দেশের শত শত ক্রিকেটারদের মধ্যে অন্যতম তিনি। রঞ্জি ট্রফি সহ বাকি ঘরোয়া টুর্নামেন্টে খেলে যাঁদের দিন গুজরান হয়, তাঁদের মধ্যেই একজন। নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেট খেললেও দেশের এলিট তালিকায় এখনও নাম লেখাতে পারনেনি। তা নিয়েই খেলে চলেছিলেন বরোদার বিষ্ণু সোলাঙ্কি। তবে একের পর এক ট্র্যাজেডির শিকার হয়ে তিনি আপাতত দুঃস্বপ্নের প্রহরের মধ্যে দিয়ে চলেছেন।
কয়েকদিন আগে সদ্যজাত কন্যাকে হারিয়েও বাইশ গজে নামতে দ্বিধা করেননি। তাঁর সেই ক্রিকেট লড়াইকে কুর্নিশ করেছিল গোটা দেশ। তবে নিজের কালো সময় এখনও কাটিয়ে উঠতে পারলেন না তিনি। এবার রঞ্জি খেলার মাঝেই খবর পেলেন বাবা চলে গিয়েছেন না দেখার দুনিয়ায়। ভিডিও কলে দেখলেন বাবার শেষকৃত্য।
আরও পড়ুন: পোল্যান্ড বর্ডার পেরোতে পারব কিনা জানি না! আতঙ্কের ভিডিওয় EXCLUSIVE ইউক্রেন ফিজিও
এরকম সময়ও যে আসে, এত ট্র্যাজেডি নিয়ে কে জানত! ফেব্রুয়ারির ১০ তারিখেই বাবা হয়েছিলেন বরোদার বিষ্ণু। জীবনে নতুন পর্ব লেখার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন তিনি। তবে জন্মের ঠিক একদিন পরেই সদ্যজাত কন্যা হাসপাতালেই মারা যায়। তারপরেই বায়ো বাবল ছেড়ে কন্যার সৎকার করে এসে কোয়ারেন্টিন পর্ব সেরে খেলতে নেমে চণ্ডীগরের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন।
মনে পড়িয়ে দিয়েছিলেন স্বয়ং শচীন তেন্ডুলকরকে। ১৯৯৬-এ যিনি পিতাকে হারিয়ে ব্রিস্টলে শতরান করে মনের জমে থাকা দুঃখ কিছুটা হলেও লাঘব করেছিলেন। একইভাবে বিষ্ণু মনে করিয়ে দিচ্ছেন বিরাট কোহলিকেও। যিনি পিতাকে দাহ করে এসে ৯৭ করে যান দিল্লির জার্সিতে।
এবার কটকে ম্যাচ খেলার সময়েই পেলেন ফের মৃত্যু সংবাদ। এবার বাবার। রঞ্জিতে শেষদিনের খেলা চলাকালীন দলের ম্যানেজার বিষ্ণুকে খবর দেন তাঁর পিতা প্রয়াত হয়েছেন। বেশ কিছুদিন ধরেই যিনি অসুস্থ ছিলেন।
বরোদা ক্রিকেট সংস্থার এক আধিকারিক সংবাদসংস্থাকে জানিয়েছেন, "মেয়ের মৃত্যুর পরে বিষ্ণুর বাড়ি ফেরার অপশন ছিল। তবে ও এতটাই টিম ম্যান যে দলকে ফেলে যেতে চায়নি। এই কারণেই ও বাকিদের থেকে আলাদা।"
৩ মার্চ থেকে শুরু হচ্ছে বরোদার তৃতীয় রঞ্জি ম্যাচ হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে। তবে ক্রিকেট মহল চাইছে অন্তত শোক কাটিয়ে ওঠার পর্যাপ্ত সময় পান বিষ্ণু। কারণ এক সপ্তাহের ব্যবধানে কন্যা এবং পিতাকে হারানোর বেদনা কতটা, তা সম্ভবত সকলের পক্ষে অনুভব ক্ষমতারও অতীত।
জাতীয় দলের হয়ে কোনও দিন বিষ্ণু সোলাঙ্কিকে দেখা যাবে কিনা, তা সময়ই বলবে। তবে জাতীয় দলে না খেলেও।বিরাট-শচীনদের ব্র্যাকেটে নিজের নাম লিখিয়ে ফেলেছেন। যে ব্র্যাকেটের নাম ইস্পাত কঠিন মানসিকতা।