য বিদেশি কোচেরাও ভারতের কোচ হতে আগ্রহী নন। বছরে দশ মাসের বেশি ভারতে থাকাটাই সমস্যার হয়ে দাঁড়িয়েছে। দ্রাবিড়কেও টিম ইন্ডিয়ার বিভিন্ন সিরিজের মাঝপথে ব্রেক নিতে হয়েছে। দ্রাবিড় অবশ্য রাজি থাকলে পুনরায় কোচের পদে আবেদন করতেই পারেন।